আজ || রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শিরোনাম :
  গোপালপুরে মাদরাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে গণশুনানি       ভূঞাপুর মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নতুন কমিটি       গোপালপুরে ১৮ বছর পর স্বনামে ফিরলো আব্দুস সালাম পিন্টু কলেজ       গোপালপুরে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত       ক্ষেতের আইল দিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে ভোগান্তিতে শিশু শিক্ষার্থীরা       গোপালপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কমিটি গঠন       গোপালপুরে জামায়াতে ইসলামীর পৌর শাখার কর্মী সম্মেলন       ইমনরা স্বাধীনতা এনে দিয়েছে: টাঙ্গাইল জেলা জামায়াত আমীর        গোপালপুরে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন       ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগকে এদেশের মানুষ মাথা তুলে দাড়াতে দিবেনা : সালাউদ্দীন আহমেদ    
 


শাহরিয়ারের সেঞ্চুরিতে খুলনার প্রথম জয়

 এ যেন অন্য এক খুলনা রয়েলস। টানা তিন ম্যাচে হেরে মানসিকভাবে পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়া এই দলটি আজ নিজেদের দর্শকদের সামনে যেভাবে উপস্থিত করেছে, তা রীতিমতো গবেষণার বিষয়। টানা তিন ম্যাচে হেরে যাওয়া দলটি কী করে এতোগুলো রেকর্ড তৈরি করে জয় তুলে নিয়েছে। বিপিএলের আসরে প্রথম সেঞ্চুরির ম্যাচে খুলনারও প্রথম জয় এটা।  
যে শাহরিয়ার নাফিসকে টি২০ ম্যাচে অকেজো বলে বাদ দেয়া হয়েছে সেই নাফিস আজ যা করলেন তাতে বার বার হার্ড হিটার তামিমের পর তার নাম উচ্চারিত হয়েছে। বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে প্রথম সেঞ্চুরিটি তার নামের পাশে লেখা হয়ে গেল। দুরন্ত রাজশাহী চার ম্যাচে এক জয় নিয়ে দুই পয়েন্টেই আছে। আর খুলনা রয়েলস চার ম্যাচে আজ প্রথম বার পয়েন্ট তালিকায় নাম লিখিয়েছে।

একাধিক রেকর্ডের ম্যাচে নাফিসের দল খুলনা নয় বল অক্ষত রেখেই ৬৮ রানের জয় তুলে নিয়েছে। টস হেরে খুলনা ২০ ওভারে ম্যাচে ১৯৭ রানের ইনিংসে বিপিএলে প্রথম জুটি সর্বোচ্চ রানের পার্টনারশিপ গড়লেন দুই ওপেনার শাহরিয়ার আর ভিনসেন্ট। বিপিএলে প্রথম বার কোনো ম্যাচে বিনা উইকেটে ইনিংস শেষ করেছে।

শাহরিয়ার বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরি করলেন ৬৭ বলে ১২টি চার ও দুটি ছয় দিয়ে। আর বিপিএলে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের মালিক শাহরিয়ার। ওপেন করতে নেমে শেষ অবদি দুই ওপেনারের নট আউট থাকার ঘটনাও বিপিএলের এই্ আসরে প্রথম ঘটনা। আর দুই শত রানের কোটার কাছাকাছি বিপিএলে ঢাকার পর দ্বিতীয় দল হিসাবে খুলনাই যেতে পেরেছে।  সবই হয়েছে আজ খুলনার ম্যাচে। শাহরিয়ারকে আজকের ম্যাচে নায়ক বলাটা ভুল বলা হবে না। শাহরিয়ার ১০২ আর ভিনসেন্ট ৮৯ রানে অপরাজিত।

ওপেনিং করতে নেমে দুই ওপেনার দুরন্ত রাজশাহীর বোলারদের পাড়া-মহল্লার বোলারে পরিণত করে ছেড়েছে। দুই ওপেনারের কল্যাণে খুলনার স্কোরে জমা হয়ে যায় ১০ ওভারে ৭০ রান। আর ১২ ওভারে সেই স্কোর বেড়ে যায় ১০০ রানে। ওপেনার শাহরিয়ার ৪৯ রানে আর বিদেশী ওপেনার ভিনসেন্টও ৪৯ রানে। ওভার প্রতি রান রেট ৮.২২। প্রজেক্ট স্কোর হতে পারে ১৫০ থেকে ১৬০ রান।

