বাংলাদেশ ও ভারত এই দু’দেশের মধ্যে অনেক আলোচনা আর বৈঠকের পরও সীমান্তে বন্ধ হয়নি নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ। সীমান্তে একের পর এক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেই চলেছে। ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত শুধুমাত্র দিনাজপুর সীমান্তে বিএসএফ’ হাতে নিহত হয়েছে ৮০ জন ।। অন্যদিকে বিএসএফ এই সীমান্তে একই সময়ে ২৮জনকে গুলি ও নির্যাতন করে আহত করেছে। এর সাথে নতুন করে যুক্ত হয়েছে নিরীহ বাংলাদেশীদের উপর নির্যাতন। একারণে সীমান্তে বসবাসকারী বাংলাদেশী নাগরিকদের থাকতে হচ্ছে আতংকে। এমন কি আত্মীয়-স্বজনরা ভয়ে বেড়াতে আসছেনা সীমান্তে বসবাসকারীদের বাসা-বাড়িতে। এমন অভিযোগ সীমান্তবাসীর।
দিনাজপুর সেক্টরের অধীনে ৩৯২ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে ভারত সীমান্ত। কাটাতার দিয়ে এই দীর্ঘ সীমান্ত ঘেরা থাকলেও একের পর এক ঘটেই চলেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশী নাগরিককে হত্যা ও নির্যাতন। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দু’দেশের মধ্যে বার বার এ বিষয়ে বৈঠক হলেও বন্ধ হয়নি এই হত্যাকান্ড। বিএসএফ গুলিতে নিহত হয়ে কেউ হারিয়েছে স্বামী আবার কেউ হারিয়েছে সন্তান। হত্যার শিকার এসব পরিবার গুলো বর্ণনা করেছে তাদের নির্মম কাহিনী দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার দাউদপুর সীমান্ত অভিবাসী।
বিজিবি দিনাজপুর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল এমদাদুল হক পিএসসি জানান,২০০৭ সালের জানুয়ারী থেকে ২০১২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফ ৮০ জন বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে ২০০৭ সালে ২১ জন,২০০৮ সালে১২ জন,২০০৯ সালে ১৯ জন,২০১০ সালে ১১জন,২০১১ সালে ৫জন ও ২০১২ সালে ১২ জন বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে বিএসএফ। দিনাজপুর সেক্টরের অধীনে নওগাঁ জেলার ধামুর হাট সীমান্ত থেকে পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী সীমান্ত পর্যন্ত ৩৯২ কিলো মিটার সীমান্তে গুলি করে ৭৫ জন এবং নির্যাতন করে ৫ জন বাংলাদেশীকে হত্যা করে বিএসএফ। এছাড়াও ২০১১ সালে একজন এবং ২০১২ সালে দু’জন বাংলাদেশীকে সীমান্তে ওপারে ভারতের অভ্যন্তরে কে বা কারা খুন করেছে। অন্যদিকে বিএসএফ এই সীমান্তে ৬ বছরে ২৮জনকে গুলি ও নির্যাতন করে আহত করেছে। শুধু হত্যা নয়, বিএসএফ নতুন করে শুরু করেছে সীমান্তবাসী বাংলাদেশীদের উপর অমানুষিক নির্যাতন। এ সীমান্ত সংলগ্ন বাংলাদেশী নাগরিকদের জমি থাকায় তাদের চাষাবাদ করতে যেতে হয় ওইসব জমিতে। সেখানে গেলে বিএসএফের মন চাইলেই গুলি করে নিরীহ কৃষকদের হত্যা করে। এমন অভিযোগ স্থানীয় এলাকাবাসী’র।
দেশ স্বাধীন হলেও সীমান্তবাসীর কাছে মনে হয় তারা এখনও যেনো পরাধীন। এমনটিই বললেন সীমান্তবাসীরা।সীমান্তে বসরাসকারীরা নিরাপদে বসবাস করুক। দু দেশের মধ্যে ফলপ্রসু আলোচনার মধ্যে সীমান্তে বসবাসকারী আর যাতে কেউ হত্যার শিকার না হয়। এমনটিই প্রত্যাশা সকলের।-শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর থেকে।