ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বেতিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে।
কাদের মোল্লার প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক আসামিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের মাধ্যমে এই যুক্তিতর্ক শেষ হয়।
এর আগে গত ২৭ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ তাদের যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) সম্পন্ন করেন।
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) আব্দুর রাজ্জাক খান ও মনোয়ারা বেগমসহ রাষ্ট্রপক্ষের মোট ১২ জন সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদেরকে জেরা করেন।
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়া রাষ্ট্রপক্ষের অন্য সাক্ষীরা হলেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহম্মেদ খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মামা বাহিনীর প্রধান ও কমান্ডার শহিদুল হক খান মামা, কাদের মোল্লার হাতে ক্ষতিগ্রস্ত এক নারী সাক্ষী (ক্যামেরা ট্রায়াল), কবি কাজী রোজী, শহীদ বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক ও আইনজীবী খন্দকার আবু তালেবের ছেলে সরকারি কর্মকর্তা খন্দকার আবুল আহসান, সাবেক ছাত্রলীগকর্মী সাফিউদ্দিন মোল্লা, আব্দুল মজিদ পালোয়ান, কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর গ্রামের শহীদ নবী হোসেন বুলুর স্ত্রী নূরজাহান বেগম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন মোল্লা এবং সৈয়দ আব্দুল কাইয়ুম।
অন্যদিকে কাদের মোল্লা নিজেসহ ৬ জন সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন তার পক্ষে। অন্য ৫ সাফাই সাক্ষী হচ্ছেন- সুশীল চন্দ্র মণ্ডল, মোসলেম উদ্দিন মাস্টার, সাহেরা খাতুন, আলতাফ উদ্দিন মোল্লা ও এআইএম লোকমান। রাষ্ট্রপক্ষ তাদের জেরা সম্পন্ন করেছেন।
এর আগে গত ৫ নভেম্বর কাদের মোল্লার পক্ষে মোট ৯৬৫ জন সাফাই সাক্ষীর নামের প্রাথমিক তালিকা আসামিপক্ষ ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়ার পর ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণের অনুমতি দেন ট্রাইব্যুনাল।
গত ২৮ মে ছয়টি অভিযোগে কাদের মোল্লার বিরদ্ধে চার্জগঠন করে ট্রাইব্যুনাল। এ ছয়টি অভিযোগের মধ্যে রয়েছে কবি মেহেরুন্নেছাসহ বুদ্ধিজীবী হত্যা, পল্লবীর আলোকদি গ্রামে ৩৪৪ জনকে হত্যা, খন্দকার আবু তালেবকে হত্যা, বাঙলা কলেজের ছাত্র পল্লবসহ সাতজনকে হত্যা, কেরানীগঞ্জের শহীদনগর গ্রামের ভাওয়াল খান বাড়ি ও ঘাটারচরসহ পাশের আরও দু’টি গ্রামের অসংখ্য লোককে হত্যা।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধকালে গোলাম মোস্তফা নামে এক মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলাটি করেছিলেন কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষী মোস্তফার কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ খান। ২০০৮ সালে পল্লবী থানায় আরো একটি মামলা হয় কাদের মোল্লাসহ আরো অনেকের বিরুদ্ধে। ওই মামলার অভিযোগে ২০১০ সালের ১৩ জুলাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে গত বছরের ১ নভেম্বর জমা দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনে হত্যা, খুন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়। ২৮ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।
১৬ এপ্রিল আব্দুল কাদের মোল্লার মামলাসহ তিনটি মামলা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে ট্রাইব্যুনাল-২ এ স্থানান্তর করা হয়।