কে এম মিঠু, গোপালপুর :
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক সংসদ সদস্য ও গোপালপুর পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা জননেতা আলহাজ্ব হাতেম আলী তালুকদারের আজ ২৬ তম মৃত্যুবার্ষিকী।
১৯২৭ সালের ১১ জানুয়ারি গোপালপুর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামে পিতা আফছার আলী তালুকদার ও মাতা জামিরুন্নেছার গর্ভে হাতেম আলী তালুকদার জন্মগ্রহণ করেন।
ছোটকাল থেকেই হাতেম তালুকদার ছিলেন প্রচন্ড সাহসী আর অন্যায়কর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী। মাত্র ১২ বছর বয়সেই তিনি রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন।
১৯৪৮ সালে জামালপুর আশেক মাহমুদ কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে তিনি জামালপুর মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭০ সালের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে গোপালপুর-ভূঞাপুর আসন থেকে তিনি এমএনএ র্নিবাচিত হন। রাজনৈতিক কারণে নানামুখী অত্যাচার সহ্যসহ তিনি বহুবার কারা নির্যাতন ভোগ করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক হিসেবে তাঁর রয়েছে গৌরবান্বিত ভূমিকা এবং ইতিহাস। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও রাজাকাররা মাহমুদপুরে তাঁর বাড়িতে লুটপাট চালানোসহ বসতঘর আগুনে জ্বালিয়ে দেয়।
বাংলার স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু বাকশাল গঠন করলে হাতেম আলী তালুকদারকে টাঙ্গাইল জেলা বাকশালের দ্বায়িত্ব অর্পণ করেন। দেশে উপজেলা পরিষদ গঠিত হলে তিনি গোপালপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
এলাকার শত শত মানুষকে তিনি চাকুরী প্রদানে সহযোগিতা করাসহ সামাজ উন্নয়নে রেখেছেন অগ্রণী ভূমিকা। শিক্ষার উন্নয়নে তিনি হাদিরা হাতেম আলী বালক উচ্চ বিদ্যালয়, শিমলা জামিরুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়, মির্জাপুর হাতেম আলী উচ্চ বিদ্যালয়, পানকাতা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ চাতুটিয়া, অর্জুনা, শশুয়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
জননেতা হাতেম আলী তালুকদার সময়মত চিকিৎসার অভাবে ১৯৯৭ সালের ২৪ অক্টোবর ঢাকার রাশমনো স্পেশালাইজড্ হাসপাতালে পরলোক গমন করেন। গোপালপুর পৌরশহরের নন্দনপুর নিজ বাসভবন দক্ষিণামলয়ে তাঁকে সমাহিত করা হয়।