ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সোমবার ভোর ৬টা থেকে ঘিরে রেখেছে বিপুলসংখ্যক পুলিশ। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের প্রবেশ ঠেকাতে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব সদস্যরাও বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান নিয়েছেন।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহবাগ, হাইকোর্ট, চানখারপুল, নীলক্ষেত, পলাশী ও বকশিবাজার এলাকার প্রবেশ পথে অবস্থান নিয়ে সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। প্রায় তিন শতাধিক ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী মধুর কেন্টিনে লাঠিসোঠা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছেন।
ঢাবি'র এক ছাত্র নাম না প্রকাশ করা শর্তে জানিয়েছেন, শহীদুল্লাহ হলের ছাত্রদল নেতা রয়েলকে মারধর করেছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ছাত্রদলকর্মী খোকনসহ পাঁচ ছাত্রদল কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এনেক্স ভবনের সামনে চারটি হাতবোমা বিস্ফোরিত হয়েছে।
সোমবার ছাত্রদলের কর্মীরা মধুর কেন্টিনে যাবেন এই খবর জেনেই রোববার রাতে আবাসিক হলগুলোতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তারা রাতেই হলগুলোতে ছাত্রদল বিরোধী বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় তারা বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কটাক্ষমূলক স্লোগান দেন।
সোমবার ভোর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথগুলোতে ও মধুর কেন্টিন, কলাভবনের সামনে লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। এ সময় কয়েকজনকে আগ্নেয়াস্ত্র বহন করতেও দেখা যায় বলে জানা গেছে।
ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি সাদিউল কবীর নীরব জানিয়েছেন, তিনি সকালে ক্যাম্পাসে তিন শতাধিক পুলিশ, অর্ধশতাধিক র্যাব সদস্য ছাড়াও সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে অবস্থান নিতে দেখেছেন।
নীরব দাবি করেছেন, ‘ছাত্রদলের কোনো কর্মীকে দেখলেই পুলিশ তাড়া করছে। ছাত্রলীগ কর্মীরা চড়াও হয়েছে। এ কারণে সকালের দিকে কোনো ছাত্রদলকর্মীই ক্লাসে যেতে পারেননি।’
ক্যাম্পাসের উত্তেজনাকর পরিস্থিতির ব্যাপারে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ বলেন, ‘ছাত্রদল যদি বহিরাগতদের নিয়ে এসে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির করতে চায়, তা প্রতিহত করা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আমজাদ আলী জানান, ‘ছাত্রদল কর্মীদের ক্যাম্পাসে আসার খবর জেনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছেও তিনি দাবি করেন।
প্রসঙ্গত, সরকারি দল আওয়ামী সমর্থিত ছাত্রলীগের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিরোধী দল বিএনপি সমর্থিত ছাত্রদল কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়টির আবাসিক হলে অবস্থান, ক্যাম্পাসে যাতায়াত ও মিছিল-সমাবেশ করতে পারছে না।
গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নতুন কমিটি গঠিত হলে ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসলে কয়েকজন নেতা-কর্মী ছাত্রলীগের হামলার শিকার হন।
তবে নতুন বছরে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়লে উভয় সংগঠনের বৈরিতা অবসানের সম্ভাবনা তৈরি হয়। ছাত্রলীগের বাধা ছাড়াই গত ২০ জানুয়ারি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৭৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে ছাত্র ছাত্রদল।
[বাংলাদেশটাইমস.নেট/রঞ্জিত সরকার/ঢাকা]
সম্পাদক : অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন | নির্বাহী সম্পাদক : কে এম মিঠু
প্রকাশক কার্যালয় : বেবি ল্যান্ড, বাজার রোড গোপালপুর, টাঙ্গাইল -১৯৯০, বাংলাদেশ।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত - ২০১৯-২০২৩