খুলনা টেস্টের তৃতীয় দিনটি বাংলাদেশেকে উপহার দিয়েছে শুধুই হতাশা। ধীর হয়ে আসা উইকেটে সারাদিন ব্যাট করে ক্যারিবীয়রা আগের দিনের সঙ্গে যোগ করেছে আরও ৩২৩ রান। বিনিময় মূল্যও দিতে হয়েছে সামান্যই, উইকেট খুইয়েছে কেবল দুটি। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান আজও ভালো শুরু এনে দিয়েছেন দলকে। মধ্যাহ্ন বিরতির দুই বল আগে ফিরে যাওয়ার আগে ব্রাভো ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নিতে ভুলেননি। এর পর উইকেটে আসেন আগের টেস্টের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান শিবনারায়ণ চন্দরপল। চিরচেনা টেস্ট মেজাজে ব্যাট করে দিন শেষে অপরাজিত আছেন ১০৯ রানে। তাঁর সঙ্গী দিনেশ রামদিনের সংগ্রহ অপরাজিত ৪।
তবে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেওয়ার মূল কাজটা করেছেন মারলন স্যামুয়েলস। তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। প্রথম শ্রেণীর ক্যারিয়ারে আগের সর্বোচ্চ ২৫৭ রানের ইনিংসটিকে টপকে খেলেছেন ২৬০ রানের দ্যুতি ছড়ানো এক ইনিংস। এর মাঝেই গড়েছেন দুটি বড় জুটি। ব্রাভোর সাথে ৩২৬ রানের জুটিতে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ১৯৫৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে উইকস-ওরেলের ৩য় উইকেট জুটিতে করা ৩৩৮ রানের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। ৪র্থ উইকেটে চন্দরপলের সাথে যোগ করেন আরও ১৭৭ রান। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪র্থ উইকেট জুটিতে উইন্ডিজ রেকর্ড। তবে আগের দিনের মত কচ্ছপ গতি নয়, রান তুলেছেন ভালো গতিতেই। আগের দিন ক্যারিবীয়দের রান রেটটা শ্লথ করে দেওয়ায় তাঁর ভূমিকা ছিল। এদিন রান রেট বাড়ানোর দায়িত্বটা নিজের মনে করেই কিনা খেলেছেন স্ট্রোক ঝলমলে ইনিংস। তাতেই কিছুটা ভদ্রস্থ হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান রেট। আগের দিন সেঞ্চুরি করতে খেলেছিলেন ২২৭ বল, যাতে চার ১১ টি ও ছয় ১ টি। পরবর্তী ১০০ রান করতে খেলেছেন আর মাত্র ১০২ বল। এবার চার মেরেছেন ১৫ টি, ছক্কা হাঁকিয়েছেন আরও ২ টি। তবে এর পর আবারও হয়ে যান খোলস বন্দি।
অন্যদিকে আগের দিনের শেষ দুই সেশনের মত আজও সারাদিন মাথাকুটে মরেছেন স্বাগতিক বোলাররা। উইকেট থেকেও পাননি বাড়তি কোন সুবিধা। এই উইকেটে ব্যাটসম্যান ভুল না করলে উইকেট পাওয়া খুবই কঠিন। করণীয় তাই রান রেটের লাগাম টেনে ধরে ব্যাটসম্যানদের ভুল করতে প্রলুদ্ধ করা। কাজটি আগের দিন বেশ ভালোভাবে করতে পারলেও আজ কিছুটা আলগাই ছিল লাগামটা। তবে কাল কাজটা ভালোভাবে করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লিডটাকে আয়ত্তের মধ্যে রাখতেই চাইবেন টাইগাররা। কাজটা যে কঠিন তা ভালোভাবেই জানেন তাঁরা। খুলনা টেস্টের তৃতীয় দিনটা তাই ব্যর্থ হয়েছে টাইগার সমর্থকদের আশার পালে হাওয়া দিতে।