বাংলাদেশ টাইমসঃ বিশ্বজিত দাসের ওপর হামলার ছবিতে চাপাতি হাতে থাকা যুবক রফিকুল ইসলাম শাকিলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আট দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক তাজুল ইসলাম রোববার শাকিলকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে মহানগর হাকিম এরফান উল্লাহ আট দিনের হেফাজত মঞ্জুর করেন।
বরিশাল ও বরগুনা পুলিশের সহায়তায় শনিবার সকালে বরগুনার বেতাগী থেকে শাকিলকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
এরপর তাকে সঙ্গে নিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেইটের উল্টো দিকের একটি ছোট দোকানের পাশে রাখা বাক্স থেকে উদ্ধার করা হয় বিশ্বজিতের ওপর হামলায় ব্যবহৃত চাপাতি।
হেফাজতের আবেদনে তাজুল ইসলাম বলেন, বিশ্বজিতকে কোপানোর কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে শাকিল। তবে ওই সময় তার সঙ্গে আর কে কে ছিল এবং কার উৎসাহ ও প্ররোচনায় তারা এমন একটি ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানার জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
কাঠগড়ায় দাঁড়ানো শাকিল এ সময় ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকায় তার কিছু বলার আছে কি না জানতে চান বিচারক।
জবাবে দুই দিকে মাথা নেড়ে ‘না’ জানান শাকিল। তার পক্ষে আদালতে কোনো আইনজীবীও ছিলেন না।
বিচারক এরফান উল্লাহ তাকে বলেন, কাঁদছেন কেন? আপনার পাপের প্রায়শ্চিত্তেই আপনার বাবা মারা গেছেন।
শাকিলের গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে তার শনিবার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন আনসার আলী। হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
শাকিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। বিশ্বজিত হত্যাকাণ্ডের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে বহিষ্কার করে।
গত ৯ ডিসেম্বর বিরোধী দলের অবরোধের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় দর্জি দোকানি বিশ্বজিতকে।
হামলাকারী হিসেবে যাদের ছবি গণমাধ্যমে এসেছে, তারা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে ওই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেসচিব আবুল কালাম আজাদ বৃহস্পতিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, বিশ্বজিতের ওপর হামলাকারীরা ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারী।
শাকিলদের পুরো পরিবার বিএনপি সমর্থক দাবি করে এই তথ্যের পক্ষে তার ভাই শহিদুল ইসলাম শাহিনের পটুয়াখালী পৌর যুবদলে যুগ্ম আহ্ববায়ক পদে থাকার তথ্যও তুলে ধরেন প্রেসসচিব।
বিশ্বজিত হত্যাকাণ্ডের দিন পুলিশ বাদি হয়ে একটি মামলা করে। এতে নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাত পরিচয়ের ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ মামলায় এ পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্নতারের তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া গেছে। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিবের বক্তব্য অনুযায়ী গ্রেপ্তারের সংখ্যা ১১।