আজ || রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শিরোনাম :
  গোপালপুরে মাদরাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে গণশুনানি       ভূঞাপুর মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নতুন কমিটি       গোপালপুরে ১৮ বছর পর স্বনামে ফিরলো আব্দুস সালাম পিন্টু কলেজ       গোপালপুরে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত       ক্ষেতের আইল দিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে ভোগান্তিতে শিশু শিক্ষার্থীরা       গোপালপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কমিটি গঠন       গোপালপুরে জামায়াতে ইসলামীর পৌর শাখার কর্মী সম্মেলন       ইমনরা স্বাধীনতা এনে দিয়েছে: টাঙ্গাইল জেলা জামায়াত আমীর        গোপালপুরে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন       ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগকে এদেশের মানুষ মাথা তুলে দাড়াতে দিবেনা : সালাউদ্দীন আহমেদ    
 


শাশ্বতকে ছাপিয়ে গিয়ে

আবার বব বিশ্বাস। ‘কহানি ২’ নয়।  বিজ্ঞাপনে।                     সেই হাড় হিম করা ট্রেডমার্ক গলা এখানে “নমস্কার…  এক মিনিট” বলছে না অবশ্য। একটি ওয়েবসাইটের এই বিজ্ঞাপনে শাশ্বত  চট্টোপাধ্যায়কে দেখা যাচ্ছে নিজের ফ্ল্যাট ভাড়া দেওয়ার চেষ্টা করতে। বিজ্ঞাপনের  ছবিতে এটাই শাশ্বতর প্রথম অভিনয়। এবং অভিষেকেই অভিনেতা শাশ্বতকে ছাপিয়ে গেল অভিনীত  চরিত্র বব। কী বলছেন শাশ্বত? “এক জন অভিনেতার কাছে এর থেকে বড় প্রাপ্তি আর কীই বা হতে পারে?  ‘এক  আকাশের নীচে’ বা ‘রূপকথা’ ধারাবাহিকে  কাজ করার সময়েও অনেকে আমায় ‘আকাশ’ বা ‘ভাস্কর’  বলে  ডাকতেন।” কিন্তু বিজ্ঞাপন? তাও নিজের অভিনীত চরিত্রের বেশে?  শাশ্বতর  উত্তর, “আমি এর আগে সে ভাবে বিজ্ঞাপন করিনি। অবশ্যই ভাল লাগছে। কহানির  পরিচালক সুজয় ঘোষকে ধন্যবাদ।” ইউটিউবে বিজ্ঞাপনটির টিজারে শাশ্বতকে দেখা যাচ্ছিল সেই পুরনো ‘কহানি’র  মেজাজে। টিজারে রেখে দেওয়া হচ্ছিল প্রশ্ন, “হোয়াট ইজ বব  আপ টু?” প্রশ্নের মাধ্যমেই বাড়িয়ে তোলা হচ্ছিল আমজনতার ঔৎসুক্য। মূল  বিজ্ঞাপনে অবশ্য ‘বব বিশ্বাস’ নামের ব্যবহার নেই। বিজ্ঞাপনের লেখক এবং  ওই ক্যাম্পেনের কর্ণধার মুম্বইয়ের রঘু ভট্ট বললেন, “ওই  পোশাক-আশাক, চাহনি, বাচনভঙ্গি এতটাই জনপ্রিয় যে, শাশ্বত  চরিত্রের নাম বললেন কি না তাতে কিছু এসে যায় না। এক ঝলক দেখেই চরিত্রটাকে চিনতে  পারবেন।” ভারতীয় বিজ্ঞাপনে ফিল্মি চরিত্রের ব্যবহার আগেও দেখা গিয়েছে।  শোলে-র গব্বরকে নিয়ে অসংখ্য বিজ্ঞাপনী স্পুফ হয়েছে। বহু বার ব্যবহৃত হয়েছে,  ‘মোগাম্বো  খুশ হুয়া।’ মুন্নাভাই-সার্কিটের ‘বোলে তো’-কেও ব্যবহার  করা হয়েছে বিজ্ঞাপনে। বিজ্ঞাপন-বিশেষজ্ঞ  রাম রায়ের কথায়, “আইনের দিক থেকে কোনও বাধা না থাকলে বিজ্ঞাপনে ফিল্মি চরিত্রের  ব্যবহারে আপত্তির কিছু নেই। তবে বিজ্ঞাপন নির্মাতা যেন সেই চরিত্রের সৃষ্টির  কৃতিত্ব দাবি না করেন।” বিজ্ঞাপনে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন,  ‘ভূতের  ভবিষ্যত’ ছবির পরিচালক অনীক দত্ত বললেন, “ফিল্মি  চরিত্রের জনপ্রিয়তা তথা ব্র্যান্ড ভ্যালুকে কাজে লাগাতেই বিজ্ঞাপনে তাদের ব্যবহার  করা হয়। উত্তম-সুচিত্রার সপ্তপদী নিয়ে আমি নিজেই বিজ্ঞাপনী স্পুফ বানিয়েছি। ভূতের  ভবিষ্যতের কদলীবালাকেও একাধিক বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা হয়েছে।”   ‘কহানি’-র বব বিশ্বাসের ব্র্যান্ড ভ্যালু কিন্তু  তার অভিনবত্ব। একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার কর্ণধার শৌভিক মিশ্রর কথায়, “এই  রকম ইউনিক চরিত্র ভারতীয় সিনেমায় আগে চোখে পড়েনি।” শৌভিক জানান,  গল্প,  উপন্যাস  বা সিনেমা, যে কোনও ক্ষেত্রেই কিছু নির্দিষ্ট চরিত্র মনে থেকে যায়। সেই  চরিত্রগুলোই গল্পকে স্মরণীয় করে রাখে। তাই বিজ্ঞাপনেও সিনেমার কোনও জনপ্রিয় চরিত্র  থাকলে তাকে ব্যবহার করা হয়।                     বব-এর জনক ‘কহানি’-র পরিচালক  সুজয় ঘোষ বললেন, “আমরা একটা বিনয়ী বব চেয়েছিলাম। বব যেন হয় আমাদের সবার মতো।  আপাদমস্তক মধ্যবিত্ত একটা চেহারা। ভুঁড়ি আছে, অফিসে বসের  কাছে ঝাড় খায় এবং চাকরির রোজগারে যার সংসার চলে না।” কিন্তু যত যাই হোক, বব তো ভাড়াটে খুনি! তাকে  বিজ্ঞাপনে আনা কেন? বিজ্ঞাপনটির পরিচালক নরেন মূলতানির মতে, “এই  বিজ্ঞাপনে শাশ্বত বব নয়। ফ্ল্যাট ভাড়া দিতে চাওয়া এক সাধারণ মানুষ। ‘কহানি’র বব  খুনি হলেও তার সাথে আমজনতা একাত্মবোধ করতে পারে।”   ‘কহানি’ ছবিতে ববের চরিত্রটার স্থায়িত্ব ছিল বড়  জোর দশ মিনিট। “কিন্তু দর্শকরা ববের সম্পর্কে আরও জানতে চাইছিল। আমরা দর্শকদের  এই না মেটা খিদেটাকেই বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করতে চেয়েছি।” বিজ্ঞাপনের পরিচালক নরেন এবং লেখক রঘু দু’জনের  মুখেই শাশ্বতর অভিনয়ের অকুণ্ঠ প্রশংসা। দু’জনেই বললেন, “শাশ্বতর  দক্ষতা প্রশ্নাতীত। এমনকী অনেক দর্শক, যাঁরা ছবিটা দেখেননি তাঁরাও  বিজ্ঞাপনটা দেখে শাশ্বতর প্রতি আগ্রহী হবেন।” ‘কহানি’তে  ওই ছোট্ট একটা রোলেই ভারতের অগণিত সিনেমাপ্রেমীর মেরুদণ্ড দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বইয়ে  দিয়েছিলেন শাশ্বত। ছবি মুক্তি পাওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই ফেসবুকে ‘বব  বিশ্বাস’ পেজ-এ লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছিল ‘লাইক’।  সেই ববের বেশে বিজ্ঞাপনে অভিনয়-প্রস্তাব শুনে প্রথম কী মনে হয়েছিল? শাশ্বত’র  উত্তর, “ভাল তো লেগেইছিল। খানিকটা অবাকও হয়েছিলাম। ছবি মুক্তির এত দিন  পরেও চরিত্রটা এত জনপ্রিয়!”

মন্তব্য করুন -


Top
error: Content is protected !!