বার্মার উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য কাচিনে বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে সামরিক বিমান থেকে হামলা চালানো হচ্ছে। এই ঘটনার ভিডিও চিত্র এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা থেকে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে যে বার্মার সামরিক বাহিনী সেখানে নতুন করে অভিযান শুরু করেছে।
ফ্রি বার্মা রেঞ্জার্স নামে একটি ত্রাণ সংস্থার তোলা এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে কাচিন প্রদেশে বিদ্রোহী অবস্থানগুলোর ওপর জঙ্গী হেলিকপ্টার গোলাবর্ষণ করছে।
ওই এলাকায় গত ৫ বছর ধরে যেখানে কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মির সদরদপ্তর ছিল সেখানে বিদ্রোহীদের পরিখার কাছাকাছি সেনা বাহিনীর জেট বিমান ঘোরাফেরা করছে।
বার্মার প্রেসিডেন্ট থেইন সিয়েন বলছেন তিনি সেনাবাহিনীকে শুধু আত্মরক্ষার প্রয়োজনে লড়াইয়ের নির্দেশ দিয়েছিলেন ।
প্রেসিডেন্টের দপ্তরের পরিচালক বিবিসিকে বলেছেন এই বিমান হামলা সম্পর্কে তারা কিছু জানেন না এবং বিদ্রোহীদের শান্তি আলোচনায় বসাতে রাজি করানোর চেষ্টা তারা এখনও চালাচ্ছেন ।
তবে এলাকায় জেট বিমানের উপস্থিতি এবং হেলিকপ্টার আক্রমণের কথা নিশ্চিত করেছেন এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ফ্রিলান্স ফোটোগ্রাফার রায়ান রোকো যিনি কাচিনে রয়েছেন তিনি বলছেন গত ৫ দিনের প্রতিদিনই তিনি আকাশে জঙ্গীবিমান দেখেছেন।
গত পাঁচদিনের বিমান হামলায় কত মানুষ হতাহত হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। লড়াই চলছে যে এলাকায় সেখান থেকে বহু মানুষ ইতিমধ্যেই পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে কাচিন এবং চীনের সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন শিবিরে।
কাচিন প্রদেশের স্বায়ত্তশাসনের জন্য লড়াই শুরু হয় ১৭ বছর যুদ্ধবিরতির পর আবার ২০১১ সালে।
বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন ১৮ মাস আগে সংঘাত আবার শুরু হবার পর ৭৫ হাজার লোক সেখান থেকে পালিয়ে গেছেন।
১৯৮৮ সালে কাচিন স্বায়ত্তশাসন আন্দোলনের সময় বার্মায় আন্দোলনকারীদের একজন নেতা ছিলেন খিন ওহমার। বার্মায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে থাইল্যান্ড থেকে আন্দোলন পরিচালনা করছেন তিনি।
তিনি বলছেন কাচিনের পরিস্থিতি নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন এবং সরকারের দিক থেকে হামলার বিষয়টা নাকচ করে দেওয়ার ব্যাপারটা আরো উদ্বেগজনক।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ফিল রবার্টসন বলছেন, কাচিনে যা হচ্ছে তাতে প্রমাণ মেলে যে বার্মার নেতাদের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা দেয়া এবং নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য হয়তো একটু বেশি তাড়াহুড়ো করা হয়েছে, হয়তো আর একটু সময় নেয়া যেতো।
বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন এই লড়াইয়ের ফলে বার্মার সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে এখন নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন যে শান্তি আলোচনা এবং সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার প্রতি সামরিক বাহিনীর সমর্থন আদৌ আছে কিনা ।
সম্পাদক : অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন | নির্বাহী সম্পাদক : কে এম মিঠু
প্রকাশক কার্যালয় : বেবি ল্যান্ড, বাজার রোড গোপালপুর, টাঙ্গাইল -১৯৯০, বাংলাদেশ।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত - ২০১৯-২০২৩