এ ঘটনার প্রতিবাদে জামায়াত শনিবার বগুড়ায় সকাল সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে। শহরে পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত র্যা ব পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জামায়াতে ইসলামীর হরতাল চলাকালে দুপুরে ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কর্মীরা অর্ধশতাধিক মটর সাইকেলনিয়ে শহরে মহড়া দিতে থাকে। এই মহড়া থেকে শহরের ফুলবাড়ীতে শিবিরের আজিজুল হক কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি আবু রুহানী মারা যায়। মহড়াকারীরা শহরে শাবগ্রাম এলাকায় গিয়ে বগুড়া পৌরসভার ২০ নং ওয়ার্ড জামায়াতের কর্মী মিজানের দোকানে হামলা চালিয়ে তাকে খুন করে।
আওয়ামী লীগের সশস্ত্র হামলায় জামায়াত শিবিরের দুই কর্মী নিহতের প্রতিবাদে বিকাল সাড়ে চারটায় বের করা জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের হামলা ও গুলি বোমা টিয়ারশেলে বগুড়া শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। শহরের বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে জামায়াত শিবিরের সংঘর্ষ চলে রাত সাড়ে সাতটা পর্যন্ত । এ সময় পুলিশের শটগানের গুলি ও টিয়ারশেলে জামায়াত শিবিরের শতাধিত কর্মী আহত হন।
পুলিশ শহরে জামায়াত শিবিরের মিছিল ছত্রভঙ্গ করার পর শহরের জামিল নগরে ছাত্রবাসে গিয়ে নির্বিচারে গুলি করতে থাকে। সেখানে শিবিরের নয়জন গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের হাসপাতালে নিলে শিবির কর্মী শরিফ আলামীন ও আবদুল্লাহ নামে আরো দুইজন মারা যায়। এ সময় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান হাসপাতালে নিহত ও আহতদের আনতে যাওয়া জামায়াত শিবিরের ৫০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
চারজন নিহত, শতাধিক আহত এবং ৫০ জনকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে জামায়াত শুক্রবার বিক্ষোভ ও শনিবার বগুড়ায় সকাল সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে। এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে শহরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
বিকাল সাড়ে চারটায় পৌরপার্ক থেকে জামায়াতের মিছিলটি সাতমাথার দিকে আসতে থাকলে পুলিশ নির্বিচারে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এরপরও মিছিল অগ্রসর হয়ে শহরের সাতমাথায় এলে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড গুলি ও দুই শতাধিক টিয়ারশেল ছোড়ে। এ সময় পুলিশের বেপরোয় রাবার বুলেট, টিয়ারশেলে কমপক্ষে ১০০ কর্মী আহত হয়েছে বলে দলীয় সুত্র জানিয়েছে।
এ ঘটনার পর থেকে বগুড়া শহর জুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সবখানে থমথমে অবস্থা ও জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাস্তাঘাট জনশূন্য হয়ে পড়েছে।
শহর জামায়াতের সেক্রেটারি মাজেদুর রহমান জুয়েল জানান, চার কর্মীকে খুন ও মিছিলে পুলিশের হামলার প্রতিবাদে শুক্র ও শনিবার দুই দিনের কর্মসূ ঘোষণা করা হয়েছে।
শুক্রবার বিক্ষোভ ও দোয়া দিবস এবং শনিবার বগুড়ায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকা হয়েছে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক পিপিএম বলেছেন, শহরের পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।