সরকারি ব্যবস্থাপনায় মালয়েশিয়ায় প্রথম পর্যায়ে ১০ হাজার কর্মী পাঠানো হবে। রবিবার বনায়ন খাতে মালয়েশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে কর্মী পাঠানোর আনুষ্ঠানিক অনুরোধপত্র পাঠানো হয়েছে। এজন্য ১৩ জানুয়ারি থেকে নিবন্ধন শুরু হবে। সোমবার বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন
মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়াধীন এটুআই প্রকল্পের আওতায় প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত সারা দেশের সকল ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র হতে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু কর্মীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এতে মধ্যসত্ত্বভোগী অসাধু ব্যবসায়ী প্রতারক দালাল চক্রের অপতৎপরতা বিলুপ্ত হবে। এই প্রক্রিয়ায় সারা দেশে ৪ হাজার ৫০০ টি ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রে গুচ্ছওয়ারীভাবে কর্মী নিবন্ধন করা হবে।
ঢাকা ও বরিশাল বিভাগে ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি, রাজশাহী, রংপুর ও সিলেট বিভাগে ১৪ থেকে ১৬ জানুয়ারি, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগে ১৫ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ৩ দিন করে মোট ৯ দিনে নিবন্ধন সম্পন্ন হবে। এরমধ্যে ১৬ জানুয়ারি ঢাকা ও বরিশাল, ১৭ জানুয়ারি রাজশাহী, রংপুর ও সিলেট, ১৮ জানুয়ারি চট্টগ্রাম এবং খুলনা বিভাগে কম্পিউটারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে লটারির মাধ্যমে ইউনিয়নের জনসংখ্যার অনুপাতে বরাদ্দকৃত কোটা অনুযায়ী কর্মীর তালিকা তৈরি করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, এভাবে সারাদেশের সকল ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্র হতে প্রাপ্ত কর্মীর তালিকা সমন্বয়ে জাতীয় পর্যায়ে ৩০ হাজার কর্মী প্রেরণের নিমিত্তে ৩৫ হাজার কর্মীর ডাটাবেজ তৈরি করা হবে।এই ডাটাবেজ হতে আবার স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে আরেকটি লটারির মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রাপ্ত চাহিদা অনুযায়ী ১০ হাজার কর্মীর চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হবে।
ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী স্বাস্থ্য ও বাছাই পরীক্ষা সম্পন্ন করা হবে। এই ১০ হাজার কর্মীকে তথ্যাদি মোবাইল নম্বরে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে। প্রাথমিক তালিকার অবশিষ্ট ২৫ হাজার কর্মীকে মালয়েশিয়া সরকারের চাহিদাপত্র সাপেক্ষে পর্যাক্রমে প্রেরণ করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়া গমনে কর্মীদের অভিবাসন ব্যয় হবে জনপ্রতি সর্বমোট ৪০ হাজার টাকা। এই টাকা সরকার নির্ধারিত স্থানে জমা দিতে হবে। নির্ধারিত টাকার বাইরে যেন কেউ অর্থ ব্যয় না করে সেজন্য মন্ত্রী সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
বনায়ন খাতের কর্মী হিসেবে যাঁরা মালয়েশিয়ায় যেতে চায়, তাঁদের মোট সাতটি যোগ্যতা থাকতে হবে। এগুলো হলো: বাংলাদেশের নাগরিকত্ব, কৃষিকাজে অভিজ্ঞতা, বয়স ১৮ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে, গ্রাম এলাকার প্রকৃত বাসিন্দা, উচ্চতা কমপক্ষে পাঁচ ফুট বা তদূর্ধ্ব, ওজন কমপক্ষে ৫০ কেজি এবং ২৫ কেজি মালামাল হাতে করে বহনের ক্ষমতা।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রণালয়ের সচিব ড. জাফর আহমদ খান, বিএমইটির মহাপরিচালক শামছুন নাহার প্রমুখ
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার মালয়েশিয়ায় চার বছর ধরে জনশক্তি রপ্তানি বন্ধ। টানা কূটনৈতিক যোগাযোগের পর এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে যাচ্ছে দেশটি।