দলটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের পাঠানো এক ই-মেইল বার্তায় এ উদ্বেগ জানানো হয় বলে কূটনীতিক সূত্রে জানা গেছে। তবে এ ব্যাপারে বক্তব্য নেয়ার জন্য জামায়াতের কোনো নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সোমবার ট্রাইব্যুনালের রায়ে বলা হয়, ‘পাকিস্তান রক্ষার নামে জামায়াতে ইসলামী আধা-সামরিক বাহিনী গঠন করে নিরস্ত্র বাঙালি বেসামরিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে উল্লেখ্যযোগ অবদান রাখে।’ এছাড়া রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত মাওলানা আবুল কালাম আযাদের পরিচয় দিতে গিয়ে বলা হয় ‘আসামি আবুল কালাম আযাদ ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজে অধ্যয়ন করেছেন, পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন।’
রায়ে জামায়াতে ইসলামী ও মুজাহিদের প্রসঙ্গ আসায় সোমবার থেকেই আওয়ামী লীগ সমর্থক কয়েকজন অ্যাক্টিভিস্ট ও বুদ্ধিজীবী দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানাতে শুরু করেন। এ রায়ের আগেও জাময়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও শীর্ষ স্থানীয় কয়েক জন নেতাকেও বক্তব্য দিতে দেখা গেছে।
সোমবার ট্রাইব্যুনালের রায়ে জামায়াতে ইসলামী ও মুজাহিদের প্রসঙ্গ আসার ব্যাপারে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান এক বিবৃতিতে দলটির উদ্বেগের কথা জানান। ওই বিবৃতিতে খান দাবি করেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ৪১ বছর পরে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে প্রহসনের আয়োজন করে। আজ অভিযুক্ত মাওলানা আবুল আযাদের বিরুদ্ধে যে রায় প্রদান করা হয়েছে, তা তারই অংশ মাত্র।’
তিনি আরো বলেন, ‘আইন অনুযায়ী ব্যক্তির অপরাধের বিচার হওয়ার কথা। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার বিষয়েই রায় প্রদান স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি। ব্যক্তির অপরাধের সাথে জামায়াতে ইসলামীকে টেনে আনা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
মঙ্গলবার বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধনদাতা প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের অন্যতম নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করেছেন, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশ এলেই জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।’
তবে তিনি এও বলেন, ‘আমরা মিডিয়ার সংবাদ দেখে কোনো দলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।’
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার ও বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘদিন ধরেই দেশি-বিদেশি নানাপক্ষের কাছে ভিন্নমত জানিয়ে আসছে।