নিজস্ব প্রতিবেদক : ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার রোজগার্ডেনে আওয়ামী মুসলিম লীগের জন্ম। ১৯৫৫ সালে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে নামকরণ করা হয় আওয়ামীলীগ। বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহি এ রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। আর সম্পাদক ছিলেন শামসুল হক।
সৌভাগ্যবশত এই দুই প্রয়াত নেতার বাড়ি টাঙ্গাইলে। টাঙ্গাইলবাসী এ মহান দুই প্রয়াত নেতার জন্য গর্বিত। দেশের সব রাজনৈতিক দল এ দুই বরেণ্য ব্যক্তিকে খুবই সম্মানের চোখে দেখে থাকেন। বাঙ্গালী তথা বাংলাদেশের ইতিহাসে এরা সমুউজ্জল।
টাঙ্গাইলের সন্তোষে মাওলানা ভাসানীর নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। আর শামসুল হকের নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এলেঙ্গা শামসুল হক ডিগ্রি কলেজ। বর্তমান সরকার কলেজেটিকে সরকারিকরণ করেছেন। তাছাড়াও টাঙ্গাইল জেলা শহরের প্রবেশ মুখে নির্মিত হয়েছে শামসুল হক তোরণ। শহরে প্রবেশ মুখের ওই তোরণ ভালোবাসা আর শ্রদ্ধাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। অথচ বাঙ্গালী জাতির এ অন্যতম শ্রেষ্ঠ পুরুষ, যাকে নিয়ে টাঙ্গাইলবাসী অহঙ্কার করে থাকেন তাকে পুঁজি করে ধান্ধাবাজি করছেন কথিত অধ্যক্ষ জিল্লুর রহমান শিহাব।
অনুসন্ধানে জানা যায়, জিল্লুর রহমান শিহাব প্রয়াত নেতা শামসুল হকের নামে গোপালপুরে একটি গ্রন্থাগার নির্মাণ করার প্রকল্প পাঠান টাঙ্গাইল জেলা পরিষদে। জেলা পরিষদ এ মহান ব্যক্তির নামে পাঠাগার নির্মাণের প্রস্তাব স্বাদরে গ্রহন করেন। এরপর জেলা পরিষদ বিগত দুই বছরে দুই দফায় সাত লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেন। ওই বরাদ্দের টাকায় জিল্লুর রহমান শিহাব গোপালপুর পৌরশহরের নন্দনপুর মহল্লায় তার কেনা জমিতে তিন তলা একটি বাসভবন নির্মাণ করছেন। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সেখানে কোনো লাইব্রেরীর সাইনবোর্ড নেই। ভবনটির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। মহল্লাবাসীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কেউ বলতে পারেনি শামসুল হক নামের কোন পাঠাগারের অস্তিত্ব ছিল বা আছে।
শিহাব গোপালপুর পৌরশহরের নন্দনপুর মহল্লায় তার কেনা জমিতে তিন তলা একটি বাসভবন নির্মাণ করছেন।
জিল্লুর রহমান শিহাবের বাসা থেকে মাত্র দশ গজ দূরে অবস্থিত বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের তালুকদারের বাসভবন। তিনি জেলা পরিষদের নির্বাচিত বর্তমান সদস্য। তিনি জানান, জেলা পরিষদের সাত লক্ষ টাকা এনে জিল্লুর রহমান শিহাব নিজের বাড়ি বানাচ্ছেন। সেখানে বহুতল ভবন উঠছে। এখানে পাঠাগার কোথায়? তিনি নিজে যেমন পাঠাগারের খবর জানেন না, তেমনি মহল্লাবাসিও অবহিত নন। তিনি আরো জানান, টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান ফারুককে এ চিটিংবাজির কথা জানানো হয়েছে। দেখা যাক কী হয়?
স্থানীয় সংবাদকর্মীরা নির্মাণাধীন ভবনে অনুসন্ধান চালিয়ে কোনে গ্রন্থাগারের অস্তিত্ব খুঁজে পাননি। এ ব্যাপারে জিল্লুর রহমান শিহাবের সেল ফোনে গত শুক্রবার দুপুরে গোপালপুর বার্তার বিশেষ প্রতিনিধি অভিজিৎ ঘোষ যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ‘নন্দনপুরে শামসুল হক পাঠাগারের অস্তিত্ব রয়েছে। খালি চোখে মিডিয়াকর্মীরা হয়তো তা দেখতে পারছেন না। পাঠাগারের ভবন নির্মাণ হচ্ছে। আসবাবপত্র কেনা হচ্ছে। ১৫০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি রয়েছে। এটি একটি মহৎ কাজ। শহরের সবাই জানে।’
এখানে বলা অনাবশ্যক কথিত অধ্যক্ষ জিল্লুর রহমান শিহাবের প্রয়াত পিতার নামও শামসুল হক।