এই রান জয়ের জন্য যথেষ্ট নাও হতে পারে। এমনটা আশঙ্কা করেই হয়তো আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেন শাহরিয়ার। ৪০ বলে চারটি চার ও একটি ছয় দিয়ে বিপিএলে নিজের ফিফটির স্বাদ গ্রহণ করলেন। এরপর ভিনসেন্ট ৩৫ বলে করলেন ৫০ রান। ১৪তম ওভারে রাজশাহীর স্পিনার মনির হোসেনের এক ওভারে ছয় বলে তিনটি চার ও তিনটি সিঙ্গেল দিয়ে নিলেন ১৪ রান। ১৫ ওভার শেষে স্কোর বিনা উইকেটে ১৩৫ রান। ১৬.১ ওভারে মনির হোসের বলে একবারই বলের লাইন মিস করেছেন শাহরিয়ার। বোল্ড হতে হতে বেঁচে গেলেন। ওই একবারই শাহরিয়ার তার ইনিংসে ভুল করেছেন। এছাড়া তাকে একবারের জন্যও কোনো বোলার মাথা নত করাতে পারেননি। সঙ্গে থাকা ভিনসেন্টের বেলাতে একই কথা প্রযোজ্য। দুই ওপেনার যেভাবে রাজশাহীর বোলারদের ছয় মেরেছেন তা ছিল দেখার মতো।

শাহরিয়ার ৮০ রানের ঘরে দাঁড়িয়ে। তাকে সেঞ্চুরির মাইলফলক স্পর্শ করতে ভিনসেন্ট শত ভাগ সাপোর্ট দিলেন। দলের ১৮২ রানের মাথায় শাহরিয়ার ৯৮ রানে ইতিহাস গড়ার পথে। কোনো মানসিক চাপ না নিয়ে শাহরিয়ার দুই রান নিয়ে বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে করলেন প্রথম সেঞ্চুরি।

কোনো উইকেট প্রতিপক্ষকে টি-২০ ম্যাচে খুলনা রয়েলস স্কোর বোর্ডে জমা করেছে ১৯৭ রান! জয়ের জন্য ১৯৮ রানের বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা যেমন হওয়া দরকার ছিল তা হয়নি রাজশাহীর। কারণ নামের পাশে পাঁচ রান রেখে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফিরে যান মারকুটে ওপেনার তামিম ইকবাল। প্রথম উইকেট হারানোর বেদনা ভোলার আগেই কিছুক্ষণের মধ্যে বিদায় নেন আরেক ওপেনার চালর্স কভেন্ট্রিও। ২৩ রান করেন কভেন্ট্রি। ফলে দুই উইকেটে ৩৫ রানে পরিণত হয় রাজশাহী।

শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া রাজশাহীকে এরপর টেনে তুলেন অধিনায়ক জহিরুল ইসলাম ও সাইমন ক্যাটিচ। কিন্তু দলকে খুব বেশি রান দিতে পারেননি তারা। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৩৬ রান আসার পর বিদায় নেন ক্যাটিচ। ১৬ বলে ১৬ রানের ইনিংস খেলেন এই অসি ব্যাটসম্যান।

ক্যাটিচের বিদায়ের ওই ওভারেই আউট হন জহিরুল। ফলে হারের শঙ্কাটা বেশ ভালোভাবেই উকি মারতে থাকে রাজশাহীর শিবিরে। দলের মিডল-অর্ডারে আর কোনো ব্যাটসম্যান বড় ইনিংস খেলতে না পারলে শেষপর্যন্ত হারের শঙ্কাটা সত্যিই হয়। জহিরুলের ২৬ রানের পর শেষ দিকে মইন আলি ও শন আরভিন ২২ রান করে করেন। আর তাতে শুধুমাত্র দলের হারের ব্যবধানই কমেছে। শেষপর্যন্ত রাজশাহী ১৮.৩ ওভারেই ১২৯ রানে অলআউট হয়। বল হাতে খুলনার পক্ষে ফরহাদ রেজা তিনটি, শাপুর জারদান ও ড্যানিয়েল হ্যারিস দুটি করে উইকেট নেন।

মন্তব্য করুন -


Top
error: Content is protected !!