বাংলাদেশ মেরিনবিশ্বপ্রযুক্তিতে এখন চলছে নানা রকমের পালা বদলের খেলা। এ অঙ্গনে বছরজুড়েই শীর্ষ পদগুলোতে এসেছে রদবদল। কেউ কেউ আবার গিয়েছেন এ ঘর থেকে ও ঘরে। কেউ আবারও ও ঘর থেকে এ ঘরে। অনেকটাই টালমাটাল কেটেছে ২০১২ সাল।
কারণ ২০১৩ সালের বিশ্বপ্রযুক্তিতে বেশ কিছু নাটকীয় পরিবর্তন। এমনটা অনুমান করেছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞেরা। আর তার প্রমাণও মিলতে শুরু করেছে এরই মধ্যে। নকিয়া এ বছরেই মোবাইল ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে। এ মুহূর্তে হার্ডওয়্যারের পরিবর্তে সফটওয়্যার এবং কনটেন্টভিত্তিক সেবা খাতে পুর্নবিনিয়োগ করবে নকিয়া।তাহলে প্রশ্ন উঠছে নকিয়ার মোবাইল ইউনিট কার নিয়ন্ত্রণে যাচ্ছে। উত্তরটাও এসেছে আলোচনা আর ব্যবসা সমীকরণের মধ্যে দিয়েই। সম্ভাব্য তালিকার মধ্যে শীর্ষে আছে মাইক্রোসফট।
প্রসঙ্গত, উইন্ডোজনির্ভর স্মার্টফোন তৈরিতে মাইক্রোসফটের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কাজ করছে নকিয়া। এদিকে মাইক্রোসফট স্মার্টফোন ব্যবসায় নামতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে অনেক আগেই। তাই নকিয়ার মোবাইল স্বত্ত্ব আপাতত মাইক্রোসফটের হাতেই থেকে যেতে পারে।
অন্যদিকে আরেক বিখ্যাত মোবাইল ফোননির্মাতা হুয়াওয়ে স্মার্টফোন ব্যবসায় নামতে নকিয়ার মোবাইল ইউনিট কিনতে পারে। এ সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। হুয়াওয় এবং নকিয়ার শীর্ষ পর্যায়ে এ বিষয়ে বৈঠকের খবর পাওয়া গেছে।সুদীর্ঘ সময় সুনামের সঙ্গে রাজত্ব করেও স্মার্টফোনের ধারণায় পিছিয়ে পড়া আর অ্যানড্রইড বিমুখ আচরণের কারণে নকিয়া এখন দারুণ ব্যবসায়ীক চ্যালেঞ্জের তোপে পড়েছে। এ ধাক্কা সামলাতে ঐতিহাসিক প্রধান দপ্তরও বিক্রি করেছে নকিয়া।
এখন শেষ ভরসা উইন্ডোজ অপারেটিংয়ের লুমিয়া সিরিজ। এতে টিকে থাকার মতো ন্যূনতম যৌক্তিক সমীকরণ না থাকলে ২০১৩ সালেই মোবাইল ব্যবসা গুটিয়ে নেবে নকিয়া। এমন জটিল অনুমানের কথা অনেকটা দৃঢ় চিত্তেই বললেন বিখ্যাত প্রযুক্তি বিশ্লেষক ত্রিস্তান লুইস।
শুধু নকিয়া নয়, অ্যামাজন, গুগল এবং মাইক্রোসফটের ২০১৩ সালের মহাপরিকল্পনা নিয়েও মন্তব্য করেছেন এ গবেষক। গত দুবছর নাটকীয়তার পর ২০১৩ সালেই পূর্ণাঙ্গ গুগল স্মার্টফোন বাজারে প্রবেশ করবে। এ ছাড়াও অ্যামাজন এবং মাইক্রোসফটও নিজেদের শক্ত স্মার্টফোন প্রতিদ্বন্দ্বী করতে পুরোপুরি প্রস্তুত।
তাই ২০১৩ সালজুড়েই জমপেশ স্মার্টফোন লড়াইয়ের কথাই ইঙ্গিত করছেন লুইস। আর এ টক্করটা বিশ্বপ্রযুক্তিতে দারুণ উন্মদনায় মাতিয়ে রাখবে প্রযুক্তিপ্রেমীদের। সঙ্গে প্রযুক্তি নির্মাতাদের এহেন লড়াই টানটান উপভোগ্য হবে ভোক্তাদের জন্যও। এদিকে গুগল স্মার্টফোনের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করছে মটোরোলা। কাজেই প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে এ বছরের প্রতিযোগিতায় মটোরোলার নামটাও এসে যাচ্ছে। অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ গুগল স্মার্টফোন আনতে কারিগরি এবং হার্ডওয়্যার সহায়তা দিচ্ছে মটোরোলা।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে বেশ শক্তভাবেই বাজারে ফিরে আসার প্রচেষ্টা করেছে নকিয়া। কিন্তু প্রত্যাশিত এবং টিকে থাকার মতো সফলতা ঘরে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে এ শীর্ষ নির্মাতা। গত বছরের মোবাইল ওয়ার্ল্ড কনগ্রেস সম্মেলনে ৪১ মেগাপিক্সেলের নকিয়া ‘পিউরভিউ ৮০৮’ মডেল নিয়ে উন্মাদনা ছড়ালেও তা শেষ পর্যন্ত ধোপে টেকেনি। এ জন্য দামের আধিক্যকে দুষলেন বাজার বিশ্লেষকেরা।
এ ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার ইমার্জিং মার্কেটে মধ্যম দামের আশা সিরিজের ৩০৫ এবং ৩১১ মডেল দুটি দিয়ে ভক্তদের মন জয় করেছে নকিয়া। কিন্তু শীর্ষ নেতাদের স্মার্টফোনের তোড়ে আশা নকিয়াকে খুব বেশি আশা জাগাতে পারেনি।
তাই নতুন সংকট আর চ্যালেঞ্জ দিয়েই নকিয়ার ২০১৩ সালের পথচলা শুরু। তাই সময়ের সঙ্গে আর শেষ ভরসায় কতটা সফল হয় তার ওপরই নির্ভর করছে নকিয়ার ২০১৩ সাল।