নিজস্ব সংবাদদাতা : ঢাকার কলাবাগানে জুলহাজ-তনয় খুনের ঘটনা মিলিয়ে না যেতেই আজ শনিবার সকাল সাড়ে এগারোটার সময় গোপালপুর পৌরসভার ডুবাইল মাদ্রাসার অনতিদূরে নিজ দোকানের সামনে উগ্রপন্থিদের হাতে খুন হয়েছেন দর্জি নিখিল চন্দ্র জোয়ারদার। তার বাবার নাম নলিনী কান্ত জোয়ারদার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সময় নিখিল দর্জি বাড়ির নিকটস্থ তিথি তীর্থ বস্ত্রালয় এন্ড টেইলার্স দোকানে বসে পোশাক নির্মাণের কাজ করছিলেন। এ সময়ে পূর্বদিক থেকে মোটর সাইকেলে করে তিন যুবক যাদের বয়স আনুমানিক ২০/২২ বছর দোকানের সামনে থামে। এর মধ্যে চালকের মাথায় ছিল হেলমেট পড়া। যুবকদের একজন মোটর সাইকেল থেকে নেমে নিখিলকে দোকান থেকে ডেকে বের করে। কাছাকাছি আসা মাত্র মোটরসাইকেল আরোহী অপর দুই যুবক ব্যাগ থেকে ছুরিচাকু বের করে তাকে নির্বিচারে কোপাতে থাকে। যুবকরা তার বুকে, ঘাড়ে ও মাথায় ৭/৮টি কোপ দেয়। মৃত্যূ নিশ্চিত করে মোটরসাইকেলে করে সূতিকালিবাড়ির দিকে চলে যায়।
এ সময় প্রত্যক্ষদর্শী মো. হারুন মিয়া জানান, দূর থেকে কেউ নিখিল জোয়ারদারের দোকানের সামনে ধ্বস্তাধস্তি করছে দেখে আমি এগিয়ে গেলে রক্তমাখা চাপাতি দেখিয়ে আমাকে বলে, সামনে এগিয়ে আসলে জানে মেরে ফেলব। বলতে বলতেই মোটরসাইকেল যোগে তিন যুবক মুর্হূতেই স্থান ত্যাগ করে। ঘাতকরা এক ব্যাগে ৪/৫টি ককটেল রেখে যায়।
এলাকাবাসিরা জানান, দুই বছর আগে মহানবীকে নিয়ে কটূক্তি করায় ক্ষুব্দ এলাকাবাসিরা দোকানে চড়াও হয়ে তাকে অপদস্ত করে। পরে পুলিশ নিখিলকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায়। একমাস জেলহাজতে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে আসে নিখিল। ধর্ম অবমাননার দায়ে করা ওই মামলার বাদি দৈনিক ইনকিলাবের গোপালপুর সংবাদদাতা এবং আলমনগর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আমিনুল ইসলাম জানান, নিখিল অনুতাপ প্রকাশ করায় এবং ডুবাইল গ্রামের কয়েকজন মুরুব্বীর অনুরোধে তিনি ছয় মাস আগে আদালত থেকে মামলা তুলে নেন।
গোপালপুর থানার ওসি জানান, উগ্রপন্থিদের দ্বারাই নিখিল খুন হয়েছে তা নিশ্চিত করে এখনি বলা সম্ভব নয়। তবে তার ভাতিজি স্বর্ণাকে দুই বছর আগে ঢাকা থেকে ডিভোর্স করে আনার পর স্বর্ণার স্বামী রুদ্র নিখিলের পরিবারের সকলকেই প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। তদন্তে উগ্রপন্থি ছাড়াও এ বিষয়টিকেও মাথায় রাখা হয়েছে।
গোপালপুর সার্কেলের এএসপি জমিরউদ্দীন জানান, জঙ্গী হামলা কিনা এখনই নিশ্চিত বলা যাচ্ছেনা। আরো পরে বলা যাবে। ঘটনাস্থলে কয়েকটি ককটেল পাওয়া গেছে বলে অবগত করেন।