তিনি বলেন, “বিশ্বের বিবেকবান মানুষ, মানবাধিকার সংস্থা, দেশী-বিদেশী আইনবিদ এবং জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এই বিচার, ট্রাইব্যুনাল ও বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বরাবরই আপত্তি উত্থাপন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে এই বিচার গ্রহণযোগ্য নয় মর্মে সুস্পষ্ট মতামত ব্যক্ত করা হয়েছে। কিন্তু সরকার যেসব মতামত উপেক্ষা করে তাদের নির্দিষ্ট ছকেই বিচারকার্য পরিচালনা করে আসছে। এই বিচারটি কত ষড়যন্ত্রমূলক ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ণ তা স্কাইপ সংলাপের মাধ্যমে গোটা দুনিয়ার মানুষ জানতে পেরেছে। স্কাইপ সংলাপে কোন মামলার রায় আগে, কোনটির পরে, কোন সাক্ষী কী স্বাক্ষ্য দেবে এসব বিষয়ে সলাপরামর্শ করে মামলার কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে আব্দুল কাদের মোল্লার রায়ে। মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয় ১৭ জানুয়ারি। মাত্র ১৮ দিনের মাথায় রায় ঘোষণা একটি ষড়যন্ত্রের জ্বলন্ত প্রমাণ।”
বিবৃতিতে জামায়াত নেতা বলেন, “আদালতের পঠিত সংক্ষিপ্ত রায়ে দেখা গিয়েছে সরকারের বক্তব্যের যোগসাজশেই এই রায় নির্ধারণ করা হয়েছে। রায়ে জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনা মিথ্যা অভিযোগের সঙ্গে জামায়াতকে জড়ানোর মাধ্যমে ঘাদানিকদের বক্তব্যের প্রতিফলন ঘটেছে। সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বাস্তবায়নের জন্য আদালতের মাধ্যমে যে রায় ঘোষণা করেছেন দেশের জনগণ তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।”
রফিক খান বলেন, “মন্ত্রী রায়ের জন্য যে সময় নির্ধারণ করেছিলেন সে সময়ের মধ্যে রায় ঘোষণা ও মামলা পরিচালাকারী প্রসিকিউটরদের সঙ্গে নিয়ে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের রায়ের তারিখ ঘোষণা প্রমাণ করে এ রায় সরকারের নির্দেশে, সরকারের পরিকল্পনায়, সরকার নির্ধারিতভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে।”
তিনি দাবি করেন, দেশের জনগণ সরকার বেধে দেয়া ছকে পরিচালিত নীল নকশার বিচার মেনে নিতে পারে না। আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণ আব্দুল কাদের মোল্লাসহ সব নেতাকে মুক্ত করে আনবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, “এ রায় প্রত্যাখ্যান করার পাশাপাশি সরকারের ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত ও বিচারের নামে অবিচারের প্রতিবাদে আমাদের ঘোষিত গণতান্ত্রিক কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি পালিত হবে।”
জামায়াত নেতা বলেন, “আমরা সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ ও সুশীল সমাজসহ দেশের সর্বস্তরের মানুষকে বিচারের নামে অবিচারের বিরুদ্ধে আহুত এই হরতাল কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহযোগিতা এবং জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সব জনশক্তিকে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”