আজ || রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫
শিরোনাম :
  অপহরনের ৭ ঘন্টার মধ্যে পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার হলো গোপালপুরের আসলাম       সেবা বন্ধ রেখে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করলো গোপালপুর নির্বাচন অফিস       হৃদয়কে শহীদি মর্যাদার দাবিতে গোপালপুরে মানববন্ধন       গোপালপুরে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন       কাকাতালীয়ের বয়ান       রমজান মাসে রোজা ও দান-সদকার ফজিলত       গোপালপুরে রমজানের পবিত্রতা রক্ষার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল       গোপালপুর পাবলিক ক্লাব ও গ্রন্থাগারের বার্ষিক বনভোজন অনুষ্ঠিত       গোপালপুরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত       লাইটহাউজ স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত    
 


বিকেলে শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা

শুক্রবার বিকেলে ঢাকার বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গণে শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা। মেলা আয়োজনের সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে বাংলা একাডেমী। শান্তিপূর্ণভাবে মেলা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থারও গ্রহণ করা হয়েছে।
এ মেলা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
একাডেমী প্রাঙ্গণে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় বইমেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন শেষে তিনি মেলা পরিদর্শন করবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ। স্বাগত ভাষণ দেবেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জমান খান। সভাপতিত্ব করবেন একাডেমীর সভাপতি প্রফেসর এমিরিটাস আনিসুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান এসব তথ্য জানান।
এ সময় আরো বক্তব্য দেন একাডেমীর সচিব আলতাফ হোসেন, পরিচালক ও মেলা কমিটির সদস্য সচিব শাহিদা খাতুন, মেলায় সহায়তাকারী ব্র্যাক ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামদুদুর রশীদ, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি স্টেপ মিডিয়ার মোস্তফা জাহিদ খান ও একাডেমীর উপ-পরিচালক মুর্শিদুদ্দিন আহমেদ।
মহাপরিচালক জানান, এবারের গ্রন্থমেলায় ২৭৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৪৬০টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ২৪৭টি প্রকাশনা সংস্থাকে ৪১৯ ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এরমধ্যে ১১৩টি প্রতিষ্ঠানকে এক ইউনিট, ৮১টি প্রতিষ্ঠানকে দুই ইউনিট করে এবং তিন ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৪৫টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে।
এছাড়া ২৭টি সরকারি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে ৪১টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এবার ৪৫টি লিটল ম্যাগ প্রতিষ্ঠানকে লিটল ম্যাগ কর্নারে জায়গা দেয়া হয়েছে। আটটি সেবা প্রতিষ্ঠানকে ১৯টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
মহাপরিচালক জানান, মেলায় যেসব প্রকাশক ও প্রকাশনা সংস্থা স্টল বরাদ্দ পায়নি, তাদের বই প্রদর্শন ও বিক্রি করা যাবে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের স্টলে।
গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমী প্রচলিত শতকরা ৩০ ভাগ কমিশনে এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান শতকরা ২৫ ভাগ কমিশনে বই বিক্রি করবে।
বাংলা একাডেমীর প্রকাশনা সংস্থা থেকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশত জন্য বার্ষিকী উপলক্ষে ১০টি প্রকাশনাসহ ৪২টি নতুন বই প্রকাশিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারের সহযোগিতায় এবারই প্রথমবারের মতো একুশের বইমেলা বারোয়ারী মেলা থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছে।”
