রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলা ও রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দৈনিক আমার দেশ ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সব নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার দাবিতে এ হরতালের ডাক দেয় বিএনপি।
হরতালে রংপুর বিভাগের ঠাকুরগাঁও শহরে সকালে বিক্ষোভ মিছিল বের করে নেতাকর্মীরা। এ সময় শহরের মোড়ে মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে তারা।
এদিকে ঠাকুরগাঁও মোড়ে আওয়ামী লীগ হরতাল বিরোধী মিছিল বের করলে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিলে হামলা চালায়। এ সময় দু’দল সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘন্টা ব্যাপি সংঘর্ষে দফায় দফায় ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া চলে। এ সময় উভয় পক্ষ লাটি শোঠা ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এঘটনায় ৪ গাড়ি ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে।
এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ অর্ধশতাধিক টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে বিএনপি কর্মীরা আওয়ামী লীগের অফিসে হামলা চালায়। বর্তমানে শহরে থমথমে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শহরের চৌরাস্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও জেলার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে রাজশাহীতে সকাল ৭টা থেকে শহরে খণ্ড খণ্ড মিছিল বের করে নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে শহরের সাহেববাজার মোড়েও নেতাকর্মীদের মিছিল বের করতে দেখা যায়।
মহনাগরীতে সকাল থেকেই পুলিশ সর্তক অবস্থায় নেয়ায় দুপুর ১২টা পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
হরতাল সমর্থনে মহানগরী মালোপাড়া এলাকা থেকে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু ও রাজশাহী জেলা বিএনপির সভাপতি নাদিম মোস্তফার নেতৃত্বে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
পরে রাজশাহী মহানগর বিএনপি নগরীর ভুবনমোহন পার্কে ও রাজশাহী জেলা বিএনপি সাহেববাজার মনিচত্বরে পৃথক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেছে।
সূত্র জানায়, রাজশাহী বিভাগের সব জেলায় হরতালে দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। কোথাও কোনো ভারী যানবাহন চলতে দেখা যায়নি। স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত বন্ধ রয়েছে। বাসস্ট্যান্ড থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। তবে শহরে রিকশা-অটোরিকশা চলতে দেখা গেছে।
সকাল-সন্ধ্যা হরতালকে ঘিরে রাজশাহীজুড়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়ে রাজপথে অবস্থান করছে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা। মহানগরের সাহেব বাজার, মণিচত্বর, সোনাদিঘীর মোড়, আলুপট্টি, কুমারপাড়া, গৌরহাঙ্গা রেলগেট, বিনোদপুর, তালাইমারী, ভদ্রা, কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বাস টার্মিনাল, লক্ষীপুর, কোর্ট, শালবাগান ও নওদাপাড়াসহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর এলাকায় বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
অন্যদিকে বগুড়ায় হরতালে সকাল ৮টায় মিছিল ছাড়া বিক্ষিপ্ত কোনো ঘটনা ঘটেনি। এদিকে জেলা শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশের উপস্থিতি ছিল জোরদার। বগুড়া শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে প্রায় ৪ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ হরতাল পালন করতে চাইলে তাদের বাধা দেয়া হবে না। তবে হরতালে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। কোনো প্রকার নাশকতা সহ্য করা হবে না।
উল্লেখ্য, গত ২০ জানুয়ারি রাজশাহী ও রংপুরে উল্লিখিত দাবিতে রংপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান মিনু এ হরতালের ডাক দেন। এ সময় রংপুর ও রাজশাহী বিভাগেরে সব জেলার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।