আজ || মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
শিরোনাম :
 


অবশেষে গোপালপুরে বিরল রোগে আক্রান্ত পরিবার সুচিকিৎসা পাচ্ছেন

কে এম মিঠু, গোপালপুর :

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ধোপাকান্দি ইউনিয়নের ভুটিয়া গ্রামে বিরল রোগে আক্রান্ত অসহায় পরিবারের সদস্যরা এবার বিনামূল্যে সুচিকিৎসা পাচ্ছেন। পরিবারের সদস্য সুমাইয়া খাতুন (২০) ও  আমিনুল ইসলামকে (১৪) আজ মঙ্গলবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয়। নিউরোলজি বিভাগের প্রফেসর আহসান হাবিব হেলালের তত্বাবধানে তাদের চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। একই সাথে গোপালপুর  উপজেলা প্রশাসন এ দরিদ্র পরিবারের সদস্যদের শীতবস্ত্র এবং ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করছেন।

ভুটিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান জানান, গ্রামের মরহুম মোহাম্মদ আলীর বংশধররা চার দশক ধরে বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে অকালে মারা যায়। কেউ কেউ বেঁচে থাকলেও রোগাক্রান্ত হয়ে পঙ্গু জীবন যাপনে বাধ্য হন। চিকিৎসার খরচ চালাতে পুরো বংশের সব পরিবার পথে বসেছে। অন্যের দান খয়রাতে জীবন চলে।

অসহায় এ পরিবারের দুর্দশা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর গোপালপুরের কৃতি সন্তান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ডাক্তার বিদ্যুৎ চন্দ্র দেবনাথ এ পরিবারের পাশে দাড়ান। গত শুক্রবার পরিবারের  সদস্যদের সাথে দেখা করেন। মিডিয়া এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা তখন উপস্থিত ছিলেন। তিনি বিরল রোগে আক্রান্ত পরিবারের সকল সদস্যকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়ার কথা জানান। তাদের ঢাকায় আসা-যাওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করেন।

পরিবারের লাইলী বেগম জানান, আজ মঙ্গলবার খুব ভোরে সুমাইয়া ও আমিনুলকে গাড়িতে করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসাও চলছে। হতদরিদ্র পরিবারের সুচিকিৎসার জন্য এভাবে পাশে দাড়ানোর ঘটনায় পরিবারের সবাই কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। গ্রামবাসিরাও খুবই খুশি।

ডাক্তার বিদ্যুৎ চন্দ্র দেবনাথ জানান, বিএসএমএমইউ এর ল্যাবরেটরি পরীক্ষা নিরীক্ষায় দেখা যায়, এরা ‘হান্টিংটন কোরিয়া’ রোগে আক্রান্ত। জেনেটিক মিউটেশনের জন্য এ রোগ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে প্রসারিত হয়। অনেকেই বংশ গত রোগও বলে থাকেন। অনিয়ন্ত্রিত নড়াচড়া, ভারসাম্য হীনতা, পেশী সংকোচন, স্মৃতি হীনতা, ডিপ্রেশন, অস্থির ও নার্ভাস হয়ে শেষ পর্যায়ে পঙ্গু হয়ে মৃত্যূর কোলে ঢলে পড়ে। চিকিৎসা কিছুটা ব্যয়বহুল। পরিবারের সুমাইয়া ও আমিনুলের চিকিৎসা চলছে। কিছু স্যাম্বল পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য ভারতে পাঠানো হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে পরিবারের সকলকে চিকিৎসা সেবার আওতায় আনা হবে বলে জানান ডাক্তার বিদ্যুৎ।

গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তুহিন হোসেন জানান, অসহায় পরিবারের পাশে উপজেলা প্রশাসন দাড়িয়েছে। পরিবারের সদস্যদের সুযোগ মতো সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতা, খাদ্য সামগ্রী সহায়তা দেয়া হচ্ছে। প্রত্যেক পরিবারকে শীত বস্ত্র দেয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন -


Top
error: Content is protected !!