আজ || শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
  গোপালপুরে ব্র্যাকের উদ্যোগে সবজি বীজ বিতরণ       প্রয়াত শিক্ষক অধ্যাপক বাণীতোষ চক্রবর্তীর স্মরণ সভা       গোপালপুরে যমুনার চরাঞ্চলে শিশুদের মাঝে পোশাক ও জুতা বিতরণ       গোপালপুর সরকারি কলেজ পরিদর্শন করলেন মাউশি পরিচালক       চালকের গাফিলতিতে ঝিনাই নদীতে পর্যটকবাহী মাইক্রোবাস       গোপালপুরে বিএনপি’র ৩১ দফা বাস্তবায়নে লিফলেট বিতরণ ও পথসভা       “জামালপুর এক্সপ্রেস” দিক পরিবর্তন, একটি জনপ্রিয় ট্রেনের মৃত্যু       গোপালপুরে কৃষি ব্যাংকের আয়োজনে ‘তারুণ্যের উৎসব’ অনুষ্ঠিত       গোপালপুরে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্নয় ক্যাম্পেইন       ‘হিংসা বিভেদ ভুলে সকলকে একতাবদ্ধ থাকতে হবে’ -আব্দুস সালাম পিন্টু    
 


ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল

দুই গার্মেন্টস কর্মীকে রাতভর ধর্ষণ ও পরে একজনকে ৭ টুকরা করে হত্যা মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকার ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. সাদিকুল ইসলাম তালুকদার এ রায় দেন। আসামিরা হলেন- নজরুল ইসলাম (৪২) ও দালাল মোস্তফা (২২)।

আসামি নজরুল জামিনে গিয়ে ও মোস্তফা মামলার শুরু থেকেই পলাতক। আসামি নজরুল দীর্ঘদিন জেলে আটক ছিলেন।পরে মিথ্যা তথ্য দিয়ে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন। পরে জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়লে হাইকোর্ট তাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু নজরুল আত্মসমর্পণ না করে পলাতক হন। নজরুলের গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার রামদেব গ্রামে। তার বাবার নাম আজিজার রহমান। অপর আসামি মোস্তফার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা থানার পাটুরিয়া গ্রামে। বাবার নাম আব্দুর রব মাতবর। একই সঙ্গে আসামিদের রায়ের অতিরিক্ত ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। টাকা আদায় করে ভিকটিমদের পরিবারকে দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বিচারক বলেন, ভিকটিম দুইজনই অল্প বয়স্কা। রোজার মাসে ঈদ উপলক্ষে কিছু কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দালাল মোস্তফা দুই ভিকটিমকে আসামি নজরুলের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তারা তাদের রাতভর ধর্ষণ করে। ভিকটিমদের একজন ঘটনা পুলিশকে বলে দিবে জানালে তাকে হত্যার পর তার লাশ ৭ টুকরো করে। অপর ভিকটিম না বলার শর্তে আসামিদের হাত-পা ধরে মুক্তি পান। ঘটনাটি অত্যন্ত অমানবিক তাই আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি পাওয়াই উচিত। বিচারক বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনার মামলায় আসামিরা কি করে জামিন পান তা আমার বোধগম্য নয়’।

এদিকে মামলাটি ২ বছর ২৯ দিন আগে রায়ের জন্য ধার্য হলেও এতো দিনে মামলাটির রায় ঘোষণা না হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এভাবে রায়ের জন্য ঝুলে থাকলে বিচারপ্রার্থীরা আদালতের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলবে। ২০০৬ সালের ১৮ অক্টোবর আশুলিয়ার নাহার গার্মেন্টের দুই নারী শ্রমিককে ঈদের শপিং করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আসামি মোস্তফা তাদের ঢাকার মিরপুরে নিয়ে আসে। এরপর তারা মিরপুর ১ নম্বর সেক্টরের আসামি নজরুলের ভাড়া বাড়িতে ওঠে। ঐদিন রাত ৯টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত আসামিরা ওই দুই নারী শ্রমিককে ধর্ষণ করেন। এক নারী শ্রমিক ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ করে দেওয়ার কথা জানালে আসামিরা তাকে হত্যা করেন। পরে তার লাশ ৭ টুকরো করে ফেলা হয়।এ ঘটনা অপর ভিকটিম দেখে ফেললে তাকেও হত্যা করতে উদ্যত হলে এ ঘটনা তিনি প্রকাশ করবেন না বলে আসামিদের হাতে-পায়ে ধরে জীবনে রক্ষা পান। পরবর্তীতে এ ঘটনায় মিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। ঘটনার দায় স্বীকার করে আসামি মোস্তফা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।  ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষ সাক্ষি বেঁচে যাওয়া ভিকটিমও আদালতে ঘটনার বিবরণ দিয়ে জবানবন্দি প্রদান করেন। ঘটনাটি তদন্ত করে মিরপুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক পারুল খাতুন ২০০৭ সালের ১৯ মে আসামি নজরুল ও মোস্তফাকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। রায় প্রদানের আগে চার্জশিটের ২০ জন সাক্ষির মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। নিহত নারী শ্রমিকের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা থানার পাটুরিয়া গ্রামে। রাস্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সংশ্লিস্ট আদালতের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর আলী আজগর স্বপন। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শফিকুর রহমান।

মন্তব্য করুন -


Top
error: Content is protected !!