রোববার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর, সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন এবং বিচারপতি আনোয়ারুল হকের উপস্থিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় রাজ্জাক ট্রাইব্যুনালে বলেন, মাওলানা সাঈদী তিনবার অবিচারের শিকার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ১৬ জন সাক্ষীর জবানবন্দী তাদের অনুপস্থিতিতে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণের মধ্য দিয়ে তিনি প্রথম অবিচারের শিকার হয়েছেন।
‘এরপর আমরা ১৫ সাক্ষীর বিষয়ে সেফ হাউজের সমস্ত ডকুমেন্ট হাজির করে দেখিয়েছি যে, এসব সাক্ষীদের অনেকে রাষ্ট্রপক্ষের হেফাজতে ঢাকায় ছিল। তাদেরকে ইচ্ছা করে রাষ্ট্রপক্ষ ট্রাইব্যুনালে হাজির করেনি। কিন্তু তারপরেও ১৯ এর ২ ধারায় গৃহীত তাদের জবানবন্দী বাতিল করা হয়নি। এর মাধ্যমে তিনি দ্বিতীয়বার অবিচারের শিকার হয়েছেন’ যোগ করেন তিনি।
রাজ্জাক বলেন, ‘এরপর বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের স্কাইপি কথোপকথন প্রকাশের পর আমরা তা ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুনরায় বিচার দাবি করেছি। কিন্তু আবেদন গ্রহণ না করে তার প্রতি তৃতীয়বার অবিচার করা হয়েছে।’
‘আশা করছি, চতুর্থবার তিনি ন্যায়বিচার পাবেন’ যোগ করেন আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক।
স্কাইপি কেলেঙ্কারির জের ধরে ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের পদত্যাগের পর ট্রাইব্যুনাল-১ এ নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগের প্রেক্ষাপটে মাওলানা সাঈদীর মামলায় পুনরায় পাঁচ দিন শুনানির জন্য ধার্য করে ট্রাইব্যুনাল।
আসামিপক্ষের জন্য বরাদ্দ করা নির্ধারিত তিন দিন পার হয়ে গেলেও তাদের যুক্তি পেশ শেষ না হওয়ায় তা অব্যাহত রয়েছে।
মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা ও ধর্ষণসহ যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরোধিতা করে আইনি যুক্তি উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক।
মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ অভিযোগের ধারে কাছেও নেই মাওলানা সাঈদী। রাষ্ট্রপক্ষ খুব হালকাভাবে নিয়েছেন গণহত্যার মতো মারাত্মক একটি অভিযোগকে।’
‘ইচ্ছা হল আর তাই বসিয়ে দেয়া হয়েছে গণহত্যার অভিযোগ। গণহত্যার যেসব উপাদান এবং সংজ্ঞা রয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ তার কোনো কিছুরই ধার ধারেননি মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনা বিষয়ে’ বলেন রাজ্জাক।
ট্রাইব্যুনাল ব্যারিস্টার রাজ্জাককে আজকের মধ্যে তার যুক্তি উপস্থাপন শেষ করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তিনি বলেছেন, আগামীকাল দুপুরের মধ্যে তিনি শেষ করতে পারবেন।
নিয়ম অনুযায়ী এরপর রাষ্ট্রপক্ষ এক ঘণ্টা সময় পাবে জবাব দেয়ার জন্য। মামলায় যুক্তি উপস্থাপন শেষ করার মধ্য দিয়ে মামলার বিচার শেষ হয়ে যায় এবং এরপর মামলার রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জানুয়ারি থেকে সাঈদীর মামলায় পুনরায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সম্পন্ন হলে এ মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণার দিন ধার্য করবে ট্রাইব্যুনাল