ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের পল্লীতে এক পাষন্ড মা তার দেড় বছরের শিশু সন্তানকে জবাই করে হত্যা করেছে। গতকাল সোমবার ১১টার সময় উপজেলার বকেরগাছি গ্রামের রমজান আলীর স্ত্রী নিলুফা বেগম মাছ কাটা বটি দিয়ে নিজ হাতে তার সন্তান ফুয়াদকে জবাই করে হত্যা করে। পুলিশ দুপুরে হত্যাকারী মা নিলুফাকে আটক করেছে। এসময় পুলিশ জবাই করা রক্ত মাখা বটিও উদ্ধার করে। হত্যার পর আটক মা নিলুফা জানিয়েছে ছেলে ভাত ক্ষেতে না চাওয়ায় আমি ত কে বটি দিয়ে জবাই করেছি। তবে পুলিশ ও প্রতিবেশিরা জানিয়েছে নিলুফা একজন মানষিক রোগী। নিহত শিশু ফুয়াদের চাচা আব্বাছ আলী জানান, নিলুফা দীর্ঘদিন ধরে মানুষিক রোগে ভুগছিল। মাঝে মাঝে সমস্যা বেশি দেখা দেয়। তবে সে নিজের বাচ্চাকে জবাই করবে এটা আমাদের ধারনা ছিলনা।
সোমবার বাড়িতে কেউ না থাকায় এ সুযোগে তার মা রান্না ঘরে যেয়ে কোলের ছেলেকে উপুড় করে পিছন থেকে মাছ কাটা বটি দিয়ে কেটে জবাই করে। এরপর জবাই করা বাচ্চা নিয়ে রান্না ঘরেই নির্বাক হয়ে বসে ছিল। কিছুক্ষন পর বাড়ির অন্য সদস্যরা এসে দেখে সমস্ত রান্না ঘর রক্ষে ভেসে যাচ্ছে। এসময় নির্বাক মা ও সন্তান রক্ত মেখে লাল হয়ে আছে। বিভতস্য এই দৃশ্য দেখে বাড়ির সবাই চিতকার করতে থাকে। এ সময় প্রতিবেশিরা মা নিলুফাকে নিয়ে একই গ্রামের তার বাবার বাড়ি নিয়ে যায়। এরপর মুহুর্তের মধ্যে খবর ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার নারী পুরুষ এক নজর দেখতে ঘটনাস্থলে ভিড় জমায়। নিজ শিশুকে হত্যার পর থেকে মা নিলুফা এখন নির্বাক। কারও সাথে কোন কথা বলছে না। শুধু অপলক দৃষ্টিতে কি যেন খুজছে আর ডুকরে ডুকরে কাদছে।
থানায় আটক সন্তান হত্যাকারী মা নিলুফা শুধু একবারই বলেছিল ছেলে ভাত খাচ্ছিলো না তাই রাগ করে জবাই করিছি। প্রতিবেশী রোস্তম আলী জানান, ফুয়াদের পিতা যশোর বিমান বাহিনীর ইলেক্ট্রীক মিস্ত্রির কাজ করে। তার দুটি ছেলে বড় ছেলে আবির (১৩) এবং ছোট ছেলে ফুয়াদ (১৪ মাস)।
গত চার মাস আগে নিহত শিশু ফুয়াদকে তার মা নিলুফা পানির মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। সে সময় ফুয়াদ অসুস্থ্য অবস্থায় এক সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। নিহত শিশু ফুয়াদের পিতা রমজান আলী জানান, আমার স্ত্রী নিলুফা একজন মানষিক প্রতিবন্ধি। এর আগে যশোরে ভাড়া বাড়িতে থাকাকালীন সে আমার সন্তানকে পানির মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। যে কারনে নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বর্তমানে বাড়িতে আছি । আর আমি যশোর শহরে থেকে কাজ করি। এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে ।