চীনা কংগ্রেসের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত নতুন নেতৃত্বকে চীনের কম্যুনিস্ট পার্টি (সিপিসি) পরিচিত করিয়ে দেবে বিশ্ববাসীর কাছে আর নেতৃত্বে এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে চীনের পররাষ্ট্রনীতিতে কী পরিবর্তন আসে তা দেখার জন্য সারা বিশ্বের মতো অপেক্ষায় রয়েছেন বাংলাদেশের বিশ্লেষকরাও।
যদিও বিশ্লেষকরা মনে করেন নেতৃত্বে এই পরিবর্তন ঢাকার সঙ্গে বেইজিং এর সম্পর্কে তেমন কোন প্রভাব ফেলবে না।
তারা মনে করেন সামনের দিনগুলোতে অর্থনৈতিক দিকটিই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রধান বিবেচ্য বিষয় হবে।
বিবিসিকে তেমনটাই বলছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ।
“চীনের রাজনৈতিক দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিকে এক খাঁচায় বন্দী করে না, ফলে নেতৃত্বের পরিবর্তন বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোন প্রভাব ফেলবে না। বরং অর্থনৈতিক দিকটিই হবে মূল বিবেচ্য বিষয়“
"বাংলাদেশের জন্য অর্থনৈতিক দিকটিই হবে মূল বিবেচ্য বিষয়। "
ইমতিয়াজ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
অন্যদিকে, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ক্রমাগত আঞ্চলিক বাণিজ্য বৃদ্ধির চেষ্টা চীনের কাছে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। একই সঙ্গে, কৌশলগত দিক দিয়ে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও বঙ্গোপসাগরে চীন তার উপস্থিতি বাড়াতে চাইছে।
চীনের এ ধরনের পদক্ষেপ বাংলাদেশে চীনের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়াবে বলে মনে করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমান।
“যদিও বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য ঘাটতি অনেক, তা সত্ত্বেও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে অর্থনীতি ও বাণিজ্যই হবে মূল চালিকাশক্তি। এর সঙ্গে পানি ব্যবস্থাপনা, নবায়নযোগ্য শক্তি, যোগাযোগ, বিনিয়োগ, এবং বাংলাদেশী বন্দরগুলোর সামর্থ বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও এ সহযোগিতা সম্প্রসারিত হতে পারে“।
"যদিও বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য ঘাটতি অনেক, তা সত্ত্বেও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে অর্থনীতি ও বাণিজ্যই হবে মূল চালিকাশক্তি। "
মুস্তাফিজুর রহমান, সিপিডি
সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কোন্নয়নের আভাসও দেখা যাচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লষকরা।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে গত জুন মাসে বাংলাদেশ সফর করেন চীনের উপরাষ্ট্রপতি এবং সম্ভাব্য রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং।
অন্যদিকে, গেল অক্টোবরে বাংলাদেশ সফর করেন চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য লি চ্যাংচুন। সেসময় তিনি বলেছিলেন যে তাঁর দেশ বাংলাদেশের কৃষি, শক্তি এবং অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াতে চায়।
বাংলাদেশ তার আমদানীর সবচেয়ে বড় অংশটি করে চীন থেকে।
প্রধান আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে টেক্সটাইল, যন্ত্রপাতি ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি, সার, টায়ার, লৌহ ও ইস্পাত, সয়াবিন তেল ও পাম অয়েল, এবং গম।
অন্যদিকে, চীন বাংলাদেশ থেকে চামড়া, পাট ও পাটজাত পণ্য, চা, তৈরি পোশাক এবং মৎস জাতীয় পণ্য আমদানি করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী ২০১২ সালের জুলাই মাসে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বানিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।[ বিবিসি ]
সম্পাদক : অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন | নির্বাহী সম্পাদক : কে এম মিঠু
প্রকাশক কার্যালয় : বেবি ল্যান্ড, বাজার রোড গোপালপুর, টাঙ্গাইল -১৯৯০, বাংলাদেশ।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত - ২০১৯-২০২৩