সমপ্রতি পাবনা জেলা জামাত-শিবিরের প্রায় ৫০০ নেতা-কর্মীর নামে মামলা,সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি আবু জাফর লিটনের গ্রেফতার ও পত্রিকান্তরে শাহজাদপুর উপজেলাব্যাপী জামাত-শিবিরের গোপন তৎপরতার বিভিন্ন খবর ফাঁস হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে জামাত-শিবিরের নেতা কর্মীরা। পাবনা সদর সহ সাঁথিয়ার বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী শাহজাদপুরে যমুনার চরাঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে একাধিক সূত্রে।
শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের ঠুঁটিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন খেয়া ঘাট থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় প্রায় ৩০/৪০ মিনিটের পথ পার হয়ে সেখান থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরের ধুঁ ধুঁ চরাঞ্চলে চৌড়াপাঁচিল গ্রাম থেকে দেখা যায় জনমানবশূন্য শাহজাদপুর-চৌহালীর সিমান-বর্তী এলাকায় হাঁটুর ওপর পাজামা এবং পাঞ্জাবী পরা কেড্স পায়ে বেশ কিছু জামাত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের চলাচল।
অতি নির্জন ও হালকা বসতির চৌড়াপাঁচিল গ্রামের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে জানান, এখান থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে শাহজাদপুর উপজেলার শেষ সিমানে- ও চৌহালী উপজেলা শুরুর একটি নির্জন চরে গত প্রায় ১ সপ্তাহ আগে থেকে বৃহত্তর পাবনার ১৮ উপজেলা জামাত-শিবিরের নেতা- কর্মীরা তাদের আশ্রয়স’ল ও রীতিমতো প্রশিক্ষণ ক্যাম্প স্থাপন করেছে।
দূরে বেশ কিছু তাবু চোখে পড়লেও সেদিকে যেতে নিষেধ করেন স্বাধীনতার স্বপক্ষের চেতনাধারী ওই শিক্ষক। চৌড়াপাঁচিল গ্রামের বেশ কিছু মানুষজন জানান, দিনের বেলায় খুব একটা নজরে না পড়লেও সন্ধ্যা নেমে আসার সঙ্গে সঙ্গেই অনেকটা রহস্যজনকভাবেই বিপুল সংখ্যক জামাত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি আঁচ করা যায়।
পুরো চৌড়াপাঁচিল গ্রাম ধরে এবং একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, খুব ভোরে ফজরের নামায শেষে ১০/১৫ জনের ১২/১৩টি গ্রুপ পালাক্রমে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে নানা কায়দায় শারিরীক কসরত শেষ করে ঘন্টাখানেকের মধ্যেই। এরপর চলতে থাকে রান্না-বান্নার কাজ। অতি দ্রুত রান্না এবং খাওয়া শেষ করে আকস্মিকভাবেই আবার সবাই যেন কোথায় চলে যায়।
ওইসব তাবুর নিচে কতজন করে লোক থাকে এবং সেখানে আর কী কী হয় জানতে চাওয়া হলে অতি দরিদ্র ও অভাবী জনপদের মানুষজন জানান, তাদেরকে কখনই তাবুর কাছে তো দূরের কথা আশপাশেও ভিড়তে দেওয়া হয় না। ওইসব চর এলাকার মানুষজন অতি দরিদ্র হওয়ার কারনে নিজেরাও জীবিকার তাগিদে খুব বেশি কিছু জানতে কৌতুহলী নন বলে অনেকে জানান।
এসব দূর্গম ও অতি নির্জন চরাঞ্চল পুলিশের নাগালের বাইরে হওয়ায় এবং সচেতন মানুষজনের উপস্থিতি একেবারে নেই বললেই চলে। মূলতঃ এসব সুবিধাকে পুরোপুরি কাজে লাগাচ্ছে জামাত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা।