তিন বছরের মধ্যে জাতীয় সম্মেলন করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও এখনো কাউন্সিল করার কোনো উদ্যোগ নেয়নি বিএনপি। দলীয় কোনো ফোরামে এ নিয়ে আলোচনাও হয়নি। সময় বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদনও করেনি দলটি।
জানা গেছে, ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর বিএনপির সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুসারে ৩ বছর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অর্থাৎ এ বছর ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল করার বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু দলের অভ্যন্তরীণ সমস্যা ও সরকারবিরোধী আন্দোলনের ওপর জোর দেয়ার কারণে যথাসময়ে কাউন্সিল করতে পারেনি বিএনপি। বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে কাউন্সিল করার ব্যাপারে আন্তরিক ছিল বিএনপির হাইকমান্ড। ডিসেম্বরের শুরুতে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কাউন্সিল করার জন্য করণীয় ঠিক করতে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দপ্তরের দায়িত্বে থাকা যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে আলোচনা করেন। কিন্তু ১০ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুল গ্রেপ্তার হওয়ার পরে এ ব্যাপারে আর কোনো কাজ হয়নি।
সূত্র জানায়, আরপিও’র বাধ্যবাধাকতা ছাড়াও আন্দোলন ও ভবিষ্যতে তরুণ নেতৃত্ব সৃষ্টি করার লক্ষ্যে কাউন্সিল করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন বিএনপির হাইকমান্ডও। এ কাউন্সিলে মহাসচিব পদকে ভারমুক্ত করে স্থায়ীভাবে কাউকে দায়িত্ব দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে মহাসচিব পদে মির্জা ফখরুলকে রাখা হবে না অন্য কাউকে আনা হবে, সে সিদ্ধান্ত খালেদা জিয়াই নেবেন। কাউন্সিলে মহাসচিব নিয়োগ ছাড়াও স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিবসহ জাতীয় নির্বাহী কমিটির বেশক’টি পদে রদবদল হতে পারে। মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যু, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে কারাবন্দি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুপস্থিতি, শারীরিক অসুস্থতার কারণে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আর এ গণি, সারোয়ারী রহমান ও এম শামসুল ইসলামের সময় না দিতে পারায় এসব পদে পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া মধ্য সারির অনেক নেতার পদোন্নতি পাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
সূত্র মতে, আন্দোলনের জন্য রাজনীতিতে সক্রিয় এমন নেতৃত্ব প্রয়োজন। বিষয়টি মাথায় রেখে কাউন্সিলের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয়দের বাদ দিয়ে সক্রিয়দের নেতৃত্বে আনার কথা ভাবছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এজন্য নিষ্ক্রিয় নেতাদের তালিকা করতেও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন খালেদা জিয়া। কাউন্সিলের বিষয় জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন যায়যায়দিনকে বলেন, কাউন্সিল নিয়ে এখনো কোনো পরিকল্পনা হয়নি। দলীয় কোনো ফোরামে আলোচনাও হয়নি। তবে কাউন্সিল হবে। আরপিও’র বাধ্যবাধকতার বিষয়ও আছে। এছাড়া সরকারের শেষ সময়ের আন্দোলনের বিষয়টি মাথায় রেখে নতুন নেতৃত্ব আনতে কাউন্সিলের কোনো বিকল্প নেই। আজ স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ ব্যাপারে আলোচনা হতে পারে।