মুখে কথা নেই। চোখেও নেই পানি। শুধু জানালার শিকল ধরে পথপানে চেয়ে থাকেন তিনি। বাড়ীতে নতুন কোন লোক দেখলেই আগের মতো আর বিচলিত হতে দেখা যায় না তাকে। হাত জাপটে ধরে হাউমাউ করে বলতে শুনা যায়না ‘আমার ছেলে কোথায় আছে? কেমন আছে? আমার বুকের মানিক আমার কাছে এনে দাও-এনে দাও। শারীরিক অবস্থারও অবনতি হচ্ছে ক্রমাগত। ছেলের অপেক্ষায় এভাবেই পথ পানে চেয়ে থাকেন নিখোঁজ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক, সিলেট জেলা সভাপতি ও সাবেক সংসদ এম. ইলিয়াস আলীর স্নেহময়ী মাতা সূর্যবান বিবি।
সোমবার বিকেলে ইলিয়াসের জন্মস্থান বিশ্বনাথ উপজেলার রামধানার গ্রামের বাড়ীতে গেলে চোখে পড়ে এসব দৃশ্য। কবে শেষ হবে ইলিয়াসের মায়ের প্রতিক্ষার প্রহর? জানালার শিকল ধরে পথ পানে নির্বাক চেয়ে থাকা? ইলিয়াসের স্নেহময়ী মায়ের মুখে কখন ফুটবে হাসি?
নিখোঁজের ৯ মাস পের হলেও “নিখোঁজ রহস্যে”র কুলকিনার না হওয়ায় একেবারেই ভেঙ্গে পড়েছেন ইলিয়াসের মা সূর্যবান বিবি। ইলিয়াসের ছোট ভাই এম. আসকির আলীর মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি জানান, নিখোঁজ পর থেকেই নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে বড় ভাই ইলিয়াস আলী কে ফিরে পেতে মা কান্নায় বার বার মূর্ছা যান। এখনও তাঁর কান্না থামছেনা। লোকজন দেখলেই ‘আমার ইলিসায় কোথায় আছে? কেমন আছে? তাকে আমার বুকে এনে দাও’ বলে আহাজারি করেন। কারও সাথে কথা বলছেন না আগের মত। নির্বাক হয়ে চেয়ে থাকেন পথের দিকে।বড় ভাই আউলাদ আলীও স্নেহময়ী ছোট ভাই ইলিয়াস আলীর চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পরেছেন। তিনি আরো বলেন, ঢাকার বাসা থেকে ইলিয়াস বাড়ীতে আসলেই মা’কে পা ধরে সালাম করত। মা তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে আদর করতেন। যাবার সময় মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেন। জিঞ্জেস করতেন আর কবে ফিরবি বাবা? ইলিয়াস যে পথ দিয়ে বাড়ী থেকে বেরিয়ে যেতো বিদায় জানিয়ে মা অপলক চেয়ে থাকতেন। নিখোঁজের পর থেকেই এভাবেই ইলিয়াসের পথ পানে নির্বাক হয়ে চেয়ে থাকেন মা। এসব কথা বলতে গিয়ে তিনিও বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি ভাই কে সুস্থ অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে সরকারের কাছে জোরদাবী জানিয়েছেন।