নিজস্ব সংবাদদাতা :
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খন্দকার মোহাম্মদ আলীর ১৮ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন ধরে জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে কষ্টাপাড়া গ্রামের শামছুল হক ও তার সহযোগীরা। আর এতে বাঁধা দিতে গেলে মাঝে মধ্যেই হামলার শিকার হচ্ছেন ওই শিক্ষক ও তার পরিবার। আইনের আশ্রয় নিয়েও বেকায়দায় পড়েছেন তিনি। প্রতিনিয়িতই দেয়া হচ্ছে প্রাণনাশের হুমকি।
জানা যায়, উপজেলার কষ্টাপাড়া মৌজার এসএ ১০৩ নং খতিয়ানভূক্ত ১৬৮ নং দাগের (যার বি আর এস খতিয়ান নং-১৭৯, দাগ নং-৩২৬) ১৮ শতাংশ জমি গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও তার স্ত্রী জুলেখা বেগম এওয়াজ কওলা সূত্রে প্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করে আসতেছেন। নিজেদের নামে পৃথক জমা খারিজ প্রদান করে বর্তমানে ইউক্যালিকটাস গাছ রোপন করেছেন ওই শিক্ষক। বিআরএস রেকর্ডে প্রধান শিক্ষক খন্দকার মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রী জুলেখা বেগমের নামে সংশোধন করে হাল সন পর্যন্ত খাজনাও পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু ওই জমি দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় কষ্টাপাড়া গ্রামের শামছুল হক ও তার সহযোগীরা। বিভিন্ন সময়ে জমি দখলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে হামলা ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটিয়েছেন তারা। এর আগে জমি দখলের চেষ্টা করলে প্রধান শিক্ষক খন্দকার মোহাম্মদ আলী ভূঞাপুর থানা সহকারি জজ আদালতে ৩০/২০১৪ নং অন্য প্রকার শ্রেণির চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মামলা করেন। মামলায় দোতরফা শুনানি শেষে বিগত ২০১৪ সালের ২৬ শে অক্টোবর আদালত শামছুল হক ও তার সহযোগীদের জমিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। তারপরও থেমে থাকেনি তাদের জমি দখলের অপচেষ্টা। গত ১৪ ই জুন প্রধান শিক্ষক তার নিজ দখলীয় জমিতে ইউক্যালিকটাস গাছ রোপন করলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে শামছুল হক ও তার লোকজন। তারা রোপনকৃত গাছ নষ্ট এবং প্রধান শিক্ষক ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক খন্দকার মোহাম্মদ আলী ১৬ জুন ভূঞাপুর থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেন। ১৭ জুন তারা পুনরায় জমি দখলের চেষ্টা করে। বাঁধা দিতে গেলে দেশীয় অস্ত্রসহকারে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে হামলায় চালিয়ে তাকে ও পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাাশের হুমকি দেয় এবং ভাঙচুর করে। পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক খন্দকার মোহাম্মদ আলী বাদি হয়ে ২০ জুন রফিকুল ইসলাম রাসেলকে প্রধান আসামী করে শামছুল হক, মনসব আলী, জমশের আলী, আয়েন উদ্দিন, জহির উদ্দিন, নুরুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন (শাহিন আলম), আসলাম, আজমান আলী, আমিনুল ইসলাম, ফরিদুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, নাসির উদ্দিন নাসু, বুদ্দু মিঞা, আনোয়ার হোসেন, জামাল হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেনসহ অজ্ঞাত আরো ৮/১০জনের বিরুদ্ধে ভূঞাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে গোবিন্দাসী ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, আমার ইউনিয়ন পরিষদে ইতিপূর্বে ৫ জন আইনজীবি ও এলাকার সকল গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সালিশে শামছুল হক গং জমির কোন প্রকার কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তাই তাদের জমিতে প্রবেশ নিষেধ করে প্রধান শিক্ষক খন্দকার মোহাম্মদ আলীকে জমি ভোগ দখল করার অনুমতি দিয়ে সালিশনামা দিয়ে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে খন্দকার মোহাম্মদ আলী উক্ত জমিতে ইউক্যালিকটাস গাছ রোপন করে দখলে আছেন। প্রধান শিক্ষকের জমি জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ সত্য।
ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ ফজলুল কবির বলেন, এবিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।
কে এম মিঠু, টাঙ্গাইল।
তারিখ : ২৭ জুন, ২০১৬ খ্রি.