আজ || রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩
শিরোনাম :
  গোপালপুরে বেগম রোকেয়া দিবস পালনসহ জয়িতাদের সংবর্ধনা       গোপালপুরে নানা আয়োজনে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালন       গোপালপুরে স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম’র (SEIP) কর্মশালা       গোপালপুরে পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহের এ্যাডভোকেসি সভা       গোপালপুরে কয়েলের আগুনে পুড়ে মারা গেছে কৃষকের ৩ গরু       গোপালপুরে বাল্যবিয়ে বন্ধ করলেন ম্যাজিস্ট্রেট       গোপালপুরে বনায়নের নামে সরকারি অর্থের বৃক্ষচারা গরু-ছাগলের পেটে       গোপালপুরের অদম্য মেধাবী সামির সম্ভাবনার গল্প       গোপালপুরে গর্ভবতী গাভী জবাই করে গোস্ত নিয়ে রেখে গেছে মৃত বাছুর       গোপালপুরে ৫২তম জাতীয় সমবায় দিবস পালন    
 


সকল চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র নির্মূল করে জনগণের প্রাণের দাবি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন হবেইঃ তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি বলেছেন, দু’টি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চিহ্নিত ও আত্মস্বীকৃত মানবতাবিরোধী অপরাধী ও যুদ্ধাপরাধীদেরই বিচার হচ্ছে। এ বিচার প্রক্রিয়া বানচাল করতে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দেওয়া হচ্ছে। নানা ষড়যন্ত্র, হামলা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে বিচার ভণ্ডুলে মরিয়া হয়ে উঠেছে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্তদের রাজনৈতিক দল জামায়াত এবং তাদের সহযোগী দল, মহল ও ব্যক্তিরা।

কিন্তু সকল চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র নির্মূল করে জনগণের প্রাণের দাবি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন হবেই বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

বুধবার সকালে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে জনগণের ধারণা স্বচ্ছ এবং সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

সকাল সোয়া ১১টায় এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়ে চলছে।

লিখিত বক্তব্যে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্তদের রাজনৈতিক দল জামায়াত এবং তাদের সহযোগী দল, মহল, ব্যক্তিদের নানা মিথ্যাচার, বিভ্রান্তি অপপ্রচার, বিচারের মানদণ্ড, স্কাইপিতে সংলাপসহ নানা বিষয়ে বিস্তারিত জানান হাসানুল হক ইনু।

তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, সে সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের পরিচালিত হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনসহ যুদ্ধাপরাধের বিভিন্ন ঘটনা, দালাল আইনে যুদ্ধাপরাধের বিচার, পরবর্তীতে এই বিচার আটকে থাকা এবং বর্তমান সরকারের সময়ে নতুন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরুর প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সম্পূর্ণ স্বাধীন। কেউ আদালতের বিচার কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করছেন না।’’

বাংলাদেশের আইনে বিদেশি আইনজীবীদের এ ট্রাইব্যুনালে শুনানি করার সুযোগ নেই বলেও উল্লেখ করেন ইনু।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আইনের অপব্যাখ্যা, ভুল ব্যাখ্যা, ঢালাওভাবে বক্তব্যের মাধ্যমে যেসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিচার ভণ্ডুল বা বন্ধ করতেই এগুলো করা হচ্ছে।’’

মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের পুনর্বিচারে আসামিপক্ষের আবেদনের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিচারক পদত্যাগ করলে, বিচারক অপসারণ হলে, বিচারক মারা গেলে কিংবা অসুস্থ হলে বিচার বাধাগ্রস্ত হয় না। আইন অনুসারে বিচারিক প্রক্রিয়া যে অবস্থায় রয়েছে, সে অবস্থা থেকেই শুরু করতে হয়।’’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম বন্ধে জামায়াত-বিএনপির পক্ষ থেকে যেসব বক্তব্য আসছে, সেসবও খণ্ডন করেন মন্ত্রী।

