বিশ্বকাপ শুরুর আগে হঠাৎই নিজের ক্ষেপেছেন মেসি। আর্জেন্টিনার অধিনায়ক সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “সব সমালোচকেরই মন্তব্যই কানে আসে। বিশ্বকাপের আগে এসব সমালোচনা দুঃখ বাড়ায় ছাড়া কমায় না।” মারিও কেম্পেস, ম্যারাডোনার পর যাকে ঘিরে গোটা আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপের স্বপ্ন দেখছে সেই মেসির হঠাৎ মেজাজ বিগড়ানোর কারণ কি? জানা গিয়েছে, বার্সেলোনার হয়ে বিগত কয়েক বছরে ঝকঝকে ফর্ম আর ‘আলবিসেলেস্তে’ ব্রিগেডের হয়ে সেভাবে বড় মঞ্চে নজর কাড়তে না পারার জন্যই আর্জেন্টিনার কোনো কোনো ফুটবল কলামিস্ট মন্তব্য করেছিলেন, দেশের হয়ে খেলতে সেভাবে পছন্দ করেন না মেসি। এমনকি ম্যাচ শুরুর আগে জাতীয় সঙ্গীতও ঠিক মতো গাইতে পারেন না। কারণ লিও আর্জেন্টিনার নীল-সাদা জার্সির জন্য গর্ববোধ করেন না। এতেই দুঃখিত বর্তমান বিশ্ব ফুটবলের রাজপুত্র মেসি। এর পরেই আর্জেন্টিনার ‘লা নাসিওন’ পত্রিকায় ক্রিশ্চিয়ান গ্রসো এবং মার্টিন কাস্তিয়ার প্রতিবেদনে বিশ্বকাপে সাবেয়ার প্রধান অস্ত্র বলেছেন, “সবার মন্তব্যই কানে আসে। কখনও পড়েও ফেলি। জানি না দেশের হয়ে একশো শতাংশ দেওয়ার পরেও কেন এসব কথা ওঠে। এক সময় তো মনে হত দেশের সাফল্য না পাওয়ার পিছনে আমিই একমাত্র সমস্যা!” এখানেই না থেমে মেসি আরও বলেন, “যারা এসব সমালোচনা করেন তাদের জানিয়ে দিতে চাই আর্জেন্টিনাই আমার দেশ। আমরা পরিবার।” মেসির আরও বলেন, “ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখতাম আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) ডাক পাব। যখন আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল আমি স্পেনের হয়ে খেলতে চাই কি না, তখনও বলেছিলাম খেলব আর্জেন্টিনার হয়ে। কারণ আর্জেন্তিনার জার্সিটাকে আমি হৃদয় দিয়ে ভালবাসি।” এর পরেই সমালোচকদের উদ্দেশে বিশ্বের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকারের প্রতিশ্রুতি, “ফুটবল খেলে সব সম্মান পেলেও বিশ্বকাপ জেতা হয়নি এখনও। ব্রাজিল থেকে তাই বিশ্বকাপটা বুয়েনস আইরেসে নিয়ে আসার জন্য সর্বস্ব দিতে চাই। এতে হয়তো আমার দেশের সমর্থকরা আনন্দ পাবেন। আশা করি, দেশের মানুষের জন্য বিশ্বকাপে এই লক্ষ্যে সফল হতে পারব আমরা। তাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্যই দুঃখ সরিয়ে ঝাঁপাব ব্রাজিলের মাটিতে।” মেসির মন্তব্য আর কারও মন জিতুক না জিতুক, তা ছুঁয়ে গিয়েছে ম্যারাডোনাকে। ফুটবলের রাজপুত্র বলেছেন, “সমালোচকদের এ কথা মনে করিয়ে দিতে চাই, মেসির জন্যই ব্রাজিলের মাটিতে ফেভারিট আর্জেন্টিনা।” ওদিকে মঙ্গলবার বিশ্বকাপের জন্য তেইশ জনের দল ঘোষণা করলেন আর্জেন্টিনার কোচ সাবেয়া। যেখানে দু’বছর পর আশ্চর্যজনকভাবে জায়গা করে নিয়েছেন ম্যাঞ্চেস্টার সিটির মার্টিন দেমিশেলিস। কিন্তু জায়গা হয়নি নিকোলাস ওতামেন্দি, এভার বনেগাদের। সাবেয়া আপাতত মেসি, আগুয়েরো, ডি’মারিয়া, হিগুয়াইন, লাভেজ্জিদের নিয়েই ছক কষছেন। এই স্কোয়াডে ভর করেই ১৯৮৬ সালের পর বিশ্বকাপ বুয়েনস আইরেসে নিয়ে আসার ইচ্ছে তার। আক্রমণে মেসি-আগুয়েরো-হিগুয়াইন ত্রিভুজের মতোই মাঝমাঠে ডি’মারিয়া তার অন্যতম ভরসা।
সূত্র : আনন্দবাজার