উল্লেখ্য, রায়ের পর্যবেক্ষণে জামায়াতে ইসলামীকে সম্পৃক্ত করা ঠিক হয়নি বলে সোমবার এক বিবৃতিতে জামায়াতে ইসলামী দাবি করেছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আনিসুল হক বলেন, আবুল কালাম আযাদ যদি নিজেকে নির্দোষ মনে করতেন, তাহলে তিনি নিজে এসে এ মামলায় মোকাবিলা করতেন। তিনি বলেন, “আদালত কিন্তু তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণ নিয়েই রায় দিয়েছেন।”
আনিসুল হক বলেন, “সবচেয়ে বড় ব্যাপার, এ রায়ের ফলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভবিষ্যতে কোনো অন্যায়কারী অন্যায় করে আর পার পাবে না।” রায়ের পর্যবেক্ষণে জামায়াতে ইসলামীকে পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগী হিসেবে আখ্যা করাটা আইনসিদ্ধ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
’৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জামায়াতের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করে আনিসুল হক বলেন, “জামায়াতে ইসলামী সে সময় কী করেছে সবারই জানা। জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন ভূমিকা আমি নিজেও দেখেছি।”
প্রসঙ্গত, জামায়াতে ইসলামী একাত্তরে ‘পাকিস্তান রক্ষার’ নামে ‘সশস্ত্র বাহিনী’ তৈরির মাধ্যমে নিরস্ত্র বাঙালিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতা করে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আযাদের বিরুদ্ধে দেয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়ের পর্যবেক্ষণে।
সোমবার জামায়াতের সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দিয়ে এই রায় দেয়া হয়।
ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, “যে নিপীড়ন ও নির্যাতন সয়ে, যে রক্ত আর আত্মত্যাগের বিনিময়ে নিরস্ত্র বাঙালিকে একাত্তরে মুক্তি অর্জন করতে হয়েছে, তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।সেই সময়ের বিশ্ব ইতিহাসে আর কোনো জাতিকে বোধ হয় লক্ষ্য অর্জনে এতটা ত্যাগ স্বীকার করতে হয়নি।”
এদিকে, ট্রাইব্যুনালের এই রায়ের পর জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার দাবি আরো জোরালো হয়ে উঠেছে।
আবুল কালাম আযাদের ফাঁসির রায় ঘোষণার পর আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, “রায় ঘোষণার আগে আদালত স্পষ্ট করে বলেছে, ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানিদের সহযোগী ছিল।” তিনি অবিলম্বে বাংলাদেশে এ সংগঠনের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, “এ রায় ৪০ বছরের আন্দোলনের প্রথম পদক্ষেপ। মেজর জিয়াউর রহমান একাত্তরের খুনিদের পূর্নবাসন করেছিলেন।” এ রায়ের মধ্য দিয়ে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি আরো জোরদার হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কার্যকরি সভাপতি মুনতাসীর মামুন।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কাজী আরেফ প্রতিক্রিয়ায় বলেন, জামায়াতে ইসলামী মানবতাবিরোধী অপরাধের মাধ্যমে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতা করেছে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। মুক্তিকামী মানুষের প্রত্যাশা, তাদের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে
সম্পাদক : অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন | নির্বাহী সম্পাদক : কে এম মিঠু
প্রকাশক কার্যালয় : বেবি ল্যান্ড, বাজার রোড গোপালপুর, টাঙ্গাইল -১৯৯০, বাংলাদেশ।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত - ২০১৯-২০২৩