ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকার সরকার দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদ এবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী এবং তার একান্ত সচিবের কম্পিউটার অপারেটরকে গালাগাল ও গুলি করার হুমকি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে মন্ত্রণালয়ে একটি কাগজের ফটোকপি দিতে দেরি হওয়ায় এমপি তাঁদের গালাগাল ও হুমকি দেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা। বিষয়টি অস্বীকার করেছেন গিয়াস উদ্দিন। মন্ত্রীর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে দপ্তরি নিয়োগের তদবির নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী আফছারুল আমিনের দপ্তরে যান ময়মনসিংহ-১০ আসনের এমপি গিয়াস। ওই সময় মন্ত্রীকে না পেয়ে ফিরে যান এমপি গিয়াস। এরপর দুপুর দেড়টায় আবার মন্ত্রীর কাছে ডিও লেটারটি নিয়ে যান। যাতে সুপারিশ করে দেন মন্ত্রী। মন্ত্রীর দপ্তর থেকে বেরিয়ে মন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফকে ডিও লেটারের কপিটি ফটোকপি দিতে বলেন। আফছারুল আমীনের সুপারিশ করা ডিও লেটার ফটোকপি করার জবাবে ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ইউসুফ, এখানে কোন ফটোকপি মেশিন নেই। তাই ফটোকপি করা যাচ্ছে না। পরে তিনি মন্ত্রীর পিএস রূপন কান্তির রুমে যান। সেখানে কম্পিউটার অপারেটর মাইনুদ্দিন ভূইয়াকে বলেন ফটোকপি দেওয়ার জন্য। এসময় ফটোকপি করতে দেরি হওয়ায় সাংসদ গিয়াস রেগে যান এবং কর্মকর্তাদের গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকতাদের দুর্নীতিবাজও বলেন সংসদ সদস্য। শেষ পর্যায়ে সবাইকে গুলি করে হত্যা’র হুমকি দেন। এরপর মন্ত্রীর রুমে কম্পিউটার অপারেটর মাইনুদ্দিনকে নিয়ে ঢুকেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ। এ সময় তিনি মন্ত্রীকে মন্ত্রণালয়ের কর্মকতাদের বিরুদ্ধে নালিশ করেন। এক পর্যায়ে এমপি গিয়াস মন্ত্রীকে বলেন, আপনি জানেন আমি মেজর জিয়াকে হত্যা করেছি ,আমি ফাঁসির আসামি, কাউকে ভয় পাই না। আমি আসার সঙ্গে সঙ্গে আমার কাজ করে দিতে হবে। এ কথা বলে চলে যান এমপি। ঘটনার বিবরণ এমপি’র কাছ থেকে মন্ত্রী শুনতে চাইলে তিনি কিছু জানাতে রাজি হননি। পরে মন্ত্রী তার দফতরে কর্মকর্তা ও কম্পিউটার অপারেটর মাইনুলের কাছ থেকে সব বিষয় জানেন। তবে মন্ত্রীর দপ্তরে গিয়ে গুলি করার হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এক কর্মকর্তা আমার সঙ্গে বেয়াদবি করেছেন, আমি মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেছি, আমি তাকে হুমকি দেইনি। মন্ত্রীর দফতরে গিয়ে আমি হুমকি দেবো, আমি কী পাগল? এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী আফসারুল আমিন জানিয়েছেন, ভুল- বোঝাবুঝি হয়েছিল, মিটমাট হয়ে গেছে। এর আগে নিজ নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ জনগণকে গুলি করার জন্য পিস্তল তাক করে সারা দেশে আলোচনার ঝড় তোলেন এমপি গিয়াস। বৃহস্পতিবারের ঘটনার মাধ্যমে আবারও নতুন করে আলোচনার জন্ম দিলেন তিনি।