আজ || বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শিরোনাম :
  গোপালপুরে মাদরাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে গণশুনানি       ভূঞাপুর মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নতুন কমিটি       গোপালপুরে ১৮ বছর পর স্বনামে ফিরলো আব্দুস সালাম পিন্টু কলেজ       গোপালপুরে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত       ক্ষেতের আইল দিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে ভোগান্তিতে শিশু শিক্ষার্থীরা       গোপালপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কমিটি গঠন       গোপালপুরে জামায়াতে ইসলামীর পৌর শাখার কর্মী সম্মেলন       ইমনরা স্বাধীনতা এনে দিয়েছে: টাঙ্গাইল জেলা জামায়াত আমীর        গোপালপুরে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন       ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগকে এদেশের মানুষ মাথা তুলে দাড়াতে দিবেনা : সালাউদ্দীন আহমেদ    
 


সেচ ব্যবস্থায় হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে বিদ্যুৎ সঙ্কট

 বিদ্যুৎ সঙ্কটে হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে দেশের সেচ ব্যবস্থা। ইতোমধ্যে দেশে সেচ মৌসুম শুরু হয়েছে। ভরা মৌসুমে সেচের কারণে বাড়তি প্রায় ১ হাজার ৭শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লাগবে। দেশে তখন বিদ্যুৎতের সর্বোচ্চ চাহিদা ৭ হাজার ১শ’ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে গেলেও এর বিপরীতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা সাড়ে ৫ হাজার মেগাওয়াট। এর মধ্যে লোডশেডিং রয়েছে ১ হাজার ৬শ’ মেগাওয়াট। এ পরিস্থিতিতে সেচ মৌসুমজুড়ে দেশে নীরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন ধরে রাখা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে শুরু হয়েছে কৃষি সেচ মৌসুম। ফলে বাড়ছে বিদ্যুতের চাহিদাও। বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদা মেটাতে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ওপর নির্ভরতা বাড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই। এ কারণে সরকারকে তেলনির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে উচ্চ ভর্তুকির অতিরিক্ত জ্বালানি তেল সরবরাহ করতে হচ্ছে। ফলে বেড়ে যাচ্ছে পিডিবির ভর্তুকের পরিমাণও। এ পরিস্থিতিতে বাড়তি ভর্তুকি নিয়ে চিন্তিত পিডিবি কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে ভর্তুকি বাড়ানোসহ বিতরণ সংস্থাগুলোর লোকসান কাটাতে প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তা চেয়ে খুব শিগগিরই বিদ্যুৎ বিভাগ অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে।

সূত্র জানায়, দেশে কর্মরত তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো সারাদিনে প্রায় ১৩ ঘণ্টা চালানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে গত সেপ্টেম্বরে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু এ গতিতে ওসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র চললে কোনোভাবেই সেচ ব্যবস্থায় নীরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব নয়। কারণ সেচের কারণে যে বাড়তি ১ হাজার ৮শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন, এ হারে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালালে তা পূরণ তো দূরের কথা, ধারে কাছেই যেতে পারবে না। তাছাড়া রেন্টাল এবং কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর বেশিরভাগই পুরনো হয়ে পড়েছে। সেগুলো মাত্র ৫৩ শতাংশ প্লান্ট ফ্যাক্টরেও চালু রাখা সম্ভব হবে না। ত্রুটির কবলে পড়ে অনেক কেন্দ্রই বন্ধ বা উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পিডিবির হিসাবে বর্তমানে বিদ্যুৎ চাহিদা ৫ হাজার ২৫০ মেগাওয়াট। আর গড় উৎপাদন হয় ৪ হাজার ৭শ’ মেগাওয়াট। এতে গড় ঘাটতি থাকে সাড়ে ৫শ’ মেগাওয়াট। কিন্তু বেসরকারি হিসাবে দেশে বিদ্যুৎ চাহিদা প্রায় ৬ হাজা মেগাওয়াট। ঘাটতির পরিমাণ ১৩শ’ মেগাওয়াট। এর সাথে ভরা সেচ মৌসুমে বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদা দাঁড়াবে আরো প্রায় ১৭শ’ মেগাওয়াট। কিন্তু তখন বিদ্যুৎ উৎপাদন সাড়ে ৫ হাজার মেগাওয়াট থাকলেও লোডশেডিং হবে ১ হাজার ৬শ’ মেগাওয়াট। এ পরিস্থিতিতে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৫ হাজার মেগাওয়াটে সীমাবদ্ধ থাকলেও লোডশেডিং ২ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, সেচ মৌসুমের অতিরিক্ত বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে যে বাড়তি ভর্তুকির প্রযোজন তা পিডিবির পক্ষে যোগান দেয়া সম্ভব নয়। কারণ গত বাজেটের সময় সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত উন্নয়নে পথনকশা : দ্বিতীয় হালচিত্রে ৬ হাজার ৪শ’ কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়ার কথা থাকলেও পরবর্তীতে তা কমিয়ে আনে। ফলে বিইআরসি গত সেপ্টেম্বর মাসে অধিক হারে খুচরা ও পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ায়। তখন বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে বার্ষিক ভর্তুকির ৩ হাজার ৮শ’ কোটি ধরে পাইকারি মূল্য বাড়ানো হয়। এর মধ্যে গত ৩ জানুয়ারি রাতে ডিজেলসহ প্রধান ৪ জ্বালানি তেলের দামও বাড়ানো হয়েছে। তবে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি কমাতে ফার্নেস অয়েলের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়। কিন্তু তারপরও ডিজেলনির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রেগুলোর উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। সেসাথে ফার্নেস অয়েলনির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বাড়াতে গেলে সেখানেও পিডিবির ভর্তুকির পরিমাণও বাড়বে। এদিকে গত ১ মাস আগে থেকেই বিদ্যুৎ খাতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকার তেল সরবরাহ করা হচ্ছে। সম্প্রতি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে সাড়ে ১৩ কোটি টাকারও বেশি তেল সরবরাহ করা হয়েছে। শীত কমে যাওয়ার পাশাপাশি ভরা সেচ মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদার কথা বিবেচনা করেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে জ্বালানি তেল সরবরাহ অব্যাহত রাখা হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে পর্যায়ক্রমে এ সরবরাহের পরিমাণ আরো বাড়ানো হবে। এভাবে আগামী মার্চ-এপ্রিলে প্রতিদিন ৩২ কোটি টাকার পর্যন্ত জ্বালানি তেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ করা হবে।  এ প্রসঙ্গে পিডিবির চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহাব খান সাংবাদিকদের জানান, সেচকাজে বিদ্যুৎ সরবরাহে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এজন্য প্রয়োজনে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে জ্বালানি তেলের সরবরাহ আরো বাড়ানো হবে।

মন্তব্য করুন -


Top
error: Content is protected !!