আজ || রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫
শিরোনাম :
  গোপালপুরে এসএসসি পরীক্ষায় কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা       ধনবাড়ি মডেল প্রেসক্লাবে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদ ও দোয়া       গোপালপুরে মরহুম আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট       টাঙ্গাইল-২ আসনে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী শাকিল উজ্জামান       গোপালপুরে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ       গোপালপুরে শিক্ষার্থীদের মাঝে গাছের চারা বিতরণ করেন সালাম পিন্টু       গোপালপুরে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ছাত্রদলের বিক্ষোভ       গোপালপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় জুলাই শহীদ দিবস পালিত       গোপালপুরে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল       গোপালপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় ১২ মামলার আসামি চাকমা জাহাঙ্গীর নিহত    
 


‘বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন সবই দিয়েছে আওয়ামী লীগ’

নিউজ ডেক্স :

বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন সবই দিয়েছে উপমহাদেশের প্রবীণতম ও ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ- দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিক-বুদ্ধিজীবীরা এ অভিমত দিয়েছেন। তারা বলেন, ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠিত এই দলটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে এদেশের গণমানুষের সংগঠনে পরিণত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ দেশে পাকিস্তানি সামরিক শাসন, জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন ও শোষণের বিরুদ্ধে সকল আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এ দলটি। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আইয়ুবের সামরিক শাসন-বিরোধী আন্দোলন, ’৬৪-এর দাঙ্গার পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা, ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন ও ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের পথ বেয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ২৪ বছরের আপোষহীন সংগ্রাম-লড়াই এবং ১৯৭১ সালের নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ তথা সশস্ত্র জনযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে।ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের ফসল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।

দীর্ঘ একুশ বছর লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জয়ী হয়ে ২৩ জুন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে আসে। ২০০১ এবং ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পর আর এক দফা বিপর্যয় কাটিয়ে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ আসনে বিজয়ী হয়ে আবারো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায় এই দলটি। পরবর্তিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুযারীর সাধারন নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আবারও সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। দল হিসাবে যে অর্জন আওয়ামী লীগের একই ভাবে অনেক প্রতিকূলতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে, এই ৭ বছর ৯ মাসে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারও সবক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করে চলেছে বলে তারা মনে করেন।

দলটিকে দেশের অন্যতম প্রাচীন সংগঠন হিসাবে আখ্যায়িত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ভাষা, স্বাধিকার, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা অর্জনে মহোত্তম গৌরবে অভিষিক্ত আওয়ামী লীগের ৭ দশকের অভিযাত্রায় শান্তি, সমৃদ্ধি ও দিন বদলের লক্ষ্যে অবিচল বাঙালি জাতির মুক্তির দিশারী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের অর্জন পাকিস্তান আমলের গণতান্ত্রিক মানুষের অর্জন, এই দলের অর্জন বাংলাদেশের অর্জণ। আওয়ামী লীগ কখনো মানুষকে ভ্রান্ত আশ্বাস দেয় না। জাতির জন্য যখন যা প্রয়োজন মনে করেছে, সেটি বাস্তবায়ন করেছে।

দলটিকে মূল্যায়ন করে ইতিহাসবিদ, লেখক ও লোক সাহিত্যিক শামসুজ্জামান খান বলেছেন, আওয়ামী লীগ ‘পাকিস্তান’ নামের অবৈজ্ঞানিক এবং ভৌগোলিক ও নৃতাত্ত্বিকভাবে এক উদ্ভট রাষ্ট্রের পূর্ব বাংলার বাঙালি জনগোষ্ঠী ও অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিসত্তাকে অবজ্ঞায়, অবহেলায় ও ঔপনিবেশিক কায়দায় শোষণ-পীড়ন-দমন ও ‘দাবিয়ে রাখা’র বিরুদ্ধে লাগাতার প্রতিবাদ, প্রতিরোধ এবং গণসংগ্রামের মধ্যদিয়ে গড়ে ওঠা বিপুল জনপ্রিয় একটি রাজনৈতিক দল। এই দলের নেতা-কর্মীদের ত্যাগ-তিতীক্ষা ও অঙ্গীকারদীপ্ত সংগ্রামী ভূমিকা ইতিহাসবিদিত। তিনি বলেন, পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে এই দলের আত্মপ্রকাশ ঘটলেও পরে শুধু আওয়ামী লীগ নামে অসাম্প্রদায়িক সংগঠন হিসাবে বিকাশ লাভ করে।

এমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আওয়ামী লীগ সরকারের এই ৭ বছর ৯ মাসের কর্মকান্ড নিয়ে বলেন, ১৯৭২-৭৩ সালে বিশ্বে যারা বাংলাদেশকে তলাবিহিন ঝুড়ি বলে অপপ্রচার করেছিল, তারা এখন বাংলাদেশের সাফল্যকে বিস্ময়কর বলে অভিহিত করছে। অনেক চাপ উপেক্ষা করে শহীদদের উত্তরাধিকারদের ন্যায় বিচার প্রদান করা হয়েছে , উন্নয়নের গতিধারা আরো বেগবান হয়েছে।

মৌলবাদের উত্থান রোধ, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও শক্তিশালী, স্থানীয় সরকারকে আরও কার্যকর এবং শক্তিশালী জাতি গঠনে একমুখি শিক্ষা ব্যবস্থা কায়েম করার আহ্বান জানিয়ে তিনি নানামুখি প্রতিকূলতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সবক্ষেত্রে ক্রমাগত সফলতা অর্জনের মাধ্যমে সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সি প্রশংসা করেন।

পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সামসূল আলম বলেন, ২০০৮ সালে উন্নয়ন বাজেট ছিল ২৪ হাজার কোটি টাকা এখন এর পরিমাণ ৯৫০০০ কোটি টাকা। গত ৭ বছরে ১ কোটি ৩৩ লক্ষ মানুষের নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে, বিদেশী উন্নয়ন সহয়তা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন করে এক সাথে ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করে সরকার বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।

বিভিন্ন পরিসংখ্যান উল্লেখ করে অধ্যাপক একে আজাদ চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনা বিগত ৭ বছরে এতো বিশাল সফলতা অর্জন করেছেন যা বিরল ও অভূতপূর্ব। জিডিপির হার ৫.৪ শতাংশ থেকে ৬.৭ শতাংশের ওপরে ছিল। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সমিক্ষায় বলা হচ্ছে, আগামীতে শীর্ষ ১১ অর্থনীতিক শক্তিশালী দেশগুরোর অন্যতম হবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধি সক্ষমতায় চীনকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। একটি বাড়ী একটি খামার ও আশ্রায়ণ প্রকল্পে এক কোটি অতি দরিদ্র মানুষকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার কমে এসেছে। সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়। দেশের মানুষের গড় আয়ু ৭১ বছরে উন্নীত হয়েছে।

অধ্যাপক একে আজাদ বলেন, প্রাথমিক শিক্ষায় ভর্তির প্রায় শতভাগ। ড্রপ আউট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০ শতাংশ থেকে ১৯.৫০ শতাংশে নেমে এসেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ১৪০০০ মেগাওয়াট। দেশের ৭৪ শতাংশ মানুষ, বিদ্যুৎ ব্যবহারের আওতায় এসেছে। সরকার এ পর্যন্ত বিনামূল্যে ১৯৫ কোটি বই বিতরণ করেছে। নারী জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ কর্মক্ষেত্রে নিয়োজিত, দেশে বছরে ৩৮.৪০ মিলিয়ন টন খাদ্য উৎপাদন করে পৃথিবীর ৪র্থ শীর্ষ খাদ্য উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হয়েছে। মাথাপিছু আয় ৭ বছর আগে ছিল ৪২৭ ডলার এখন এটা ১৪০০ ডলারে উপনীত হয়েছে। সাক্ষরতার হার ৭৫ শতাংশ হয়েছে বলে তিনি বলেন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যায়ে ৬ লাখ শিক্ষার্থীর স্থানে এখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩১ লাখ। নিজের টাকায় চলমান পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পথে। মেট্রোরেল নির্মাণ হচ্ছে।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. বিনায়ক সেন বলেন, অনেক সময় কোন সংকট মানুষকে নতুন সফলতার দিশা দেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তেমনি করে জাতিকে সফলতার নতুন পথ দেখিয়েছেন, দেশের টাকায় পদ্মাসেতু নির্মাণ শুরু করার সুবাদে বাংলাদেশের মর্যাদা আন্তর্জাতিকভাবে সৃষ্টি করেছে এবং আমরা মর্যাদাশীল জাতিতে রূপান্তরিত হয়েছি।

মন্তব্য করুন -


Top
error: Content is protected !!