সম্প্রতি পশ্চিম সুন্দরবনে অবাধে পারশে পোনা নিধন অব্যাহত রয়েছে। পোনা নিধনকারিরা সুক্ষ ছিদ্রযুক্ত নেটজাল ব্যাবহার করে সুন্দরবন অভ্যান্তরের মৎস প্রজনন এলাকা বা নিষিদ্ধ বনাঞ্চল ও সুন্দরবনের বিভিন্ন নদ-নদীতে পোনা নিধন
অব্যাহত রেখেছে।
এক প্রজাতিরপোনা আহরন করতে তারা শতাধীক প্রজাতির জলজ সম্পদ নষ্ট করছে। ফলে সুন্দর বনের জলজ সম্পদ হুমকির মুখে পড়েছে। এভাবে অবাদেপোনা নিধন চলতে থাকলে বাংলাদেশের সামুদ্রিক মৎস সম্পদ কমে যাবে দেশে আমিষের ঘাটতি দেখা দেবে।
সুন্দরবন সংলগ্ন নিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, একশ্রেনীর মহাজনেরা টাকার নেশায় গরিব জেলেদের সংগ্রহ করে তাদেরকে হাজার হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে পোনা নিধনের জন্য সুন্দরবনে পাঠিয়েছে, গোন চুক্তিতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এতে সহযোগিতা করছে কতিপয় বনকর্মকর্তা কর্মচারীরা। তারা বনবিভাগের অফিসথেকে সাদা মাছের পারমিট নিয়ে অবাধে পোনা নিধন চালিয়ে যাচ্ছে। ক্ষুদ্রনেট দিয়ে ছাকনির মাধ্যমে পোনা আহরনের ফলে সুধু পারশে পোনা ধ্বংশ হচ্ছেনা সমুদ্রের হাজার হাজার প্রজাতির জলজ প্রানি ধ্বংশ হচ্ছে। তা ছাড়া পারশেপোনা অন্যান্য প্রজাতির পোনার চেয়ে নরম প্রকৃতির হওয়ায় নেট জাল থেকে অন্য পাত্রে রাখার সময়ের মধ্যে অর্ধেকের বেশি পোনা মারা যায়। যে কারনে প্রতিদিন অসংখ্য পোনা নির্বিচারে মেরে ফেলা হচ্ছে। এই মাছ বড় হলে হাজার হাজার মেট্রিক টন পারশে মাছ বাংলাদেশের মানুষের চাহিদা মিটায়ে বর্হির্বিশ্বে রপ্তানী করে দেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারতো। কিন্তু কতিপয় সার্থন্বেশীদের কারনে অচিরেই সুন্দরবনের জলজ সম্পদ বিলুপ্ত হবে এতে কোন সন্দেহ নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন জেলে জানান, সুন্দরবনের সবচেয়ে বেশি টাকা আয় হয় পারশে পোনা থেকে। ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস এ ৪ মাস পারশে পোনা প্রজনন মৌসুম এ ৪ মাসে এক এক মহাজন আমাদের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করে থাকেন।
দ্রুতগামী ট্রলারের মাধ্যমে প্রতিটি দলে ৮/১০ জনজেলে ২/৩ শ মিটার দৈঘ ৪০/৫০ মিটার প্রস্থ নেট জালের মাধ্যমে এক এক টানায় কয়েক মন বিভিন্ন প্রজাতির পোনা ধরে নষ্ট করছে। এভাবে ২০/২৫ টি দল প্রতিদিন পোনা নিধন অব্যাহত রেখেছে।
উর্দ্ধতন কর্তা ব্যাক্তিরা সুন্দরবনে যে কোন অভিযানে ঢুকলে তার আগে অসাধু বনকর্মচারিরা জেলেদের জানিয়ে দেয়। কিছুক্ষন জেলেরা বনের মধ্যে পালিয়ে থেকে অভিযান শেষ হলে আবারও পোনা ধরতে থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে পশ্চিম সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জের বানিয়াখালী ফরেষ্ট ষ্টেশন, কাশিয়াবাদ ষ্টেশন, সাতক্ষীরা রেঞ্জের কোবাদক ষ্টেশন থেকে সাদা মাছের পারমিট নিয়ে বনে প্রবেশ করে দোবাকি, নোটাবেকি, পাতকোষ্টা, নিলকোমল অভয় অরন্য, মরজদ নদী, সহ সুন্দরবন অভ্যান্তরে বিভিন্ন নদ-নদীতে পোনা আহরন করে একদিন পর পর ট্রলারযোগে আড়পাঙ্গাশিয়া নদী দিয়ে কোবাদক ষ্টেশনের সামনে দিয়ে শ্যামনগর উপজেলার ঝাপালী নামকবাজারে পারশে পোনা বিক্রি করে।
এছাড়া কয়রা, বেদকাশীর কাটকাটা বাজার চাদালী বাজার, সাতক্ষীরা জেলার, গাবুরা, পাতাখালী, পাখিমারাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রয় করে থাকে।
এককেজি পারশেপোনার মূল্য ২৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা।
এভাবে চলতে থাকলে সুন্দরবনে জলজও বনজ সম্পদ বিলুপ্তি হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক তৌফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি এর আগেও শুনেছি এব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপনেওয়া হবে।
খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মোঃ জহিরুল হক জানান, পোনা নিধন কারীদের ধরতে কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। বিশাল সুন্দরবণে অভিযান পরিচালনার সময় তারা আগে খবর পেয়ে যায় ফলে ব্যার্থ হতে হয়।
তবে খুব শিঘ্রই এ ব্যাপারে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে তিনি জানান।