গোপালপুর বার্তা ডেক্স :
গোপালপুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের কাগুজিআটা গ্রামে তালাকপ্রাপ্ত এক কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা বানোয়াট মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার গোপালপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
মির্জাপুর ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বড়শিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম লাভলু, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিক, শহর ছাত্রলীগ আহবায়ক ফারুখ হাসান, ছাত্রলীগ নেতা ইকিবাল হোসাইন, সোহানুর রহমান সোহান, আলমগীর কবীর রানা, আল ফারুখ ক্যাপ লিমিটেডের পরিচালক আলা উদ্দীন মাসুদ, লাকী বেগম ও আব্দুর রশীদ। এসময় মির্জাপুর ইউনিয়নের কাগুজিআটা, নুঠুরচর ও মোহনপুর গ্রামের মাতবরগণ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা অভিযোগ করেন, ২০১৩ সাল কাগুজিআটা গ্রামের মৃত আনছের আলীর কন্যা বিথী খাতুনের সাথে একই গ্রামের মৃত আঃ সালামের পুত্র শফিকুল ইসলামের বিয়ে হয়। দাম্পত্য কলহের জের ধরে গত মার্চ মাসে মৌখিক তালাকে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এমতাবস্থায় শফিকুলের সাথে ঘাটাইল উপজেলার রৌহা গ্রামের এক যুবতীর বিয়ে ঠিক হয়। গত ২১ অক্টোবর বুধবার এ বিয়ে হবার কথা ছিল। কিন্তু বিয়ের দুদিন আগে গত ১৯ অক্টোবর সোমবার বিকালে বিথী প্রাক্তন স্বামী শফিকুলের বাড়িতে গিয়ে উঠেন। বাড়ির লোকজন তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বিথীকে ঘরে উঠতে বাধা দেন। ঝগড়ার এক পর্যায়ে বিথী শারিরীকভাবে লাঞ্জিত হন। পরে গ্রামবাসির সহায়তায় সন্ধ্যা সাতটার পর তাকে একটি ইজিবাইক করে বাবার বাড়ি নিয়ে মায়ের হেফাজতে তুলে দেয়া হয়। গ্রামের দুই শতাধিক মানুষ রাত দশটা পর্যন্ত বিথীদের বাড়িতে তালাক ও পুনঃবিবাহ নিয়ে সালিশ করেন। সালিশের একটি ভিডিও করা হয়। রাত হয়ে যাওয়ায় সালিশ অমিমাংসিত থেকে যায়। পরদিন কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং টেলিভিশন চ্যানেলের খবর থেকে গ্রামবাসি জানতে পারেন আগের দিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিথী অপহরণ এবং ধর্ষিত হন। কাবিন ছাড়া বাল্যবিয়ে, খোরপোষ ছাড়াই তিন তালাক এবং শফিকুলের দ্বিতীয় বিয়েকে কেন্দ্র করে এ বানোয়াট গণধর্ষণের মামলা হয়। এতে স্বামী শফিকুল, আপন দুই চাচা ও দুই ভাইকে আসামী করে গত ২০ অক্টোবর গোপালপুর থানায় গণধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার বাদী ভিক্টিমের মা তাছলিমা বেগমের দাবি, তার কন্যার বিয়ে হয়নি। ঘটনার দিন শফিকুলের বাড়িতেও যায়নি। মোহনপুর বাজার থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বাড়ি ফেরার সময় আসামীরা তাকে অপহরণ এবং রাতভর ধর্ষণ করে। পরে ভোর পাঁচটায় তাকে ব্রীজপাড়ে রেখে যায়। কিন্তু মেডিক্যাল পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত না মেলায় ডিএনএ টেস্টের উদ্যােগ নেয়া হয়েছে বলে জানায় মামলার তদন্তকারি অফিসার এবং গোপালপুর থানার ওসি (তদন্ত) কাইয়ুম খান সিদ্দিকী।
গ্রামবাসিরা সংবাদ সম্মেলনে বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার, ভুল তথ্য দিয়ে ভাড়াটে মিডিয়াকে ব্যবহার করে অপপ্রচার এবং নিরিহ মানুষকে হয়রানির পায়তারা বন্ধের দাবি জানান। স্থানীয় একটি চক্র সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য বানোয়াট গণধর্ষণের নাটক সাজিয়ে ভাড়াটে ইলেকট্রনিক ও অনলাইন পোর্টালকে ব্যবহার করে গোয়েবলসীয় কায়দায় অপপ্রচার চালাচ্ছে।
গোপালপুর থানার ওসি মোশাররফ হোসেন জানান, সবকিছু মাথায় নিয়ে তদন্ত চলছে। শীঘ্রই বিষয়টি পরিস্কার হবে বলে জানান তিনি।