থ্রিজি লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রতিবন্ধকতা থেকে রেহাই পেলো দেশের মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো। আর এই সুযোগ করে দিতে থ্রি-জি লাইসেন্সের নিলামে প্রতি পাঁচ মেগাহার্টজ তরঙ্গের স্লট নির্ধারণ করছে মন্ত্রণালয়। আর একটি প্রতিষ্ঠান সর্বাধিক দু’স্লট অর্থাৎ ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বরাদ্দ নিতে পারবে। এর ফলে দেশের সব সেলফোন অপারেটরেরই নিলামে অংশ নেয়ার ও পরবর্তীতে লাইসেন্স পাওয়ারও সুযোগ তৈরি হলো।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার থ্রি-জি লাইসেন্সিং নীতিমালার বিষয়ে মোবাইলফোন অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠক করে মন্ত্রণালয়।
বৈঠকে প্রাপ্ত বিভিন্ন মতামত যাচাই-বাছাই শেষে নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আবুবকর সিদ্দিক।
তিনি জানান, আগামী ৮-১০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত নীতিমালা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কাছে পাঠাবে মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর এ নীতিমালা অনুযায়ী থ্রি-জি প্রযুক্তির সেবা দিতে নিলামে দেবে বিটিআরসি।
এর আগে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ১০ মেগাহার্টজ করে তরঙ্গ বরাদ্দ দেয়ার প্রস্তাব করেছিল বিটিআরসি। পরবর্তীতে গ্রাহক সংখ্যায় ছোট অপারেটররা এটি কমিয়ে পাঁচ মেগাহার্টজ করার প্রস্তাব দেয়। থ্রি-জি নিলামের ক্ষেত্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও এ অনুযায়ী তরঙ্গ বরাদ্দের উদাহরণ রয়েছে। এসব বিবেচনায় নিয়ে বিটিআরসিও আগের অবস্থান থেকে সরে আসে।
এ প্রসঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আবু বকর সিদ্দিক বলেন, “নীতিমালার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের মতামত নেয়া হয়েছে। মেগাহার্টজ প্রতি তরঙ্গের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।”
তিনি জানান, ন্যূনতম পাঁচ মেগাহার্টজ করে তরঙ্গ বরাদ্দ নিতে পারবে অপারেটররা। আর সর্বোচ্চ ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বরাদ্দ নিতে পারবে একটি অপারেটর। তবে পরবর্তীতে উদ্বৃত্ত থাকা সাপেক্ষে এটি বাড়ানো হতে পারে। এছাড়া নতুন এক বা একাধিক অপারেটর এ লাইসেন্স নিতে পারবে।
থ্রি-জি লাইসেন্সিং নিলামে অংশগ্রহণের জন্য প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের ন্যূনতম দর (বিড মানি) দুই কোটি মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর আগে খসড়া নীতিমালায় প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের ন্যূনতম দর (বিড মানি) তিন কোটি মার্কিন ডলার রাখা হয়েছিল।
জানা গেছে, দেশের শীর্ষ অপারেটর গ্রামীণফোন ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বরাদ্দ নিতে আগ্রহী। বৈঠকে এ বিষয়ে নিজেদের আগ্রহের কথা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গ্রাহকসংখ্যার বিবেচনায় উন্নত সেবা দিতে গ্রামীণফোন এ তরঙ্গ বরাদ্দ নিতে আগ্রহী বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ মার্চ থ্রি-জির খসড়া নীতিমালা অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেয় বিটিআরসি। খসড়া নীতিমালাতে থ্রি-জি সেবার লাইসেন্সের প্রদানের একটি প্রাথমিক রূপরেখাও প্রস্তাব করা হয়। গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর থ্রি-জি নিলামের তারিখ প্রস্তাব করা হয়েছিল।
থ্রি-জি’র জন্য ২১১০ মেগাহার্টজ থেকে ২১৬০ মেগাহার্টজের মধ্যে মোট ৫০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বরাদ্দ দেয়া হবে নিলামের মাধ্যমে। অতিরিক্ত ১০ মেগাহার্টজ রাখা হয়েছে টেলিটকের জন্য। তবে টেলিটক চাইলে নিলামে অংশগ্রহণ করতে পারবে।