বিশেষ সংবাদদাতা : পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই কেন্দ্রের আশেপাশে দলে দলে বিভক্ত কিছু মানুষে ঝটলা চোখে পড়ে। ঝটলার দিকে একটু এগুতেই দেখা যায়, প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেখে সাদা কাগজে উত্তর লিখছে অভিভাবকরা। এ যেন ছোট্র সোনামনি শিক্ষার্থীদের নয়, চলছে অভিভাবকদের পরীক্ষা। বিষয়টি বিস্ময়কর মনে হলেও, এমনই ঘটনা ঘটেছে টাঙ্গাইলের গোপালপুরের নারুচী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। গতকাল রবিবার (২৬ নভেম্বর) প্রাথমিক স্কুল সার্টিফিকেট (পিএসসি) গণিত পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ঐ কেন্দ্রে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
প্রশ্নপত্র কিভাবে বাইরে এলো জানতে চাইলে অভিভাবকরা বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতর থেকে মোবাইলের মাধ্যমে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে স্থানীয় কোচিং সেন্টারের পরিচালকরা সরবরাহ করছে। আর সেই প্রশ্ন দেখে সাদা কাগজে উত্তর লেখার পর দায়িত্বরত শিক্ষকদের ম্যানেজ করে শিক্ষার্থীদের কাছ পৌছে দেয়া হচ্ছে। অভিভাবকদের সাদা কাগজে লিখে দেয়া সরবরাহকৃত নকল দেখেই পরীক্ষার মূলউত্তরপত্রে লিখছে শিক্ষার্থীরা। ঐ কেন্দ্রে চারটি কোচিং সেন্টারের ৪৮জন শিক্ষার্থী ছাড়াও প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী মাদ্রাসার ৩৯৭জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে।
উত্তরপত্র লেখার সময় ব্রাইটার কোচিং সেন্টারের নাম প্রকাশে এক অনিচ্ছুক শিক্ষক জানান, ব্রাইটারের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছে। সুতরাং দায়িত্বের মধ্যেই এই কাজগুলো করতে হচ্ছে। সবাই করছে তাই আমাদের ছেলে-মেয়ের জন্য একটু সহযোগিতা করছি। তিনি আরো জানান, পরীক্ষার হলে দায়িত্ব স্যারদের ম্যানেজ করেই মোবাইল ক্যামেরায় প্রশ্নপত্রের ফটো তুলে বাহিরে আনতে হয়েছে।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে নারুচী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব সাইদুজ্জামান জানান, কেন্দ্রে সুষ্ঠভাবে পরীক্ষা হচ্ছে। কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আনোয়ার হোসেন জানান, বিচ্ছিন্ন এলাকা হওয়ায় এই কেন্দ্রে দায়িত্বপালন করা কষ্টের। তবে নকলের কোন সুযোগ নেই। প্রশ্নপত্র বাহিরে যাওয়ার কোন খবর জানা আমার নেই।