আজ || শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
শিরোনাম :
  গোপালপুরের সেনেরচর আলীম মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যতো অভিযোগ       গোপালপুরে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালিত       গোপালপুরে ছাগল পালনে স্বাবলম্বী শিল্পী রাণী এবং আন্না বেগম       গোপালপুরের ঝাওয়াইলে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ       গোপালপুরে দিনব্যাপী হাজী সম্মেলন অনুষ্ঠিত       গোপালপুরে বারেক মেম্বারের মৃত্যুবার্ষিকী পালন       গোপালপুরে বিদ্যুৎপৃষ্টে স্কুল ছাত্রের মৃত্যু       গোপালপুরে ওয়ার্ডমাস্টার প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার প্রদান       গোপালপুরে সরকারি জমি দখল নিতে দুই পক্ষের উত্তেজনা, সড়ক অবরোধ       গোপালপুরে নূরানী মাদরাসা শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত    
 


জাল সনদে আওয়ামী লীগ নেত্রীর ভাইকে কোটচাঁদপুর পৌর কলেজের শিক্ষক নিয়োগ

সনদপত্র জাল প্রমাণিত হবার পরও চাকুরী করে যাচ্ছেন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌর কলেজের সহকারী শিক্ষক তানজিলুর রহমান। বে-সরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ কলেজকে জানিয়ে দিয়েছেন ওই শিক্ষকের সনদটি জাল। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অথচ এরপরও কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। কলেজের একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, শিক্ষক তানজিলুর রহমান পাশ্ববর্তী মহেশপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেত্রী আশরাফুন নাহারের ছোট ভাই। আর কোটচাঁদপুর-মহেশপুর উপজেলা নিয়ে ঝিনাইদহ-৩ সংসদীয় আসন। যে আসনের সাংসদ শফিকুল আজম খাঁন এর সাথে সখ্যতা রয়েছে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের। সেই প্রভাব খাটানোর কারনে কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে এখনও কোন ব্যাবস্থা নিয়ে পারেননি। অবশ্য কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ন কবির জানিয়েছেন তারা কলেজ পরিচালনা কমিটির সভায় বিষয়টি উঠিয়েছিলেন। দ্রুত তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

কোটচাঁদপুর পৌর কলেজ পরিচালনা কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করে জানান, ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে তারা কলেজে একজন শরীর চর্চা শিক্ষক নেবার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। সেই অনুযায়ী পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে অনেকের সাথে তানজিলুর রহমানও আবেদন করেন। এরপর তানজিলুর রহমানকে ২০১২ সালের ফেব্র�য়ারী মাসের ১০ তারিখে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর এমপিও ভুক্তির জন্য তার কাগজপত্র ঢাকায় পাঠানো হলে সেখান থেকে ফেরত দেওয়া হয়। জানিয়ে দেওয়া হয় তার নিবন্ধন সনদটি ঠিক নয়। এরপর বে-সরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ এর কাছে বিষয়টি যাচাই করতে পাঠানো হলে সেখানে জাল সনদ ধরা পড়ে। গত ৯ সেপ্টেম্বর বে-সরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক দীনা পারভীন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে তানজিলুর রহমান জমা দেওয়া সনদটি জাল। তানজিলুর রহমান চাকুরীর সময় রোল- ৩১৮০০০১২ ও রেজিঃ- ১০০০০৮৯৩৩০/২০১০ নং সনদটি জমা দেন। যা জাল বলে প্রমানিত হয়েছে। চিঠিতে ওই জাল সনদ দেওয়ার অপরাধে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ গত এক মাসেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি।

এদিকে এই চিঠি কলেজে আসার পর শুরু হয় নানা জল্পনা-কল্পনা। একটি পক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া জন্য কলেজ পরিচালনা কমিটির উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। আরেকটি পক্ষ জাল সনদ দেওয়া ওই শিক্ষকের শুধু চাকুরী থেকে বরখাস্ত নয় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থারও দাবি তোলেন। কিন্তু শিক্ষক তানজিলুর রহমান ক্ষমতাসিন দলের নেত্রীর ভাই হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ আজোও কোন ব্যবস্থা নেননি। অপরদিকে কলেজের কয়েকজন শিক্ষক জানিয়েছেন শিক্ষক তানজিলুর রহমান ২০১১ সালের শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পুনরায় অংশ নিয়েছিলেন। এবার তিনি পাশও করেছেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ তার পূর্বের সনদ পরিবর্তন করে নতুন সনদ যুক্ত করে গোটা বিষয়টির সমাধান করার চেষ্টা করছেন।

এ ব্যাপারে শিক্ষক তানজিলুর রহমান জানান, তার সনদটি জাল নয়। বে-সরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ কেন এভাবে লিখে দিয়েছেন তা তিনি জানেন না। আর পুনরায় পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। তবে তার বোন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আশরাফুন নাহার জানান, বিষয়টি একটু সমস্যা হয়েছে। যা কলেজ পরিচালনা কমিটি সমাধানের চেষ্টা করছেন। কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কোটচাঁদপুর পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ফারজেল হোসেন জানান, তারা বিষয়টি নিয়ে সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কারন দর্শানো চিঠি দেওয়া হয়ে। এরপর তাকে সেচ্ছায় পদত্যাগ করতে বলা হবে, না করলে তারা বহিষ্কার করবেন। পরবর্তীতে তাকে আবার নেওয়া প্রসঙ্গে বলেন, সে পুনরায় আবেদন করলে বিষয়টি নিয়ে তারা কি পদক্ষেপ নিবেন তা তখনই ঠিক করবেন। কলেজ অধ্যক্ষ হুমায়ন কবিরও একই কথা বলে বিষয়টি নিয়ে তাদের করনিয় ভাবছেন মর্মে উল্লেখ করেন।

মন্তব্য করুন -


Top
error: Content is protected !!