আজ || রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শিরোনাম :
  গোপালপুরে মাদরাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে গণশুনানি       ভূঞাপুর মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নতুন কমিটি       গোপালপুরে ১৮ বছর পর স্বনামে ফিরলো আব্দুস সালাম পিন্টু কলেজ       গোপালপুরে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত       ক্ষেতের আইল দিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে ভোগান্তিতে শিশু শিক্ষার্থীরা       গোপালপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কমিটি গঠন       গোপালপুরে জামায়াতে ইসলামীর পৌর শাখার কর্মী সম্মেলন       ইমনরা স্বাধীনতা এনে দিয়েছে: টাঙ্গাইল জেলা জামায়াত আমীর        গোপালপুরে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন       ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগকে এদেশের মানুষ মাথা তুলে দাড়াতে দিবেনা : সালাউদ্দীন আহমেদ    
 


গোপালপুরে শিশু ধর্ষন অপচেষ্টা; ভিক্টিমের বাড়িতে প্রাণনাশের হুমকিতে আদালতে প্রসিকিউশন

গোপালপুর বার্তা রিপোর্ট :

গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের উড়িয়াবাড়ী গ্রামের শিশু ফুটবলার ধর্ষণ অপচেষ্টা মামলায় আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিটের পর এবার ভিক্টিমকে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে পৃথক প্রসিকিউশন দিয়েছে পুলিশ।

গত বৃহস্পতিবার হেমনগর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই মঞ্জুর আহমেদ আদালতে নন এফআইআর প্রসিকিউশন দাখিল করেন।

গোপালপুর থানার ওসি জিয়াউল মোর্শেদ জানান, উড়িয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী গত ২৪ জুলাই ধর্ষণ অপচেষ্টার শিকার হন। একই দিন থানায় মামলা হলে পুলিশ একমাত্র আসামী আলেফ শেখকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়। গত ২২ আগস্ট জামিনে মুক্তি পেয়ে রাত নয়টায় গলায় ফুলের মালা জড়িয়ে ভাড়া করা ব্যান্ডপার্টি নিয়ে গ্রামে আসে আসামী আলেফ শেখ। এরপর পুত্র, ভাতিজা ও ভাগ্নেসহ কিছু বন্ধুবান্ধব নিয়ে নেচেগেয়ে পুরো গ্রাম মাতোয়ারা করে তোলে। একপর্যায়ে তারা ভিক্টিমের  বাড়ির উঠানে গিয়ে নাচগানের পর বাবামাসহ ভিক্টিমকে গালিগালাজ, মামলা তুলে নেয়ার নির্দেশ অন্যথায় প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসে। এমতাবস্থায় মামলার বাদি এবং ভিক্টিমের মা রেজিয়া বেগম গত ২৬ আগষ্ট জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গোপালপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। হেমনগর পুলিশী তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই মঞ্জুর আহমেদ ঘটনাটি আমলে অযোগ্য ধারার অপরাধ বিধায় বিজ্ঞ আদালতের অনুমতি চান। আদালতের অনুমোদন লাভের পর তদন্তে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পান এবং পেনাল কোর্ডের ৫০৬ ধারায় আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে বিচারের প্রার্থনা জানিয়ে প্রসিকিউশন দাখিল করা হয়।

বাদী পক্ষের আইনজীবি জুয়েল হোসন জানান, ভিক্টিমের জবানবন্দী এবং সাক্ষ্য প্রমাণ ধর্ষণ অপচেষ্টা মামলার অভিযোগের সত্যতা প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হওয়ায় এর আগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ এর ৯ (৪) (খ) ধারায় আসামী আলেফ শেখের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন হেমনগর পুলিশী তদন্ত কেন্দ্রের সাবইন্সপেক্টর বশীর আহমেদ। ধর্ষণ অপচেষ্টা মামলায় চার্জশিট এবং ভিক্টিমকে মামলা তুলে না দিলে প্রাণনাশের হুমকিতে প্রসিকিউশন দাখিল করায় ভিক্টিমের বিচার পাওয়ার পথ আরো প্রশস্ত হবে বলে জানান বাদীপক্ষের ওই আইনজীবি।

এদিকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ জানান, আসামী পক্ষের আইনজীবি রবিউল হাসান রতনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। কারণ ওই ভিক্টিম যে স্কুলে পড়েন সেই উড়িয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হলেন ওই আইনজীবি। ভিক্টিমের মা এবং মামলার বাদী রেজিয়া বেগম গত ২৮ আগষ্ট গোপালপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন যে, এডভোকেট রবিউল হাসান রতনকে সাথে নিয়ে আসামী আলেফ শেখ তিন হাজার চারশ টাকায় ব্যান্ডপার্টি ভাড়া করেন এবং গ্রামে বাদ্য বাজনার সময় ওই আইনজীবি নিজে উপস্থিত ছিলেন। এমনকি তার সামনেই ভিক্টিমকে আসামীরা প্রাণনাশের হুমকি দেন। নিজ স্কুলের শিক্ষার্থী এবং পুরস্কার প্রাপ্ত একজন শিশু ফুটবলার ধর্ষণ অপচেষ্টার শিকার হলেও মুষড়েপড়া সেই শিশুটির তিনি কোন খোঁজ নেননি। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির এমন কান্ডে ভিক্টিম স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। এ ব্যাপারে এডভোকেট রবিউল হাসান রতনকে সভাপতির পদ থেকে অপসারণের দাবি জানান। এ অভিযোগের ঘটনায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এমনকি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ উড়িয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। তিনি শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং ভিক্টিম ও তার বাবামার সাথে দেখা করেন। ওই এডভোকেটের এমন অমানবিক ভূমিকার নিন্দা জানান। এডভোকেট রতনের বিরুদ্ধে বাদির অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার। তাই স্কুল কমিটির দায়িত্ব থেকে তাকে আপাদত বিরত রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে এডভোকেট রতনের বক্তব্য জানার জন্য তার মোবাইলে রিং করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

মন্তব্য করুন -


Top
error: Content is protected !!