নিজস্ব প্রতিবেদক :
বারবার ডাক্তার ও স্টাফদের উপর হামলা এবং ভয়ভীতি দেখানোর দরুন গোপালপুর উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা প্রদানের কাজ ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনসহ নানা ধরনের আধুনিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিদিন আউটডোরে প্রায় ৬/৭শ এবং ইনডোরে প্রায় ৬০ থেকে ৮০ জন রোগী সেবা নিতে আসেন। হাসপাতাল চত্বরে দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান করা হয়েছে। রোগীর স্বজনদের বসার জন্য সুন্দর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিন্তু সন্ত্রাসীদের অবাধ বিচরণের দরুন ডাক্তার ও স্বাস্থ্য কর্মীরা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিতে পারছেনা।
হাসপাতাল সুত্রে জানানো হয়, গতকাল রবিবার সকাল দশটায় একদল সন্ত্রাসী হাসপাতালের বর্হিবিভাগের ৫নং ওয়ার্ডে অবৈধভাবে প্রবেশ করে হৈচৈ শুরু করে। শিশু বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার জেরিন কবির হৈচৈয়ের কারণ জানতে চাইলে সন্ত্রাসীরা তার সাথে বাকবিতন্ডা শুরু করে। এক পর্যায়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। সন্ত্রাসীদের মারমুখি আচরণ দেখে হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারি হাফিজুল ইসলাম ও আব্দুল জলিল ডাক্তার জেরিনকে রক্ষা করতে গেলে সন্ত্রাসী লাল মিয়া ও তার দলবল ওই দুই কর্মচারিকে বেদম পিটুনি দেয়। মোবাইলে ছবি তুলতে গেলে সন্ত্রাসীরা হাফিজুলের এন্ড্রোয়েড মোবাইল সেট কেড়ে নিয়ে যায়। হাফিজুলের মাথা ফাটিয়ে দেয়া হয়। আহত দুজন এখন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। এর আগে হাসপাতালের এক নিরাপত্তা রোগীকে সন্ত্রাসীরা বেদম পিটুনি দিয়ে হাত ভেঙ্গে দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের দুজন স্টাফ জানান, হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগিরা লাইনে দাড়ালে প্রায়ই মোবাইল বা টাকাপয়সা হাতসাফাই করে দুবৃর্ত্তরা। এসব দুবৃর্ত্তদের সহযোগিতা করে নন্দনপুর এলাকার একদল সন্ত্রাসী। এরা হাসপাতাল এলাকায় নেশা করার সুযোগ না পেয়ে হাসপাতালের স্টাফদের প্রায়ই প্রাণনাশের হুমকি অথবা হামলা করে থাকে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আলীম আল রাজী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং সকল স্টাফরা সন্ত্রাসীদের দরুন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ফলে স্বাস্থ্য সেবার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তিনি আরো জানান, নন্দনপুর কাচারি পাড়ার সন্ত্রাসী লাল মিয়াসহ ৫জনকে আসামী করে গত রবিবার রাতেই থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।
গোপালপুর থানার ওসি মোঃ জিয়াউল মোর্শেদ জানান, মামলা হওয়ার পর দুবৃর্ত্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।