কে এম মিঠু, গোপালপুর :
গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের নলিন নয়াপাড়া মুক্তিযোদ্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বালু বেচাকেনার অবৈধ মোকাম উচ্ছেদ করা হয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের প্রায় দুই শতাধিক শিশুশিক্ষার্থী ধুলাবালি থেকে মুক্ত হয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো।
আজ বুধবার দুপুরে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তিন জনকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়াসহ বালুর মোকাম উচ্ছেদ করেন, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এবং প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া ইসলাম সীমা।
বালুমহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা ২০১০ আইনে কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মো. কবির (৩২) পিতা ফটিক সোনারু, মো. মাসুদ (৪০) পিতা জয়নাল ফকির, বিপুল (৪৫) শামছু সরকার। এরা সবাই বালু পরিবহণ ব্যবসার সাথে জড়িত।
স্কুলের সহকারি শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন জানান, উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের যমুনা পাড়ের তারাকান্দি-ভূঞাপুর বণ্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধকাম সড়ক ঘেষা এই বিদ্যালয়টির অবস্থান। নদীভাঙ্গনে নিঃস্ব পরিবারের প্রায় দুই শতাধিক শিশু বিদ্যালয়টিতে লেখাপড়া করে। গত দুতিন মাস আগে স্কুল প্রাঙ্গনের একাংশে বালুর বিক্রির মোকাম গড়ে তোলে প্রভাবশালীরা। যমুনার বালু নৌকা থেকে নামানো এবং ট্রাক-ট্রলিতে বিকিকিনির হট্রগোলে বিদ্যালয়ে পড়াশোনায় ব্যাপক ব্যাহত হতো। বাতাসে উড়ে আসা ধুলো ও বালুরকণা দরজা-জানালা দিয়ে অনবরত ঢুকে ক্লাসরুম, অফিসঘর ও লাইব্রেরি ব্যবহার অনুপযোগী করে ফেলে। বালুকণার ঝাপটা চোখমুখে লেগে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে।
প্রধান শিক্ষিকা আনজু আনোয়ার ময়না জানান, ব্যস্ততম এই সড়কে বালু ব্যবসায়ীরা ট্রাক ও ট্রলিতে বালু লোড করার সময় যাত্রীবাহী বাসসহ শতশত যানবাহন একদম বিদ্যালয়ের ভবন ঘেষে পারাপার হতো। এতে শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা যাওয়ায় প্রায়ই ছোটবড় দুর্ঘটনা ঘটতো। করোনা পরিস্থিতির কারণে দেড় বছর পরে স্কুল খুললেও এমন পরিবেশ অভিভাবকরা তাদের বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে অস্বীকার করেন। ফলে ক'দিন ধরেই স্কুলে ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি একবারে কমে আসে। এ নিয়ে নানামুখি প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে বালু মোকাম উচ্ছেদে নামেন স্থানীয় প্রশাসন।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া ইসলাম সীমা জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও স্থানীয় সাংবাদকর্মীদের মাধ্যমে কচিকাঁচা শিক্ষার্থী ও পথচারিদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহানোর সচিত্রদৃশ্য দেখতে পাই। পরে ঘটনাস্থলে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে বিদ্যালয় ঘেষা বালুর মোকামটি উচ্ছেদ করাসহ তিন জনকে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
সম্পাদক : অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন | নির্বাহী সম্পাদক : কে এম মিঠু
প্রকাশক কার্যালয় : বেবি ল্যান্ড, বাজার রোড গোপালপুর, টাঙ্গাইল -১৯৯০, বাংলাদেশ।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত - ২০১৯-২০২৩