বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘তৃতীয় শ্রেণীর’ নেতা ছিলেন বলে মন্তব্য করায় সাংবাদিক ও কলামিস্ট এবিএম মূসাকে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
শুক্রবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির পক্ষে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এক লিখিত বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান দিবসে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এবিএম মূসা ৬-দফা প্রণয়নের সময় ‘বঙ্গবন্ধু তৃতীয় শ্রেণীর নেতা ছিলেন’ বলে মন্তব্য করেন।
হানিফ বলেন, “একজন মানসিক ভারসাম্যহীন বঙ্গবন্ধু বিদ্বেষী প্রতিক্রিয়াশীল ব্যক্তির মুখেই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এ ধরনের বক্তব্য শোভা পায়। এবিএম মূসার মতো একজন প্রবীণ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তি বেশ কিছুদিন ধরে আওয়ামী লীগের দরদি সেজে সরকারের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ক্রমাগত ভিত্তিহীন কল্পকাহিনী প্রচার করে চলেছেন।”
হানিফ অভিযোগ করেন, টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমতি চেয়ে না পাওয়ায় এবিএম মূসা তার ক্ষোভ নানাভাবে ব্যক্ত করে চলেছেন।
তিনি বলেন, “ এবিএম মূসা তার প্রকৃত উদ্দেশ্য লুকিয়ে রাখতে পারছেন না। যেকোনোভাবেই হোক ব্যক্তি এবং গোষ্ঠী স্বার্থে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে হেয় প্রতিপন্ন করার জেহাদে অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি। সরকারের সাফল্যগুলোকে ম্লান করার মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে তিনি কার্যত বিএনপি-জামায়াত জোটের ষড়যন্ত্রকেই সহায়তা করে চলেছেন।”
হানিফ বলেন, “এবিএম মূসা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করে পাকিস্তানি দালাল হামিদুল হক চৌধুরীর পত্রিকা ‘দৈনিক পাকিস্তান অবজারভার’ পত্রিকার প্রতিনিধি হিসেবে পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে হংকংয়ে গিয়ে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন। কার্যত তিনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।”
একই আলোচনা সভায় প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকীর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেয়া বক্তব্যকে উন্মাদের প্রলাপ উল্লেখ করে হানিফ বলেন, “তাকে (নূরে আলম সিদ্দিকী)) স্মরণ করে দিয়ে বলতে চাই, জাতির জনকের জীবদ্দশায় তার ঐতিহাসিক ধানমন্ডিস্থ ৩২নং-এর বাসভবনের ফ্লোরে গড়াগড়ি খেয়ে ছাত্রলীগের সভাপতির পদটি বাগিয়ে নিয়েছিলেন।”
হানিফ বলেন, “’৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করার পর প্রতিবাদ তো দূরের কথা বরং সামরিক স্বৈরশাসকদের পদলেহন করতে দ্বিধা করেননি। সামরিক স্বৈরশাসকদের উচ্ছিষ্ট গ্রহণ করে তাদের নির্দেশে আওয়ামী লীগ ভেঙেছিলেন। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় ডলার বাজারে নয়-ছয় করে কোটিপতি হয়েছেন।”
এই বক্তব্যের জন্য আইনি কোনো ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত এখনো নেয়া হয়নি বলে জানান হানিফ।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপ-দফতর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক লূৎফুন্নাহার মুন্নি প্রমুখ।