কে এম মিঠু, গোপালপুর :
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে বন্ধ হচ্ছেনা নদী দখল। প্রভাবশালীরা প্রকাশ্যে শহরের আর্শিবাদ বলে খ্যাত বৈরাণ নদী দখল এবং ভরাট করলেও নিরব ভূমিকা পালন করছে প্রশাসণ।
জানা যায়, যমুনা-ঝিনাই নদীর শাখা বৈরাণ নদী গোপালপুর, ভূঞাপুর ও ধনবাড়ি উপজেলার বিস্তৃত এলাকায় প্রবাহিত হয়েছে। পাট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে অষ্টাদশ শতাদ্বীর শেষ দিকে বৈরাণ নদীর তীরে গড়ে উঠে গোপালপুর শহর। ১৯৭৪ সালে পৌরসভা ঘোষিত হলে জায়গাজমির দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রভাবশালীরা প্রকাশ্যে নদী ভরাট করে প্লট আকারে বিক্রি শুরু করে। বর্তমানে নদীর উভয় তীর ভরাট করে গড়ে তোলা হচ্ছে শত শত বাসাবাড়ি, দোকানপাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অফিস। হাট বৈরান, কোনাবাড়ি বাজার, থানা চত্বর, নন্দনপুর, চরপাড়া ও দক্ষিণ গোপালপুর এলাকায় নদী ভরাটের প্রবণতা বেশি। নদী দখল বন্ধে পৌর প্রশাসনের ভূমিকা রাখাতো দূরের কথা, খোদ পৌর কর্তৃপক্ষই শহরের ময়লা-আবর্জনা দিয়ে নদী ভরাট করে দখলের নজির স্থাপন করেছে। দখল ও ভরাটের দরুন স্রোতস্বিনী বৈরাণ নদী এখন সংকীর্ণ খাল।
এদিকে বৈরাণ নদীর সাথে ২০/২৫টি খাল ও বিলের সংযোগ রয়েছে। গোপালপুর শহর অংশে ভরাটের দরুন নদীর স্রোতে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় ভাটির এসব খাল ও বিলে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। ঘটে ফসলহানি। এবার জলাবদ্ধতায় ৪/৫ হাজার একর জমি অনাবাদী রয়ে গেছে।
পলশিয়া গ্রামের শফিক তালুকদার অভিযোগ করেন, এবারের বণ্যায় বিলের রোপা আমন ফসল ডুবে যায়। বণ্যা চলে গেলেও জলাবদ্ধতায় নামছেনা বিলের পানি। ফলে সরিষা ও কলাই চাষ করা যায়নি। বৈরান নদী দখল মুক্ত করার জন্য ফেসবুক ভিত্তিক সংগঠন আমরা গোপালপুরবাসী গ্রুপ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করে আন্দোলন ও সম্প্রতি সুজন-সুশাসণের জন্য নাগরিক গোপালপুর শাখা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে স্মারকলিপি দেন। কিন্তু নদী দখল বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
স্থানীয় প্রশাসনের বক্তব্য, এরা খুবই প্রভাবশালী। রাজস্ব বিভাগের এক শ্রেণীর কর্মচারির যোগসাজশে কৌশলে নানা ধরনের কাগজপত্র তৈরি করে নদী দখলে নিয়েছেন। তবে ভবিষ্যতে কেউ যাতে আর নদী দখল করতে না পারে সে ব্যাপারে প্রশাসন সজাগ রয়েছে।