এবার মেলা হবে শুধু প্রকাশক ও লেখকদের। বই ছাড়া মেলায় অন্যকিছু আর থাকবে না। এমনকি বিদেশী লেখকদের বই, নেট বা পাইরেটেড কোনো ধরনের বই আর স্থান পাবে না মেলায়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে প্রকাশকদের সঙ্গে বিদেশী লেখকদের চুক্তি রয়েছে এবং প্রকাশকরা বাংলাদেশ ব্যাংক মারফর নিয়মিত রয়্যালিটি প্রদান করে আসছে এবং সে তথ্যপত্র একাডেমীকে দেখাতে পারলে ওই সকল প্রকাশনা সংস্থা তাদের বিদেশী লেখকদের বই প্রকাশ ও বিক্রি করতে পারবে।
তিনি বলেন, মেলা শান্তিপূর্ণভাবে সফল করার জন্যে অন্যান্যবারের তুলনায় এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো কঠোর করা হয়েছে।
সিসিটিভি ক্যামেরা গতবারের থেকে বাড়িয়ে ৬৪টিতে উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়া র‌্যাব, পুলিশ, আনসার, গোয়েন্দা সংস্থাসহ যৌথভাবে একাডেমীর নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীবৃন্দও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে।
একাডেমীর ভেতরে মূল মেলা প্রাঙ্গণে প্রায় দেড়শত পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। দুটি প্রবেশগেটের দায়িত্বে থাকবে র‌্যাব। দোয়েল চত্বর ও টিএসসিতে দুটি পুলিশ বুথ স্থাপন করা হয়েছে। পুরো মেলাঙ্গনে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখতে বিভিন্ন সংস্থার গোয়েন্দা সদস্যও থাকবে।
মহাপরিচালক বলেন, এবারের মেলা প্রাঙ্গণ ভাষা শহীদদের নামে পাঁচটি চত্বরে বিন্যাস করা হয়েছে। চত্বরগুলো হচ্ছে- শহীদ সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত ও শফিউর চত্বর।
এ ছাড়া নজরুল মঞ্চের সামনে শিশুকর্নারে থাকবে শিশু-কিশোর বিষয়ক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। প্রতিবারের মতো এবারেও নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে নজরুল মঞ্চে।
প্রচার কার্যক্রমের জন্য তথ্যকেন্দ্র থাকবে বর্ধমান ভবনের পশ্চিমবেদিতে। মিডিয়া সেন্টার থাকবে তথ্যকেন্দ্রের উত্তর পাশে।
তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য জানার জন্য ফ্যাক্স-ই-মেইল সুবিধা থাকবে মিডিয়া সেন্টারে। ওয়্যাইম্যাক্স প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণকে ওয়াইফাই জোনে রূপান্তরিত করবে। এর ফলে মেলায় আগত ল্যাপটপ ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেটের ফ্রি সুবিধা পাবেন।
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। এ ছাড়া মেলাপ্রাঙ্গণ থেকে অধিকাংশ বেসরকারি টিভি চ্যানেল মেলার সংবাদ প্রতিদিন সরাসরি সম্প্রচার করবে। মেলার খবরাখবর নিয়ে আনন্দ আলো ‘বইমেলা প্রতিদিন’ নামে বুলেটিন প্রকাশ করবে। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকাও প্রতিদিন মেলার তথ্য প্রচার করবে।
মেলায় প্রবেশের জন্য পুষ্টিভবন এবং আণবিক শক্তি কমিশনের সামনে প্রবেশ পথ থাকবে। প্রতিদিন প্রবেশপথে দুটি আর্চওয়ে দিয়ে পরীক্ষা করে দর্শনার্থীদের প্রবেশ করানো হবে। মেলায় ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা থাকবে। এবারও মেলা এলাকাটি ধূমপানমুক্ত থাকবে।
মহাপরিচালক আরো জানান, এবার মেলা উৎসর্গ করা হয়েছে জনপ্রিয় প্রয়াত লেখক হুমায়ূন আহমেদকে।
২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে সেমিনার।
এতে হুমায়ুন আহমেদসহ বিশিষ্ট বাঙালীদের জন্মশত ও সার্ধশতবর্ষ এবং বাংলার বিস্মৃতপ্রায় ও সমকালীন মনীষার জীবন ও কর্ম নিয়ে থাকবে আলোচনা সভা।
মাসব্যাপী প্রতিদিন সন্ধ্যায় মূলমঞ্চে থাকবে বাঙালি ঐতিহ্য ও নিজম্ব সংস্কৃতির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
মেলায় অংশ্রগহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ২০১২ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগতমান বিচারে সেরা গ্রন্থের জন্য প্রকাশককে ‘ চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার’ এবং গ্রন্থমেলায় সর্বাধিক সংখ্যক মানসম্মত বই প্রকাশের জন্য শ্রেষ্ঠ তিনটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ‘ মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেয়া হবে।
মেলার সময় : গ্রন্থমেলা প্রতিদিন বিকলে ৩ টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ছুটির দিন বেলা ১১ টা থেকে রাত ৯টা এবং ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল আটটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত বইমেলা চলবে। সূত্র: বাসস
মন্তব্য করুন -


Top
error: Content is protected !!