বিএনপি-জামায়াত বিচার বন্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে অভিযোগ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিএনপি সরাসরি বিচার বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছে। জামায়াত-বিএনপি বিচার বন্ধে সরাসরি আক্রমণও চালাচ্ছে।’’

তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি-জামায়াত রাখ-ঢাক বা লাজ-লজ্জা না রেখেই বিচার বানচাল করতে আইনের অপব্যাখ্যা, ভুল ব্যাখ্যা করছে। বিচারাধীন বিষয় নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া হচ্ছে।’’

‘‘স্কাইপিতে সংলাপ নিয়ে নতুন করে আইন করার প্রয়োজন নেই। প্রচলিত আইনেই দেশের মাটিতে অথবা দেশের বাইরে যে কোনো দেশে আলাপচারিতা দণ্ডনীয় অপরাধ।’’

বিচার সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে এবং আসামিদের অধিকার নিশ্চিত করা হচ্ছে উল্লেখ করে ইনু আরও বলেন, ‘‘আসামিরা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাচ্ছেন। আসামিরা ইচ্ছেমতো আইনজীবী নিয়োগ করতে পারছেন। জামিন আবেদন করতে পারছেন এবং আপিলের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া আসামিপক্ষ সাক্ষীকে জেরা করতে পারছেন।’’

দুই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মিলিয়ে বর্তমানে যুদ্ধাপরাধের ১৪টি মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলছে। এতে গ্রেফতারকৃত ও পলাতক জামায়াতের সাবেক-বর্তমান ১০ শীর্ষ নেতা এবং বিএনপির ২ নেতাসহ স্থানীয় পর্যায়ের আরও ২ আসামির বিচার করা হচ্ছে। এ মাসের মধ্যেই ট্রাইব্যুনালে তোলা হচ্ছে বুদ্ধিজীবী হত্যার দুই শীর্ষ খুনি আলবদরের মামলা। আরো কিছু মামলাও তদন্তাধীন।

মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধ বিচারে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ প্রথম ট্রাইব্যুনাল গঠন করে সরকার। এতে হাইকোর্টের বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। চলতি বছরের ২২ মার্চ অপর বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরকে চেয়ারম্যান করে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়।

স্কাইপেতে সংলাপের সংবাদ প্রকাশের পর বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম গত ১১ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন। তার পদত্যাগে ট্রাইব্যুনাল-১ এ শূন্যতা সৃষ্টি হয়। ১৩ ডিসেম্বর এ শূন্যতা পূরণ করে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে নতুন বিচারক নিয়োগ ও দুটি ট্রাইব্যুনালকে পুনর্গঠন করে সরকার।

এতে ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান হন ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর এবং ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পান একই ট্রাইব্যুনালের বিচারক প্যানেলের সদস্য বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

এদিকে এর সুযোগ নিয়ে কয়েকটি মামলার পুনর্বিচারের আবেদনসহ ট্রাইব্যুনালে বিভিন্ন আবেদন করছেন আসামিপক্ষ ও জামায়াতের আইনজীবীরা। বিচারকে বিলম্বিত করা ও দীর্ঘসূত্রতায় ফেলতে এসব আবেদন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

পাশাপাশি ট্রাইব্যুনাল ও বিচারাধীন মামলাসহ যুদ্ধাপরাধ বিচারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ছড়ানো হচ্ছে বিভ্রান্তি, চলছে অপপ্রচার। বিচার বানচালের প্রচেষ্টায় এসব ছাড়াও নানা ষড়যন্ত্র ও আন্দোলনের নামে সহিংসতাও চলছে।

এ প্রেক্ষাপটেই জনমনের বিভ্রান্তি দূর করে ধারণা স্বচ্ছ এবং যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পন্ন করার অঙ্গীকার পূরণে আশ্বস্ত করতেই সরকার তার অবস্থান স্পষ্ট করার উদ্যোগ নেয়।

মন্তব্য করুন -


Top
error: Content is protected !!