গোপালপুর বার্তা রিপোর্ট :
পোল্ট্রি শিল্পের বর্জ্যে গোপালপুরের বৈরাণ নদের জল দূষিত হচ্ছে। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে। মারা যাচ্ছে মাছ। ছড়াচ্ছে রোগবালাই। নদের জল অজু-গোছল বা ঘর- গৃহস্থালি কাজেও ব্যবহার করা যাচ্ছেনা।
জানা যায়, ‘৬৪ জেলার অভ্যন্তরীস্ত ছোট নদী, খাল, জলাশয় পুনঃখনন উপপ্রকল্প’ এর মাধ্যমে পাউবো ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বৈরাণ নদের তলদেশ খনন করে। উজান ও ভাটিতে খনন হলেও পৌর শহর অংশে নদের তেমন সংস্কার হয়নি। ফলে শহরের অংশে নদ এখন খাল।
উপজেলার ধোপাকান্দি থেকে পালপাড়া আনন্দময়ী দেব মন্দির পর্যন্ত দুই পাড়ের শতাধিক পোল্ট্রি ফার্ম পাইপের মাধ্যমে প্রতি দিনই নদে বর্জ্য ফেলছে। পোল্ট্রির বর্জ্যে মিথেন ও অ্যামোনিয়া গ্যাস তৈরি হয়। এতে নদের মাটি, পানি ও বায়ু দূষিত হচ্ছে। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করছে। মশা-মাছি বাড়ায় রোগবালাইয়ের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। অথচ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছেনা।
হাট বৈরাণ মহল্লার বাসিন্দা নজরুল, হাসমতসহ বেশকিছু বাসিন্দা অভিযোগ করেন, নদের কালচে জলে নামলে হাতপা ও শরীর চুলকায়। চামড়া ফুলে গিয়ে ঘা হয়। দুই পাড়ের পোল্ট্রি বর্জ্য নদে ফেলায় জল বিবর্ণ ও বিষাক্ত হচ্ছে। নদে কোন মাছ নেই। দূষিত জলের দুর্গন্ধে বাড়িঘরে থাকা দায়।
গোপালপুর আনন্দময়ী দেবমন্দির কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রবীর চন্দ্র চন্দ জানান, পোল্ট্রি শিল্পের বর্জ্যে দূষিত নদের জল দুর্গন্ধ ছড়ায়। দেব মন্দিরে প্রতি দিন শত শত পূণার্থী ও ভক্তরা আসেন। কিন্তু নদের বিষাক্ত জলের দুর্গন্ধে মন্দিরে টেকা দায়। নদের দুই পাড় জুড়ে ফেলা হয় ময়লা-আবর্জনা। নদে কচুরিপানা জট বাধায় মশা-মাছি বাড়ছে। পৌর প্রশাসনকে অভিযোগ দিলেও কাজ হয়নি।
গোপালপুর উপজেলা শিক্ষক সমিতির সম্পাদক এবং বিএনপির সহ সভাপতি আমিনুল ইসলাম জানান, দখলে, দূষণে বৈরাণের মরনদশা। পোল্ট্রি খামার নদকে ধ্বংস করছে। নদের জল বিষাক্ত হচ্ছে। বাসিন্দারা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন।
উপজেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোরশেদ জানান, পোল্ট্রি শিল্পের রেজিষ্ট্রেশন দেয়ার আগে সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার শর্ত দেয়া হয়। কিন্তু খামার মালিকরা তা মানছেন না। ফলে নদের জল দূষিত হচ্ছে। দুর্গন্ধ ও রোগব্যাধি ছড়াচ্ছে। খামারীদের বার বার সতর্ক করা হচ্ছে।
গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তুহিন হোসেন জানান, বৈরাণ নদকে দখল ও দূষণ মুক্ত করতে খুবই দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।