কে এম মিঠু, গোপালপুর:
টাঙ্গাইলের গোপালপুর পৌরশহরের প্রধান সড়কের স্বাধীনতা কমপ্লেক্স সংলগ্ন ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজটি দিনের বেলায় মরণ ফাঁদ ও রাতের বেলায় মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। সরু ব্রীজটির উত্তর অংশের পাটাতন ভেঙ্গে নড়বড়ে হয়ে যাওয়ায় প্রতিদিনই বাড়ছে সড়ক দূঘর্টনা, শহরের সৃষ্টি হচ্ছে অসহনীয় যানজট। উপজেলাবাসী বারবার ব্রীজটি সংস্কারের দাবি জানালেও সওজ কর্তৃপক্ষ সংস্কারের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করছেনা।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রমতে, ১৯৮৮সালে ভয়াবহ বন্যার সময় স্বাধীনতা কমপ্লেক্স সংলগ্ন ক্রংকিট ব্রীজটি ধসে পড়লে সওজ জরুরী ভিত্তিতে একটি বেইলি ব্রীজ নিমার্ণ করে। তারপর আড়াই দশক অতিবাহিত হলেও সওজ ব্রীজটির দেখভাল না করায় ব্রীজটি সম্পূর্ণ রুপে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী সওদাগর অভিযোগ করে বলেন, শহরের প্রাণকেন্দ্র ও প্রধান সড়কের উপর নির্মিত এ ব্রীজটি এতই সরু যে ব্রীজে একটি বাস বা ট্রাক উঠলে অপরদিক হতে একজন পথচারীও ব্রীজ পার হতে পারেন না। ব্রীজের পাটাতন দীর্ঘ দিন ব্যবহারের কারণে জং ও মরচে পড়ে বেশ কয়েকটি অংশে ক্ষয়ে গেছে। এ ফাটলে গাড়ির চাকা আটকে প্রতিদিনই গাড়ি বিকলসহ তৈরি হয় যানযট। ব্রীজটি দিনের বেলায় মরণ ফাঁদ ও রাতের বেলায় মরণ কূপে পরিণত হয়। ব্রীজটি উট পিঠের মত ৭-৮ ফুট উঁচু হওয়ায় এবং ব্রীজে উঠানামার সড়ক ভেঙ্গেচুরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাওয়ায় প্রায় প্রতিনিয়তই যানযাহন উঠা নামার সময় উল্টে পার্শ্ববর্তী খালে পড়ে যায়।
সম্প্রতি ব্রীজের ফাটলে এক মোটরসাইকেল আরোহীর পা আটকে মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে আসার ঘটনায় সওজ তড়িঘড়ি করে পাটাতনের প্লেট জোড়াতালি এবং বিশেষ কায়দায় ইট বিছিয়ে কোন ভাবে যানচলাচলের উপযোগী করে। কিন্তু ব্রীজটি আরো ভালো ভাবে মেরামত করা না হলে বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটবে বলে মনে করছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
গোপালপুর পৌরসভায় মেয়র অধ্যক্ষ খন্দকার জাহাঙ্গীর আলম রুবেল জানান, শহরের উভয় অংশ এবং জেলা সদর, ভূয়াপুর, মধুপুর, ধনবাড়ী, ঘাটাইল উপজেলার সাথে সংযোগ স্থাপনকারি এ ব্রীজটি দিয়ে ২৪ ঘণ্টায় অসংখ্য যানবাহন ও মানুষ পারাপার হয়ে থাকে। জীর্ণ ব্রীজটি এখন মরণ ফাঁদ। প্রতিদিনই ঘটছে অসংখ্য দুঘর্টনা। উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার আগেই ব্রীজটি ভেঙ্গে নতুন ব্রীজ তৈরি করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য খন্দকার আসাদুজ্জামান এমপিকে একাধিকবার অনুরোধ জানানো হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি।
গোপালপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইউনুছ ইসলাম তালুকদার ঠাণ্ডু জানান, জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় এ মারাত্বক ব্রীজটি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। সওজ ব্রীজটি দ্রুত নির্মাণের আশ্বাস দিলেও তারা কথা দিয়ে কথা রাখেনি।
সড়ক ও জনপথ মধুপুর সার্কেলের প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান জানান, বাউসী-বঙ্গবন্ধু সেতু ভায়া গোপালপুর ফিডার প্রকল্পের আওতায় এ ঝুঁকিপূর্ণ বেইলী ব্রীজের স্থলে কংক্রিট ব্রীজ নির্মাণের কথা। কিন্তু মন্ত্রনালয় প্রকল্পের টাকা ছাড় না দেয়ায় ব্রীজ নির্মাণের কাজ স্থগিত রয়েছে।