চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল বাজারে জামায়াত-শিবির কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ১০ পুলিশসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার দুপুরে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা অতর্কিতভাবে পুলিশের উপর হামলার পর এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে কমপক্ষে অর্ধশত রাউন্ড রাবার বুলেট ছুঁড়তে হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে উপজেলা জামায়াতের
আমির জহিরুল ইসলামকে আটক করেছে। এছাড়া পুলিশ জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, `জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা প্রথম দফায় পুলিশের উপর হামলার পর রাবার বুলেট ছুঁড়ে তাদের সরিয়ে দেয়া হয়। এরপর তারা আবারও সংঘবদ্ধ হয়ে চাম্বল বাজারে অবস্থান নিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। আমরা নগরী থেকে অতিরিক্ত ফোর্স পাঠানোর পর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।`
পুলিশ সুপার জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নগরী থেকে দু`শ অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য বাঁশখালীতে পাঠানো হয়েছে। তাদের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে অবস্থান করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে পুলিশ ছাড়াও এক`শ র্যাব সদস্য ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বেলা ১২টার দিকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত আটক জামায়াত নেতাদের মুক্তির দাবিতে বাঁশখালীর চাম্বল বাজারে আকস্মিকভাবে মিছিল বের করে জামায়াত-শিবির। এসময় পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া শুরু করেন।
খবর পেয়ে থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এসময় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা আকস্মিকভাবে পুলিশের উপর হামলা শুরু করে। পুলিশও রাবার বুলেট ছুঁড়ে হামলার জবাব দেয়। এর মাঝে জামায়াত-শিবির তাদের একজন কর্মী নিহতের খবর প্রচার করে দেয়। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এরপর জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা বাজারের একপাশে অবস্থান নিয়ে পুলিশের উপর ইট,পাটকেল ছুঁড়তে শুরু করে। দফায় দফায় সংঘর্ষের পর অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা পিছু হটে পালিয়ে যায়।
হামলায় আহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে দু`জনসহ মোট ৪ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দু`পুলিশ সদস্য হলেন, এস আই আতাউর রহমান এবং কনস্টেবল আব্দুল কাদের।
আহত বাকি পুলিশ সদস্যদের মধ্যে আছেন, এস আই নুরুল আলম, এএসআই গোপি নাথ এবং কনস্টেবল আবুল কাশেম, আহাবুল, আব্দুস ছাত্তার ও আব্দুল হালিম। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, `পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর আমরা বিভিন্ন স্থানে রেইড করা শুরু করেছি। পুলিশের উপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলবে।