বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের শ্রমিক-কর্মচারীরা তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন। শ্রমিকদের দাবি আদায় করা হবে-বেসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী কর্নেল অব. ফারুক খানের এমন আশ্বাসের ভিত্তিতে তারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
শ্রমিক লীগের ডাকা ধর্মঘটের কারণে মঙ্গলবার সকাল থেকে অচল হয়ে পড়ে বাংলাদেশ বিমান। সকাল থেকে বিমানের ফ্লাইট অবতরণ করলেও অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক কোনো ফ্লাইট ছেড়ে যায়নি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়ে যাত্রীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য ছুটে যান বিমানমন্ত্রী ফারুক খান।
শ্রমিকদের সাত দফা দাবিগুলো হচ্ছে সভাপতির বিরুদ্ধে বিমান কর্তৃপক্ষের আনা অভিযোগ প্রত্যাহার, খাবার ও চিকিৎসা ভাতা, ভারত থেকে আনা বিমানের সেটআপ বাস্তবায়ন, কর্মচারীদের ব্যক্তিগত টিপি বাস্তবায়ন, একশ ভাগ চিকিৎসা ভাতা দেয়া এবং পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করা কর্মচারীদের স্থায়ী করা।
মঙ্গলবার ভোর থেকে বিমান বন্দরের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়ে বিমানের সব শাখার শ্রমিক-কর্মচারীরা সাত দফা আন্দোলন কর্মসূচিতে যোগ দেন। চট্টগ্রাম ও সিলেটেও একই দাবিতে ধর্মঘট করেন বিমান শ্রমিকরা।
এদিকে, বলাকা ভবনের সামনে মঙ্গলবার সকালে মহাসড়কে শ্রমিকরা রাস্তায় শুয়ে অবরোধ সৃষ্টি করতে চাইলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এর আগে সোমবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কর্মচারীদের ডাকা অবরোধ কর্মসূচি চলে। এরপর মঙ্গলবার থেকে লাগাতার সর্বাত্মক ধর্মঘটের ডাক দেয় আন্দোলনকারীরা।
এর আগে শ্রমিক-কর্মচারীরা রোববার ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোসাদ্দেক আহমেদকে প্রায় ১১ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। সোমবার দিবাগত রাত প্রায় ২টার দিকে মোসাদ্দেক আহমেদ আন্দোলনকারীদের কোনো দাবি না মেনে পুলিশ পাহারায় বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকা ত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ মার্চ থেকে বিমান বাঁচাও ঐক্য পরিষদ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন কর্মচারীরা। মার্চ মাস জুড়েই তারা মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ, অবস্থান কর্মসূচি এবং কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। আন্দোলনের একপর্যায়ে ঐক্য পরিষদ নেতারা সর্বাত্মক ধর্মঘটের ডাক দেন। পরে বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে ধর্মঘট স্থগিত করা হয়।