আজ || রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫
শিরোনাম :
  অবশেষে গোপালপুরে বিরল রোগে আক্রান্ত পরিবার সুচিকিৎসা পাচ্ছেন       গোপালপুর-ভূঞাপুর যমুনা চরাঞ্চল এখন মাদক আর দুস্কৃতকারিদের অভয়ারণ্য       গোপালপুরে কৃষক জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত করতে কৃষক সমাবেশ       খোরশেদুজ্জামান মন্টুকে এলাকাবাসি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসাবে দেখতে চান       গোপালপুর উপজেলা পরিষদ স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা       গোপালপুরে কুরতুবী মাদ্রাসার উদ্ধোধন       সালাম পিন্টুর মুক্তির আনন্দে গোপালপুরে মোটরসাইকেল র‍্যালি       গোপালপুরে জাসাস এর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত       গোপালপুরে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সম্মেলন       গোপালপুরে বিনামূল্যে সহস্রাধিক শীতবস্ত্র বিতরণ    
 


কিশোরীকে আটকে রেখে ধর্ষণ

 ঘটনাটি বর্বরতম, পৈশাচিকতম! রাজধানী ঢাকায় এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেই ক্ষ্যান্ত হননি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমির এপিএস কাজল মোল্যা। ওই কিশোরীকে দুই মাস ধরে বাথরুমে আটকে রেখে প্রস্রাব পর্যন্ত পান করতে বাধ্য করেছেন কাজল মোল্যা ও তার স্ত্রী।

মিরপুরের বাসায় কাজল তার গৃহপরিচারিকা ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। আর এ ঘটনা কিশোরী কাজলের স্ত্রীকে জানানোর পরেই তার ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতনের খড়্গ।

রোববার চ্যাঞ্চলকর এই খবর প্রকাশ করেছে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘চ্যানেল ২৪’। টেলিভিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই কিশোরীকে ধর্ষণ, গরম তেলে হাত-পা ঝলসে দেয়া, শরীরের স্পর্শকাতর অঙ্গ থেঁতলে দেয়া ছাড়াও তাকে বাথরুমে আটকে রেখে প্রস্রাব খেতে বাধ্য করা হয়েছে।

কিশোরী টিভি চ্যানেলটিকে বলেন, ‘একদিন খুব খারাপ লাগছিল। আমি আন্টির (কাজল মোল্যার স্ত্রী) কাছে পানি চাই। এরপর তিনি প্রস্রাব করে তা এনে আমাকে খেতে বাধ্য করেন।’

এখানেই থেমে থাকেননি কাজল মোল্যা ও তার স্ত্রী। গরম তেল দিয়ে তার হাত ও পা ঝলসে দেয়া হয়। কিশোরী জানান, ‘গরম তেলে হাত ও পায়ে ফোঁসকা পড়ে। কিন্তু চিকিৎসা না করে আমাকে দিয়ে ঘর মোছা থেকে কাপড় ধুইতে বাধ্য করে।’

কিশোরী আরও বলেন, ‘রাতে আমাকে ঘরে শুইতে দিত না। বাথরুমেই রাত কাটাতাম।’

উল্লেখ্য, সিমিন হোসেন রিমি মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের কন্যা। রিমি গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসনের উপনির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরআগে এই আসনে তার ভাই তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ জয়ী হয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু সরকারের সাথে মতপার্থক্যের জেরে তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

নির্যাতিতা কিশোরীর বাড়িও গাজীপুরে। কাপাসিয়া উপজেলার বড়টেক গ্রামের দরিদ্র পিতা-মাতার সন্তান কিশোরীকে গৃহপরিচারিকা করে মিরপুরের বাসায় আনেন রিমির এপিএস কাজল মোল্যা।

এরপর তাকে দিয়ে কাজল লালসা মেটাতে থাকেন। এক পর্যায়ে ওই কিশোরী এ ঘটনা কাজলের স্ত্রীকে জানালে তার ওপর উল্টো আরও নির্যাতনের খড়্গ নেমে আসে।

কিশোরী বলেন, ‘স্যার একদিন আমাকে মোটা রডের পাইপ দিয়ে মারতে থাকেন। এ সময় আমি আনটির পা জড়িয়ে ধরে কাকুতি-মিনতি করি। তারা তখন আমার হাত-পা বেঁধে পেটাতে থাকে। এক পর্যায়ে এভাবেও তৃপ্তি না পেয়ে ফ্লোরে শুইয়ে পেটাতে থাকেন।’

এভাবে নির্যাতনে কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে কয়েকদিন আগে রাতের আঁধারে কাপাসিয়ার বড়টেকের জঙ্গলে ফেলে রেখে আসে কাজল মোল্যার অনুগতরা। ঘটনা আড়াল করতে অনুগতদের দিয়ে ওই কিশোরীকে প্রথমে অপহরণ করা হয়। আর তার বাড়িতেও পাহারা বসান কাজল, যাতে অন্যরা বিষয়টি না জানতে পারে।

এরপরও লোকমুখে ঘটনা জানাজানি হলে কাজল মোল্যা ভয়ভীতি দেখিয়ে কিশোরীর কাছ থেকে মিথ্যে জবানবন্দি নেন।

এ বিষয়ে কিশোরী টিভি চ্যানেল-কে বলেন, ‘একদিন ওসি আসেন। আমি তাকে বলতে বাধ্য হয়েছি যে, আমার হাতে-পায়ে একজিমা হয়েছে। এটা চিকিৎসায় স্যারেরা আমাকে ক্রিম কিনে দিয়েছেন। চিকিৎসাও করিয়েছেন।’

তিনি আরও জানান, ‘এ সময় কাজল স্যারের লোকেরা আমাকে হুমকি দেন- যদি তুমি এ ঘটনা তোমার মা-বাবাকে জানাও তাহলে তোমাকে গ্রাম ছাড়া করব।’

নির্যাতিতা কিশোরীর পিতা টিভি চ্যানেল- কে বলেন, ‘এ ঘটনায় তিনি থানায় গেলে পুলিশ কাজল মোল্যার নাম শুনে তাকে কোনো সহায়তা করেননি। উল্টো নানা রকম হয়রানি করেছেন।’

এখন কাজল মোল্যা ও তার অনুগতদের ভয়ে বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বন্দি জীবন-যাপন করছেন বলেও জানান নির্যাতিতার পিতা।

নির্যাতিতা ওই কিশোরী তার ওপর নির্যাতনের ঘটনায় কাজল মোল্যা ও তার পরিবারের সস্যদের বিচার দাবি করেছেন।

 

মন্তব্য করুন -


Top
error: Content is protected !!