তিনি বলেন, ‘আমি যখন নবম শ্রেণীতে পড়ি, তখন থেকেই শুরু। হঠাৎ করেই আমি পর্নোগ্রাফির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ি। একদিন বন্ধুরা আমার জন্য একটি মেয়ের ব্যবস্থা করে।’
‘সেই থেকে শুরু। যখন আমার বয়স ৩৫, তখন আমি প্রায় সাড়ে ছয় হাজার নারীর সাথে চ্যাট করেছি। আমি অনলাইনে আমার নাম্বারটা ছড়িয়ে দিই এবং একসময় এতে আসক্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু যখন পুরুষের সাথে জড়িয়ে যাই, তখন নিজেকে মানসিকভাবে নির্যাতিত অনুভব করি এবং তা থেকে সরে আসতে চাই’ যোগ করেন নির্মল।
এভাবে শুরু নির্মলের; যৌন আসক্ত হয়ে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরে বেড়ানো। মোবাইলসহ নানা উপায়ে এই জীবনের সাথে জড়িয়ে যাওয়া, যে নির্মল আগে কখনোই এ রকম ছিল না।
যৌন আসক্তি সংসার ভেঙে দিতে পারে; অথচ যা ভারতে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। রাজনীতিক, অভিনয় তারকা, ডাক্তার ও শিক্ষার্থী সবাই এর শিকার। তবে এটিকে রোগ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে চিকিৎসা দেয়ার মতো প্রতিষ্ঠান দেশে তেমন নেই।
ভারতের মতো দেশে নারীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেকটাই দুর্বল, যেখানে এ ধরনের যৌন আসক্ত রোগী ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। এরা একসময় যৌন শিকারিতে পরিণত হতে পারে। এমনিতেই দিল্লিতে ২০১২ সালে ধর্ষণের হার ২৪ ভাগ বেড়েছে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক স্টিভেন পিনকার সম্প্রতি টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানান, ‘সাধারণত, পুরুষরা নারীদের আনুকুল্য লাভের চেষ্টা করে এবং তাদের প্রলুব্ধ করে। কিন্তু তা মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে যৌন হয়রানি এবং ধর্ষণে রূপ নেয়।’
প্রতি ২০ মিনিটে ধর্ষণ
ভারতে ধর্ষণের হার উদ্বেগজনক পর্যায়ে রয়েছে। দেশটিতে প্রতি ২০ মিনিটে একজন নারী ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। রাজধানী নয়াদিল্লির ধর্ষণ পরিসংখ্যান আশঙ্কাজনক। এজন্য নয়াদিল্লি ‘রেপ ক্যাপিটাল’ হিসেবে গোটা ভারতে পরিচিত।
ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর পরিসংখ্যান মতে, ২০১১ সালে ভারতে ২৪ হাজার ২০৬টি ধর্ষণের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ধর্ষণের হার আরো ১০ শতাংশ বেড়েছে। ১৯৯০ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে দেশটিতে ধর্ষণের ঘটনা দ্বিগুণ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে চলন্ত বাসে এক মেডিকেল ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও পৈশাচিক নির্যাতনের পর তাকে এবং তার ছেলেবন্ধুকে গাড়ি থেকে ছুঁড়ে ফেলা হয়। গত ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মারা যান ওই ছাত্রী। এই ঘটনায় দেশটিতে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।