পোষা বেড়াল স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি এমনকি মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বেড়ালবাহিত ‘টক্সোপ্লাজমা’ নামের একটি পরজীবীতে একমাত্র ব্রিটেনেই প্রতিদিন গড়ে এক হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়। এভাবে প্রতিবছর অন্তত ৭০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে ‘টক্সোপ্লাজমা’য়। এ পরজীবীর কারণে জন্মগত খুঁত নিয়ে সন্তান জন্মগ্রহণ পারে; দেখা দিতে পারে অন্ধত্ব এবং স্মৃতিভ্রম। এ ছাড়া, সিজোফ্রেনিয়া বা অন্যান্য অনেক মানসিক রোগের সঙ্গে এ পরজীবীর সম্পর্ক আছে।
‘টক্সোপ্লাজমা’ নামের পরজীবী একমাত্র বেড়ালই বহন করে কারণ এ পরজীবী বেড়ালের দেহেই কেবল বংশ বিস্তার করতে পারে। ব্রিটেনের দৈনিক এক্সপ্রেস এ কথা জানিয়েছে।
‘টক্সোপ্লাজমা’ বহনকারী বেড়াল মুখ দিয়েছে এমন খাবার খেলে মানুষের দেহেও এ পরজীবী ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে ব্রিটেনের ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সির গবেষণায় দেখা গেছে। তবে বেড়ালের মলের সংস্পর্শে আসার পর কিছু কিছু ভেড়ার দেহে ‘টক্সোপ্লাজমা’ সংক্রমণ ঘটতে দেখা গেছে। এ জাতীয় ভেড়ার গোশত ভালভাবে রান্না না করে খেলে মানব দেহেও একই পরজীবী ছড়িয়ে পড়তে পারে। বেড়ালের মলে দুষিত খাবার-দাবার বা পানি থেকে এ পরজীবী মানব দেহে ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে।
এ ছাড়া, মাতৃগর্ভের শিশুর জন্য এ পরজীবী মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠতে পারে। দৈনিকটির খবরে আরো বলা হয়েছে, ব্রিটেনে ৮ কোটি বেড়াল আছে। এর মধ্যে প্রতি একশটির মধ্যে একটির দেহে ‘টক্সোপ্লাজমা’ থাকতে পারে।
ব্রিটেনের ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সির ঝুঁকির তালিকায় এবার ‘টক্সোপ্লাজমা’র বিষয়টি যোগ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
খাদ্যে বিষক্রিয়া ঘটায় স্যালমোনেলিয়া নামের এক জাতের অণুজীব। লন্ডনের সেন্ট জর্জ হাসপাতালের রিচার্ড হলিম্যান বলেন, স্যালমোনেলিয়া’র চেয়ে বেশি বা তার সমান ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে ‘টক্সোপ্লাজমা’।\তিনি আরো বলেন, ‘টক্সোপ্লাজমা’ সংক্রমণের বিষয়টি খাটো করে দেখার উপায় নেই। একটি শিশু যদি ‘টক্সোপ্লাজমা’ সংক্রমণ দিয়ে জন্মগ্রহণ করে তবে তার সারাটা জীবনই বরবাদ হয়ে যায় বলে তিনি জানান।
কোনো কোনো রোগের প্রকোপ দেখা দিলে সে সম্পর্কে যেমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়, ‘টক্সোপ্লাজমা’র ক্ষেত্রে তেমনি সাবধান হয়ে যাওয়া উচিত বলে মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
[বাংলাদেশটাইমস.নেট/সুত্রঃ রেডিও তেহরান]